অন্যমনে সাহিত্য. অন্য রকম দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একটি প্রতিবিম্ব ভাবনা .. অন্যমনে সাহিত্য.
সোমবার, ৬ জুলাই, ২০২০
মৃণালিনী
মৃণালিনী
=============================
মৌসুমী রায়
=============================
সেই মেয়েটার বুকে জ্বলে আগুন
চোখ বেয়ে নামে লাভার স্রোত
যেটাই করে তাতেই নিষেধ বাঁধা...
মেয়েটার হোক আরো পাপ হোক।
রান্না ঘরে কান্না ঝরুক যত
সব পাওয়া যন্ত্রণার শোধ সে দেবেই
প্রতিবাদ তার গাছ হয়ে বাড়ছে শরীরে
জানে সে বিশাল ঝড় একটা তুলবেই।
মনের ভিতর চলছে কাঁটাছেড়া
একলা ঘরে নির্জনতা দংশায়
চায়ের কাপে জমছে মৃত সময়
হাওয়ার চাবুক মারছে মনের শূন্যতায়।
অনেক হয়েছে প্রেমের মহড়া দেওয়া
সবই তো সেই পিটুইটারির খেলা
বৈধ হোক বা অবৈধ হোক, শরীর চাওয়া
বন্ধ করবেই মনের দরজা এইবেলা।
=============================
মৌসুমী রায়
=============================
সেই মেয়েটার বুকে জ্বলে আগুন
চোখ বেয়ে নামে লাভার স্রোত
যেটাই করে তাতেই নিষেধ বাঁধা...
মেয়েটার হোক আরো পাপ হোক।
রান্না ঘরে কান্না ঝরুক যত
সব পাওয়া যন্ত্রণার শোধ সে দেবেই
প্রতিবাদ তার গাছ হয়ে বাড়ছে শরীরে
জানে সে বিশাল ঝড় একটা তুলবেই।
মনের ভিতর চলছে কাঁটাছেড়া
একলা ঘরে নির্জনতা দংশায়
চায়ের কাপে জমছে মৃত সময়
হাওয়ার চাবুক মারছে মনের শূন্যতায়।
অনেক হয়েছে প্রেমের মহড়া দেওয়া
সবই তো সেই পিটুইটারির খেলা
বৈধ হোক বা অবৈধ হোক, শরীর চাওয়া
বন্ধ করবেই মনের দরজা এইবেলা।
আমরা সবাই রাজা
আমরা সবাই রাজা
=============================
সপ্তর্ষি চৌধুরী
=============================
সংস্থার নাম "আমরা সবাই রাজা "। তা বেশ ভালো কাজকর্ম করছে। আছে তারা সবসময় লোকের অভাবে। তবে দান করার সময় ফটো তোলা রয়েছে তাদের স্বভাবে। কেউ কিছু মন্দ কথা বললেই হলো, বলে "আমরা করছি প্রচার, যদি কেউ উৎসাহ পায়"। আসলে তারা হতে চায় ভাইরাল, তারা চায় হোক তাদের নাম টিভি তে সম্প্রচার। সেসব তর্কের কথা থাক তোলা। আমার আছে অন্য একটা কথা বলা। একদিন খাওয়ার তুলে দিচ্ছেন "আমরা সবাই রাজা " র সদস্যরা। সাথে বাচ্চা বিল্টুকে দাড় করিয়ে রাখা হয়েছে। হেড বলেছেন "বিল্টু বাবু চাই ফটো তোলা। যেই না দিবো খাওয়ার অমনি করবে ক্লিক"। বিল্টু বলে" ঠিক ঠিক"।
ফিসফাস্
ফিসফাস্
=============================
শুভায়ন বসু
=============================
রোজ ভোরে ঘুম ভাঙার মুহূর্তে শব্দটা শুনছেন কুশলবাবু। এটা আগে হত না, মানে এই সিটি দেবার শব্দটা আরকি। ক'দিন ভেবেছিলেন, ছেলেটাই করছে বোধহয়, বকাবকিও করেছিলেন।
'কি রে, খুব সিটি দিতে শিখে গেছিস, না?'
'আমি? সিটি ?কখন দিলাম?'
'কখন আবার ?ন্যাকামো হচ্ছে? ভোরবেলা নিজের কানে শুনলাম।'
'কি যা তা বলছ?'
'যা তা বলছি? খুব উন্নতি হয়েছে তোর আজকাল। রাস্তাঘাটে মেয়ে দেখে ,সিটি দিতেও শিখে গেছিস। আর কি কি শিখেছিস, শুনি?'
'আরে, বলছি তো আমি করিনি।'
চালক
চালক
=============================
সুদীপ ঘোষাল
=============================
অনিল আর বিমল একই স্কুলের শিক্ষক। একই স্কুলে চাকরি করার দরুণ তারা দুজনে একসঙ্গে স্কুলে যায় মোটর সাইকেলে। একটা মোটর সাইকেলে চেপে যায়। বিমল চালায় আর অনিল পিছনে বসে থাকে। বিমল গাড়ি চালানোর সময় মাঝে মাঝে ঢুলতে থাকে। গাড়ির গতি কমে যায়। অনিল মিটার রিডিং এ দেখে কাঁটা কুড়ির ঘরে নেমে গেছে। অনিল বিমলের পিঠে হাত বুলোয় তাকে জাগানোর জন্য। অনিল জানে, কলিগরা কখনও বন্ধু হয় না। হলেও কোটিতে গুটি। বিমল পিঠে হাত দিলে অসন্তুষ্ট হয়।
দত্তক
দত্তক
=============================
পায়েল সেন
=============================
সোনারপুরের প্রথিতযশা মাস্টারমশাই হিসেবে স্বপন বাবুর বেশ নাম ডাক আছে, সবাই তাকে এক ডাকে চেনে। নতুন বাড়িতে উঠে আসার পর ওনার খুব বাগানের শখ হয়েছে কিন্তু সময়ের অভাবে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আসাম থেকে আসা বন্যায় সর্বস্বহারা হারুকে তিনি মালির কাজে রাখলেন। মাস্টার মশাই যখন টিউশনি পড়ান হারুর ছেলেটি দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে শোনে, একদিন তিনি ডেকে জিজ্ঞেস করতেই ভয়ে পালিয়ে যায়। পরে হারুর সাথে ফিরে আসে, স্বপন বাবু ওকে গ্রামের স্কুলেই ভর্তির কথা বলেন । সহায় সম্বলহীন হারু পড়ার খরচ চালাবে কি করে বলতেই মাস্টার মশাই নিজের দায়িত্বে হারুর ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করে দেন। ছেলেটির নতুন নামকরণ করেন উদয়।
বৃক্ষরূপী মানুষ
=================
রথীন পার্থ মণ্ডল
=================
মাঝে মাঝে নিজেকে কেমন একটা বৃক্ষের মতো মনে হয়। বরফ ঢাকা পাহাড়ি গাছ। ঋজু সুঠাম নধর দেহে দাঁড়িয়ে আছি। এখুনি কোথাও থেকে একটা ষাঁড় এসে গুঁতিয়ে দিলেই হয়তো হুড়মুড়িয়ে পড়ে যাবো। তাই কি? সত্যি সত্যিই কী পড়ে যাবো না কি? কী জানি, তবে একেবারে ধরাশায়ী হয়ে পড়ে যাবো না বলেই মনে হয়।
আসলে গাছেদের তো শিকড় থাকে। মাটিতে ছড়িয়ে থাকে তার বাহু। কামড়ে ধরে থাকে মাটি।
আমিও তোমাকে...
সারমেয় কথা
সারমেয় কথা
=============================
রথীন পার্থ মণ্ডল
=============================
আবার গেলাম রতনদের বাড়ি। দরজা পেরিয়ে উঠোনে প্রবেশ করলাম। রতনের মা যেন দেখেও দেখল না। দূর দূর করে তাড়িয়েও দিল না। আর কেনই বা দেবে? ক্লান্ত হয়ে গেছে তাড়িয়ে দিতে দিতে। আমিও আর এঁটো থালাতে মুখ দিলাম না। আর দরকারও হবে না। তাই চলে এলাম। ঐ তো সেই ছেলেটা, যে রোজ আমাকে পাথর ছুঁড়ত। যাক বাবা, আজ বোধহয় আমাকে দেখতে পায়নি। কোনোরকমে সাবধানে চলে এলাম মিষ্টির দোকানটাতে। কত যে গরম জল, গরম তেলের ছ্যাঁকা খেয়েছি তার কোনো ইয়ত্তা নেই। আজ তারাও কিছু করল না। বোধ হয়, আমার ওপর 'দয়া' হয়েছে।
ওই তো চারমাথার মোড়। কিন্তু আমি কোথায় গেলাম? ওই তো পেয়েছি। ওহ, বাবা রে! দশ চাকার লরি, তাও আবার মাল বোঝাই। আর বাঁচি! পুরো পিষে দিয়ে চলে গেছে। নাহ, আর বসে থাকলে হবে না, অনেকটা পথ যেতে হবে এখনও। শুধু ভগবান তোমার কাছে আমার একটা ই প্রার্থনা- "পরজন্মে আর যাই কোরো, মানুষ কোরো না ।"
খয়েরী রঙের পাতা
খয়েরী রঙের পাতা
===========================
ঋভু চট্টোপাধ্যায়
===========================
সকাল থেকেই হাসপাতালে ভিড়।বুধা হাসপাতালের ভিতরে না গেলেও চা খেতে আসা কয়েকজনের মুখে শুনেছে এক বুড়োকে তার ছেলে হাসপাতালের ভিতর একটা গাছের তলায় ফেলে চলে গেছে।বুড়ো শুনেই বুধার কেমন একটা সন্দেহ হয়।কালকের বুড়োটা নয় তো!
ছোট থেকে এই দোকানে আছে তখন বাবার সাথে এসে কাপ ডিশ ধুয়ে দিত।সেই থেকেই সবাই চেনে জানে। কতবার ভেঙে দেবার কথা উঠলেও আবার সব কিছু ঠিক হয়ে গেছে।
যানজট
যানজট
=============================
তীর্থঙ্কর সুমিত
=============================
কতগুলো কথা
সাজিয়ে নিয়ে পাশাপাশি
বাক্য গঠন হতে হতে
হারিয়ে যায় কথাস্রোতে
আবার সৃষ্টি হয় নতুন ...
এভাবেই ফিরে আসে
পাওয়া না পাওয়ার সব ইচ্ছেগুলো
আর হারিয়ে যায়
বেঁচে থাকার রসদ
ঠিক একই ভাবে
শব্দ গঠন হয় পাশাপাশি
আর এক একটা মুহূর্তে
তৈরী হয়
##
অজস্র যানজট।
ভাঙা মন্তাজ
ভাঙা মন্তাজ
=============================
অর্পিতা ঘোষ
=============================
চুপকথা নাড়ে বুক, শুনশান রাতে,
জেগে থাকে বাতিঘর, স্তব্ধ শুন্য পথে।
খুনসুটি কোলাহল, একাকী পথেই সুখ,
নীরবতা সারারাত, এ নয় কোনো অসুখ।
উন্মাদে ভাঙে পাড়, জল ভাসে প্লাবনে,
সোহাগ শীতল রাত, ভরাডুবি হয় মনে।
অভিমানি মন তবু, করে আলোর খোঁজ,
আকাশের তারাগুলো, আমলকি হয় রোজ।
দৃষ্টি ঝাপসা হয়, একা মনের জ্বরে,
পথ দেয় হাতছানি, হারিয়ে ফেলার পরে।
দেখা যদি হয় পথে, ভরসার কোনো জন,
ঠাঁই নিয়ে তার মনে, ঠিকানা পাবো তখন।
চেনা অচেনা জ্যোৎস্না
চেনা অচেনা জ্যোৎস্না
=============================
অরুণ কুমার সরকার
=============================
তোমাকে দেখেছি সেই যৌবনে পা ফেলে
