.......আর ভালো লাগছে না । কতদিন হয়ে গেল খালি শুনছি লকডাউন । সবাই বাইরে বের হচ্ছে , অফিস যাচ্ছে ,বাজার যাচ্ছে । এই তো সেদিন পাশের বাড়ির মিনুদিদি বলল , ওরা নাকী ট্রেনে চেপে টাকী ঘুরে এলো । শুধু তাই নয় ওরা ওখানে দুদিন ছিল । তাহলে কেমন লকডাউন হচ্ছে বলো তো দাদাই ।
.......তিতলি কতদিন স্কুল যায় না । আজ অনেকদিন পর বায়না করেছে , ওকে স্কুলের সামনে থেকে ঘুরিয়ে আনতে হবে ওর খুব স্কুলটা দেখতে ইচ্ছে করছে । কেউ না নিয়ে গেলেও দাদাইকে আজ কিছুতেই ছাড়া নেই ।
......."রোজ রোজ তোমরা আমাকে খালি বলছো লকডাউন তাই স্কুল বন্ধ । সে তো অনেকদিন হয়ে গেল । সব অফিস খুলে গেছে বাস চলছে , কেবল আমাদের স্কুল খুলছে না । এটা কেমন কথা বলো তো দাদাই । "
......."রোজ রোজ তোমরা আমাকে খালি বলছো লকডাউন তাই স্কুল বন্ধ । সে তো অনেকদিন হয়ে গেল । সব অফিস খুলে গেছে বাস চলছে , কেবল আমাদের স্কুল খুলছে না । এটা কেমন কথা বলো তো দাদাই । "
......দাদাই আর কি বলবে , মনে মনে ভাবছে সত্যিই তো সব খুলে গেছে । দোকান বাজার সব খোলা । লোকে রাস্তায় বের হচ্ছে । শুধু স্কুল আর কলেজ খুলছে না। মানে পাঠশালা বন্ধ পানশালা খোলা , কী আজব ব্যাপার । প্রায় দেড় বছর হতে চলল , গত বছর ১৫ই মার্চ থেকে স্কুল -কলেজ বন্ধ হলো, ভাবলাম গরমের ছুটি একটু বেশি পাওয়া গেল ! সেই ভাবনা যে এমন পর্যায়ে পৌঁছে যাবে -তা কে জানতো ! এখনও পর্যন্ত তা খোলার আর নাম নেই । কেবল অনলাইন ক্লাস করে সব বাড়িতে অলস অকেজো হয়ে পড়ছে । দিকে দিকে রীতিমতো আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে স্কুল কলেজ খোলার দাবীতে ।"
......"আচ্ছা দিদিভাই শোন , এই দুর্গা পুজোর পর স্কুল খুলবে খবরে বলেছে , তাহলে তুমি আর কটাদিন একটু ধৈর্য ধরো । দেখবে তুমি আবার স্কুল ড্রেস পড়ে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে টিফিন -জল নিয়ে স্কুলের গাড়ি করে স্কুলে যাচ্ছো আমাকে টাটা করতে করতে !"কি মজা হবে বলো !"
......"সে তো আগের বছরও খবরে বলেছিল , পুজোর পর স্কুল খুলবে আর ট্রেন চলবে । কোথায় হল বলো ! আমি তো সিক্স থেকে সেভেন হয়ে গেলাম ।"
......"সে তো আগের বছরও খবরে বলেছিল , পুজোর পর স্কুল খুলবে আর ট্রেন চলবে । কোথায় হল বলো ! আমি তো সিক্স থেকে সেভেন হয়ে গেলাম ।"
......" কেন দিদিভাই , ট্রেন তো খুলেছিলো ! যদি না করোনার দ্বিতীয় ঢেউ না আসতো তাহলে আর ট্রেন বন্ধ হতো না ।"
......."এবার তো আবার তৃতীয় ঢেউ আসছে যা ছোটদের জন্য খুব বিপদজনক । সেই যে এবছর এপ্রিল মাস থেকে ধাপে ধাপে লকডাউন হয়েই যাচ্ছে সরকারী নির্দেশে । সব খুলে গেছে জিম -ক্লাব -পার্ক , কেবল স্কুল আর কলেজেই কাউকে যেতে দিচ্ছে না বলে খুলছেও না । লোকাল ট্রেন চলছে না , যদিও দূরপাল্লার ট্রেন চলছে ।"
