অন্যমনে সাহিত্য. অন্য রকম দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একটি প্রতিবিম্ব ভাবনা .. অন্যমনে সাহিত্য.

বুধবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২২

অণুগল্পে পাভেল আমান

 

 
পাজি করোনা
===================
পাভেল আমান
===================


প্রাণনাশক করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের প্রাদুর্ভাবে লকডাউনের সময়সীমা বেড়ে চলেছে। বিপর্যস্ত জনজীবন। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের বিকিকিনির বিপনী ছাড়া সমস্ত কিছুই বন্ধ। স্কুলেও ঝুলছে শীত ঘুমের তালা। একা একা বাড়িতে বসে রফিকের সবুজ অবুজ টগবগে মনটা যেন কেমন নেতিয়ে যাওয়া গাছের মত ঝিমিয়ে পড়েছে। চার দেওয়ালের আবদ্ধে তার অবচেতন মননে একরাশ ঘনীভূত কুয়াশা। প্রতিনিয়ত তার আব্বাকে প্রশ্ন করে- "আমাদের স্কুল টা কবে খুলবে আব্বু? এভাবে আর কতদিন স্যার, ম্যাডাম ও বন্ধুদের না দেখি থাকা যায়? ঢাউস মোবাইলের সামনে বসে অনলাইনের ক্লাস করতে করতে একদম হাঁপিয়ে উঠেছি? ইচ্ছে করছে স্কুলে গিয়ে ক্লাস করতে"। একমাত্র সন্তান সপ্তম শ্রেণীতে পাঠরত রফিকের আপাতদৃষ্টিতে সহজ সরল, জরুরী প্রশ্নমালায় কিছুটা হতচকিত, স্তম্ভিত ও অসহায় অনুভবে জাহির পিতৃত্বের স্নেহ পরায়ণতায় শান্ত, স্থিতধী ,সংযত আচরণে সেই অপ্রিয় ছকে বাঁধা উত্তরের বুলি নিরবে আওড়াতে থাকে-" রফিক বাছা, আর কটা দিন ধৈর্য ধরো তারপরেই সরকার স্কুল খুলে দেবে"।


ইতিমধ্যে পরিস্থিতির স্বাভাবিকতায় শুরু হয়েছে আনলক পর্ব।তার সাথে খুলে গিয়েছে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, অফিস, রেস্তোরাঁ, সেইসঙ্গে পরিবহন ব্যবস্থা। রাস্তাঘাটে মানুষের নিত্য আনাগোনা। দেখলে বোঝা দুষ্কর করোন সংক্রমণ ভীতির কথা।

কিছুটা চিন্তার জগতে বিচরণ করে উৎকণ্ঠিত চিত্তে পরক্ষনেই একই উত্তরের পুনরাবৃত্তিতে সে আবারো তার আব্বাকে জেরা করতে থাকে-" সবকিছুই খুলে গেলেও এখনো আমাদের স্কুলটাই খুললো না। দুষ্টু করোনা যেন আমাদের স্কুলটাতেই তার সংক্রমনের বাসা বেধেছে। কবে যে এই পাজি করোনা বিদায় নেবে?




 

 


 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন