অন্যমনে সাহিত্য. অন্য রকম দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একটি প্রতিবিম্ব ভাবনা .. অন্যমনে সাহিত্য.

বুধবার, ১২ মে, ২০২১

কর্মফল

কর্মফল
===================
সাবিত্রী দাস
===================



সেদিন ট্রেনের ঐ কম্পার্টমেণ্টে ওদের কাছাকাছি যারা ছিল তারা প্রত্যেকেই অবাক হয়ে গিয়েছিল । হবে নাই বা কেন! আপনা থেকেই প্রত্যেকের চোখ চলে যাচ্ছিল ওদের দিকেই।

বর্ধমান আসানসোল লোকাল বর্ধমান থেকে আসছিল ,ওরাও আসছিল বর্ধমান থেকেই। ট্রেনে জানালা ঘেঁষে বসেছিল বেশ ছটফটে,সুন্দরী তন্বী মেয়েটি ।পাশের ছেলেটার বয়স ওরই মত । দুজনের আদরের বহর ছিল দেখার মতোই । ওদের আশেপাশে কিংবা সামনে কেউ আছে, সেকথা যেন ওদের মনেই ছিল না । আশেপাশের মানুষগুলো সম্পর্কে বিন্দু মাত্র ভ্রূক্ষেপ ছিল না ওদের। ক্রমশই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল ছেলেমেয়ে দুটো।

দুজন দুজনকে প্রবল আশ্লেষে জড়িয়ে ধরছে কখনো ,তো কখনো মেয়েটা ছেলেটাকে জড়িয়ে মড়িয়ে একাকার , কখনো ছেলেটার চুল ঘেঁটে দিচ্ছে, ঘাড়ে চুমু খাচ্ছে , হাসছিল ওরা। সবাই ওদের দেখছে সেদিকে খেয়াল ছিল না মোটেও । সবাইকে চেয়ে থাকতে দেখে মজা পাচ্ছিল হয়তো বা। একটু পরে আহ্লাদী মেয়েটা আদুরে বেড়ালের মতো চোখ বুজে আদর খাচ্ছে। একের পর এক স্টেশনে লোক উঠছে নামছে,উঠছে কম নামছে বেশী। সন্ধ্যার পর ট্রেনে লোক ক্রমশ কমতে থাকলে,কম্পার্টমেণ্টে তখন ওদের নিয়ে চারজন । হঠাৎ ষণ্ডামার্কা যুবক দুজন ওদের পাশে বসে পড়লো। একজন মেয়েটার কাঁধটা ঝাঁকিয়ে বলে 'অনেকক্ষণ ধরে তোদের লীলা খেলা দেখছি , মানুষের মনের দরজায় ঘা দিয়ে কামনা জাগিয়ে দিতে লজ্জা করে না! বেশরম মেয়ে! বেহায়াপনারও একটা সীমা আছে। ' আরেকজন মেয়েটার সঙ্গী ছেলেটাকে থাপ্পড় মেরে হটিয়ে দেয়, পাশে বসতে বসতেই বলে, ' আব্বে শালা ,অনেকক্ষণ খেললি এবার আমাদের পালা'!

হঠাৎ করেই কামরার আলোটা নিভে যায়, অন্ধকারেই ছেলেটা কখন চলে গেছে।



কামরাটা একেবারে ফাঁকা, আলো আঁধারির মধ্যে মেয়েটার অস্ফূট গোঙানি শোনা যাচ্ছিল তখনো।






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন