অন্যমনে সাহিত্য. অন্য রকম দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একটি প্রতিবিম্ব ভাবনা .. অন্যমনে সাহিত্য.

বৃহস্পতিবার, ১২ আগস্ট, ২০২১

গুচ্ছ কবিতায় গৌতম কুমার গুপ্ত

  

 

দাহবেলা
===============


হাত পেতে নিতে হচ্ছে খরা

মেঘের অসুখ

বৃষ্টির দুর্গন্ধ থেকে মাটির জরা



তাপের উত্তাপে দ্বিতীয় সংস্করণ

অধ্যায়ে স্রোত খেলে না

প্রবাহ ভুলে থেমে যাবে নাকি জল?



সূর্য হেলে গেলে কাঁপুনি ধরাবে মাটি

কবে আসবে গতির পাঠ্যসূচি



আহ্নিকে তোলা থাক এই দাহবেলা







প তা কা
===============



পতাকা নেড়েই চলেছে পদযাত্রা

সাদা লাল হলুদ সবুজ গেরুয়া

কেন পতাকা দেখলে শিউরে উঠে পিঁপড়ে

মিছিল কেড়ে নেয় ত্রাণ



পাপোষে চাপা পড়ে শিরস্ত্রাণ

দলিত মথিত তামাটে ত্বকে

লাভে অলাভে কেউ ওঠে শীর্ষমুখে



দূরে বহুদূরে বিপ্লব জ্বলে ওঠে

তরমুজ ক্ষেতে ফুটিফাটা মাঠে

অন্ধ বধির সেজে বসে থাকে কেউ

উঞ্ছ নিম্ন নাগরিক মৃতদেহে



পতাকা ওড়ে চলমান পদযাত্রায়

রঙের বদলে শুধু অভিমুখ গতি পায়





দেবলৌকিক
===============



অলৌকিক হয়ে উঠে যদি কেউ

হা অন্নের থালায়

ভাত গন্ধে বিলাস, দুর্বিষহ শৈশব ক্লেদজ

তখন কান্না ছিল খাঁটি



ধাতব চোখে অশ্রু ঝরে না

আজ

ঘন ঘন মৃত্যু আসে শরীরে



শ্মশানের চাঁদে কে কবে

আনন্দ লিখেছে

কবিতার বড় সৌভাগ্য ছিল

মরমে লেগেছে







চশমার ফ্রেমে
===============


কুড়িয়ে নিয়েছি বালুকণা মেখেছি অসভ্যতার ছাইপাঁশ

পরিধির ভেতরে একটা রম্বাস ভারসাম্য

নিবদ্ধ রেখেছে নৈঋত থেকে ঈশান



অনুবীক্ষণে সুখদুঃখ মায়া মমতা স্নেহ ইস্তক

সম্ভাব্য সূচির অন্তর্গত নৈপুন্য ও প্রভূত আমিষ

আমাকে সজাগ রাখে সূচারু আবেগের মোহে



কোনদিনই দেখাতে পারি নি ঋণসমগ্র ছবি

শুধু আকাঙ্খার অনুপুঙ্খ বেহিসেবে আপাত সন্ধ্যা নেমে আসে চোখে

রাতের নিশীথে অনিদ্রায় গরগরে রাগ জ্বলে



পরিসর খুলে রাখি চোখের ছায়ায়

আগামী দিনের কত উপক্রমণিকা ও ইতিহাস

অভ্যন্তরে বেঁচে থাকে অন্বয় ও অপলাপ

প্রব্রজ্যার পোশাক খুলে উপসংহারে আসি



বহুতল ফ্রেমে দূরের ভ্রম

প্রাত্যহিক ইথারে ভেসে থাকে মরীচিকা জল







শো- কেস
===============



শো- কেসে সাজিয়েছি সুখ

বেলজিয়াম সৌরস্বচ্ছ রজতাভ মুখ

আহা,এল-সি- ডি আসবাবে চাঁদের ক্যারেট।



জল ছাঁকনির বিশুদ্ধ বৃষ্টি পানীয়

তেজস্ক্রিয় শোভিত অাভরণ

মেঘলা বাতাসে রিমঝিম জলবায়ু।



আকাশ নীল দেওয়ালে ঝোলে

আমার ধনাঢ্য পশমিনা

গৃহদাহ পুড়ে গেছে নগদ জমানায়।



এক সুরম্য বাতাসে ভর করে আসে

জোনাকির গান

বাদামী বিকেলের শেষে অস্তমিত সুর।



রূপকথার মায়াজালে সাজিয়েছি সতত সুখ

উপাধানে ঠেস দিয়ে আরামের বিশ্বাস

তাকিয়ার মোহ সুখে তত্ত্বপুরাণ।



হৃদয়ে হৃদয়ে এই সুখ ভাসে যদি

আদি ও অনন্ত কাল

সুখের আবাদী হবে আমাদের যৌথ খামার।







তোমাকে
===============



অতীন্দ্রিয় পেরিয়ে যেতে যেতে

শরীরে গেঁথে গেল শিকড়ের ঘ্রাণ

মনের অলিন্দে রেখে দিলাম পত্রমুকুল

ফোটাবো ফুলের গান



শোনো নি যে সব সুগন্ধ পাপড়ি প্রোজ্জ্বল

আজ তার জন্মকথা বলি

লাবণ্যে রঙীন এই শরীরী মন্তাজ

তাকেই উপজীব্য করি আজ



খেলনাপাতি নয় এ ধ্রুপদী লহরী বটে

তাল লয়ের সুরভি অণু পরমাণু জুড়ে

ইন্দ্রিয় প্রভাসে আমি তুমি সিক্ত প্রেমকথা

ভিজে গেল প্রমোদে কোলাহল সরবতা

 

 

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন