সুতপা দাস
==============
টুপ টুপ টুপ .... ছেড়ে যাওয়া বৃষ্টির রেশ টা এখনো মেহুলের কানে বাজছে।
বৃষ্টি বড়ই ভালোবাসে মেহুল, সেই ছোটবেলা থেকেই। বৃষ্টি নামলেই জানলার ধারে
দৌড়ে যেত মেহুল আর সেটা যদি হত কোনও ছুটির দিন তাহলে তো অন্তহীন খুশির ঢেউ
বয়ে আনত মেহুলের মনে- বাবা থাকত যে সাথে।
বৃষ্টি পাগল মেয়ের এক বৃষ্টি পাগল বাবা। বাবা-মেয়েতে বসে পড়ত জানলার ধারে দেখত তাদের বাগানের গাছগুলোর পাতার থেকে পাতায়, পাতা থেকে মাটিতে জলকনাদের ঝরে পড়া। আবার কোন দিন বাবার হাত ধরে মেহুল যেত বাইরের বাগানে বৃষ্টি ভিজতে। অপূর্ব এক আনন্দে ভরে যেত মন প্রাণ। আনন্দে মেহুল হয়ে উঠত আত্মহারা। বাবা বলত-"বর্ষার বৃষ্টি ভারী মিঠে"। তারা একসাথে সুরে সুরে মিলিয়ে গেয়ে উঠত বৃষ্টির গান - " বৃষ্টি... বৃষ্টি.... বৃষ্টি / এ কোন অপরূপ সৃষ্টি /এত মিষ্টি.. মিষ্টি.. মিষ্টি / আমার হারিয়ে গেছে দৃষ্টি...... "।
চোখটা ঝাপসা হয়ে গেল মেহুলের । চশমাটা খুলে নামিয়ে রাখল হাতের পাশের টেবিলে।চোখ মুছে আবার বাইরে তাকিয়ে দেখল বৃষ্টি থেমে গেছে পুরোপুরি, এক চিলতে রোদ ও উঠেছে। মনে পড়ে গেল সেই দিনটার কথা --- মেহুল মা আ আ.. মেহুল..মা .....কোথায় তুই.....ই ...? বাইরে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে যে খুব , ঘরে আয়....। মা আর বাইরে থাকিস না, মেহুল ..... বাবা চিৎকার করে ডেকে চলেছে। আর দশ বছরের ছোট্ট মেহুল তখন নারকেল গাছের পেছনে লুকিয়ে প্রতি মুহূর্তে আশা করছে এই বুঝি বাবা এলো আর ধরে ফেলল তাকে। জ্বর গায়ে বৃষ্টি ভিজলে যে জ্বর আরও বাড়বে, তাই বাবাও আজ ঘরেই ছিল দুপুরের বৃষ্টিতেও । নিজে বের হয় নি শুধু মেহুলকে ঘরে রাখতে। কিন্তু বৃষ্টি পাগল মেয়েটি কোনও বাধা নিষেধই শোনে নি, জ্বর গায়েই বেরিয়ে এসেছে বাগানে। বাবা আবারও ডাকলো মেহুল ....মেহু... উ... উ.. ল । চোখ গেল নারকেল গাছের পেছনে লুকানো মেয়ের দিকে ।ঠিক তখনই চোখের কোনে ধরা পড়ল ঐ নারকেল গাছটিতে বিদ্যুৎ পড়ছে। দৌড়ে গিয়ে তাকে হাত ধরে টেনে সরিয়ে দিয়েছিল বাবা কিন্তু নিজে আর সরে যেতে পারেনি। পুড়ে গিয়েছিল শরীরের এক অংশ আর মৃত্যু হয়েছিল সাথে সাথেই।
মেহুল আর কোনও দিনও বৃষ্টি ভেজেনি। মা চোখের জলে ভিজেছিল সেদিন। চল্লিশটা বছর পার হয়ে গেছে। কত বর্ষা এসেছে- গিয়েছে আপন গতিতে । বয়স বেড়েছে ধীরে ধীরে। গত বছর মা'ও চলে গেলেন এমনই এক বৃষ্টি রাতে।অনেক ভেবেছে মেহুল , বহুবার... । এই বৃষ্টিকে সে ঘেন্না করবে, রাগ করবে, চোখ সরিয়ে নেবে বৃষ্টি থেকে। কিন্তু যখনই বৃষ্টি নেমেছে সে অধীর হয়ে উঠেছে। আসলে এই বৃষ্টির ঝরে পড়া প্রতিটি ফোঁটায় বাবাকে খুঁজে পায় মহুল। আর শুনতে পায় বাবার মুখে গান ... বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি........
বৃষ্টি পাগল মেয়ের এক বৃষ্টি পাগল বাবা। বাবা-মেয়েতে বসে পড়ত জানলার ধারে দেখত তাদের বাগানের গাছগুলোর পাতার থেকে পাতায়, পাতা থেকে মাটিতে জলকনাদের ঝরে পড়া। আবার কোন দিন বাবার হাত ধরে মেহুল যেত বাইরের বাগানে বৃষ্টি ভিজতে। অপূর্ব এক আনন্দে ভরে যেত মন প্রাণ। আনন্দে মেহুল হয়ে উঠত আত্মহারা। বাবা বলত-"বর্ষার বৃষ্টি ভারী মিঠে"। তারা একসাথে সুরে সুরে মিলিয়ে গেয়ে উঠত বৃষ্টির গান - " বৃষ্টি... বৃষ্টি.... বৃষ্টি / এ কোন অপরূপ সৃষ্টি /এত মিষ্টি.. মিষ্টি.. মিষ্টি / আমার হারিয়ে গেছে দৃষ্টি...... "।
চোখটা ঝাপসা হয়ে গেল মেহুলের । চশমাটা খুলে নামিয়ে রাখল হাতের পাশের টেবিলে।চোখ মুছে আবার বাইরে তাকিয়ে দেখল বৃষ্টি থেমে গেছে পুরোপুরি, এক চিলতে রোদ ও উঠেছে। মনে পড়ে গেল সেই দিনটার কথা --- মেহুল মা আ আ.. মেহুল..মা .....কোথায় তুই.....ই ...? বাইরে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে যে খুব , ঘরে আয়....। মা আর বাইরে থাকিস না, মেহুল ..... বাবা চিৎকার করে ডেকে চলেছে। আর দশ বছরের ছোট্ট মেহুল তখন নারকেল গাছের পেছনে লুকিয়ে প্রতি মুহূর্তে আশা করছে এই বুঝি বাবা এলো আর ধরে ফেলল তাকে। জ্বর গায়ে বৃষ্টি ভিজলে যে জ্বর আরও বাড়বে, তাই বাবাও আজ ঘরেই ছিল দুপুরের বৃষ্টিতেও । নিজে বের হয় নি শুধু মেহুলকে ঘরে রাখতে। কিন্তু বৃষ্টি পাগল মেয়েটি কোনও বাধা নিষেধই শোনে নি, জ্বর গায়েই বেরিয়ে এসেছে বাগানে। বাবা আবারও ডাকলো মেহুল ....মেহু... উ... উ.. ল । চোখ গেল নারকেল গাছের পেছনে লুকানো মেয়ের দিকে ।ঠিক তখনই চোখের কোনে ধরা পড়ল ঐ নারকেল গাছটিতে বিদ্যুৎ পড়ছে। দৌড়ে গিয়ে তাকে হাত ধরে টেনে সরিয়ে দিয়েছিল বাবা কিন্তু নিজে আর সরে যেতে পারেনি। পুড়ে গিয়েছিল শরীরের এক অংশ আর মৃত্যু হয়েছিল সাথে সাথেই।
মেহুল আর কোনও দিনও বৃষ্টি ভেজেনি। মা চোখের জলে ভিজেছিল সেদিন। চল্লিশটা বছর পার হয়ে গেছে। কত বর্ষা এসেছে- গিয়েছে আপন গতিতে । বয়স বেড়েছে ধীরে ধীরে। গত বছর মা'ও চলে গেলেন এমনই এক বৃষ্টি রাতে।অনেক ভেবেছে মেহুল , বহুবার... । এই বৃষ্টিকে সে ঘেন্না করবে, রাগ করবে, চোখ সরিয়ে নেবে বৃষ্টি থেকে। কিন্তু যখনই বৃষ্টি নেমেছে সে অধীর হয়ে উঠেছে। আসলে এই বৃষ্টির ঝরে পড়া প্রতিটি ফোঁটায় বাবাকে খুঁজে পায় মহুল। আর শুনতে পায় বাবার মুখে গান ... বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি........
ছোট্ট মেয়ে মেহুলের মুহূর্তচিত্র দাগ কাটল। ভালো লিখেছেন । শুভেচ্ছা রইল।
উত্তরমুছুন