ছুটে গেছ পাহাড়ি ঝর্ণার গায়
পাহাড়ি নদীর জলে ধুয়েছো কত পা।
সমুদ্রেও গেছ তুমি
দেখেছ উত্তাল ঢেউ জোয়ারের সাথে
উৎফুল্ল হৃদয়ে নীল জলে ভাসিয়েছ গা
মিহি পরিধান ঢুকে গেছে শরীরের ভাঁজে ভাঁজে।
স্বল্প বাসে সমুদ্র সৈকতে গায়ে মেখেছ মিষ্টি রোদ
পাশ দিয়ে হেঁটে গেছে কতজন
তুমি থেকেছ আনমনে কালো রোদচশমায়।
হয়তো জেনে যাব একদিন
সব বাঁধন ছিঁড়ে জীবন করেছ একা
সমুদ্র সৈকতে যদি কখনও সে আসে
নিশ্চয়ই হবে দেখা।
তুমি কি ডাকবে কাছে
যদি সে আসে
আমারও তো ছিল কেউ, এখনও তা আছে
কেবলই থাকি অপেক্ষায়
যদি দেখা হয় কোনও সমুদ্র সৈকতে।
কখনও পাহাড়, কখনও বা সমুদ্র হয়ে আসে কাছাকাছি
আমি খুঁজে পাই কিছু উষ্ণতা
ভিজে যাই সময়ে অসময়ে
চারদিক জ্যোৎস্নার নীরবতা।
আমারও দুরন্ত এক অতীত ছিল
ছিল স্বপ্ন কিছু হৃদয় ভরা
যদিও তা খুব বেশি সুখকর নয়
বহু বসন্ত হয়েছে নষ্ট চেনা অচেনা জ্যোৎস্নায়।
আলো-ছায়া
আলো-ছায়া
=============================
পরাগ ভট্টাচার্য্য
=============================
বেওয়ারিশ লাশগুলো নিয়ে যাচ্ছে!
আবর্জনা, পচন থেকে বাঁচতে!
রাতের বেলা, দশ দশটা একসাথে!
কয়েকদিনের জমা, ফেলে দিতে!
যারা ওভাবে নিয়ে গেল, কিছু বোল না,
এমনি করে ওরাই নিয়ে যায়, কুকুর -ছাগলকেও,
সংবিধান! ওরা কি পড়তে পারবে!
যারা শপথ নিয়েছে , মেনেছে একদিনও ?
ভাল করে দেখো, লুকাতে চাইছে কি,
এমনই হয়েছে বারবার, বুজরুকির চাল,
ওরা ফিরে ফিরে আসে, হায়, ভোলা মন
কখন জড়িয়ে যায় ,বুনতে বুনতে জাল ,
মরে গেলে কি কেউ কথা বলে ?
বলেছিল কেউ , মরাগুলো আবার জাগছে,
অচেনা আঙ্গুলগুলো উঠছে আকাশের দিকে
বলছে, সবাই বলছে, অবিচার হচ্ছে।
বিপন্নতা
বিপন্নতা
=============================
সম্পূর্ণা
=============================
যে জাহাজের মাস্তুলে লেখা ছিল ভয়
সে সমুদ্র কখনও জাহাজ ভাসেনি ডোবেনি
হালকা থেকে গাঢ় নীলে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে দৃশ্যের অপর্যাপ্ত আসা যাওয়া
মৃত্যুর খুলে রাখা মুকুট দৈবাৎ নজরে আসে
প্রবাহমান সবকিছুই ভীষণ প্রেডিক্টেবল দিনের ওপর
মাথা চারা দিয়ে উঠেছে ভেঙে যাওয়া সভ্যতার প্রাচীন কারুশিল্প
সময়ের কখনও পেছনে তাকানোর মতো উপায় ছিলনা
যা কিছু পিঠে থাকে, যেমন ভুল চোখ, অনাবিষ্কৃত দৃষ্টি, অথবা অন্যায়ের নিম্নগামী কৌশল
হাতের ফাঁকে লেগে থাকা ঝুরঝুরে বালিতে বহু আগের সহজ মন
মুহূর্তের ঢেউ, চোরাবালির হাতছানিতে আরও বেশি ডুবে যাওয়া
হাসতে হাসতে চলে যাওয়া রাস্তার পাশে ল্যান্ডমার্কহীন সরাইখানা
নাম লেখা খাতায় অতিথি অভ্যাগত। খালি বন্দরও যেন রাজনৈতিক শ্রমজীবী!
পৃথিবীর সীমান্তে তখনও দাঁড়িয়ে কোনো মধ্যবয়স্ক পিতা
অন্ধ শিশুকে জড়িয়ে পাহাড়ে, মরুভূমিতে, খোলা মাঠে
রাত্রির মতো ঢেউয়ে তুফানের আকাশ ছবি...!
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)