........মা তো বলেছে এবার আমরা আর আগের মতো অতোটা সময় স্কুলে বেঞ্চে বসে ক্লাস করতে পারবো না । সবসময় ফোন নিয়ে বিছানায় বসে শুয়ে আরামে আয়েসে অনলাইন ক্লাস করেছি বলে নাকী ।
.......দাদাই বলল , "এটা খুব ভুল বলে নি কিন্তু বৌমা ! তবে কি জানো স্কুল খুললে তোমাদের প্রথমে একটু অসুবিধা হবে বৈকী , কিছুদিন পরে সব ঠিক হবো ।"
......."এবার তো আবার তৃতীয় ঢেউ আসছে যা ছোটদের জন্য খুব বিপদজনক । সেই যে এবছর এপ্রিল মাস থেকে ধাপে ধাপে লকডাউন হয়েই যাচ্ছে সরকারী নির্দেশে । সব খুলে গেছে জিম -ক্লাব -পার্ক , কেবল স্কুল আর কলেজেই কাউকে যেতে দিচ্ছে না বলে খুলছেও না । লোকাল ট্রেন চলছে না , যদিও দূরপাল্লার ট্রেন চলছে ।"
........মা তো বলেছে এবার আমরা আর আগের মতো অতোটা সময় স্কুলে বেঞ্চে বসে ক্লাস করতে পারবো না । সবসময় ফোন নিয়ে বিছানায় বসে শুয়ে আরামে আয়েসে অনলাইন ক্লাস করেছি বলে নাকী ।
.......দাদাই বলল , "এটা খুব ভুল বলে নি কিন্তু বৌমা ! তবে কি জানো স্কুল খুললে তোমাদের প্রথমে একটু অসুবিধা হবে বৈকী , কিছুদিন পরে সব ঠিক হবো ।"
......"সে আর কবে বলো তো ,খুলবে খালি শুনছি।আচ্ছা দাদাই বলো তো আমরা স্কুলে গেলেই করোনা হবে । আমরা দূরত্ব রেখে ক্লাস করলে কি হয় না ! বলবে তোমাদের ভ্যাকসিন নেওয়া হয়েছে । তাহলে আমাদের ভ্যাকসিন দেবার ব্যবস্থা করা হোক ! এভাবে কি ভালো লাগে নাকী ! পরীক্ষা হচ্ছে না , খালি ভুড়ি ভুড়ি নাম্বার দিয়ে হবে কী ! কোন কমপিটিশন নেই , ক্লাসে বসে টিচাররা যে পড়া ধরতো , সেটা নেই । পড়তে কোন উৎসাহ পাচ্ছি না ।"
......"হ্যাঁ রে ,মাম বুঝতে পারছি তোর কষ্টটা । ভাবো তোমার ক্লাস সেভেন তুমি একটু বুঝতে পারছো । একেবারে ছোট বাচ্চারা কিভাবে অনলাইন ক্লাস করছে বলো তো ! কত কষ্ট হচ্ছে খেলাধূলা ছাড়া ঘরে বন্দী হয়ে রয়েছে ।"
.......দেখুন বাবা ,এদিকে বিয়েবাড়ি অন্যান্য সব অনুষ্ঠান উৎসব পার্বণ কিছুই বন্ধ হয় নি । কেবল নিমন্ত্রিত মানুষের সংখ্যা কম হয়েছে এই যা ! যে করোনা নিয়ে এত অভিযোগ , যার জন্য এতো পরিকল্পনা করছে সরকার থেকে । এদিকে ভিটিং- মিছিল বন্ধ হয় নি ,তা কিভাবে সামলাচ্ছে । অথচ দেখুন অনেক মানুষ এখনও মুখে মাক্স লাগানো তো দূরের কথা, হাত ধোয়া , দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা কিছুই করছে না । পাবলিক পরিবহনে লোকেরা কোন দূরত্ববিধি মানছে না । তারা সবাই ভ্যাকসিন নিয়েছে ,এমন গ্যারান্টি দিতেও পারবে না কেউ ! কিভাবে সবাই পথে বের হচ্ছে ।"
......"হ্যাঁ রে ,মাম বুঝতে পারছি তোর কষ্টটা । ভাবো তোমার ক্লাস সেভেন তুমি একটু বুঝতে পারছো । একেবারে ছোট বাচ্চারা কিভাবে অনলাইন ক্লাস করছে বলো তো ! কত কষ্ট হচ্ছে খেলাধূলা ছাড়া ঘরে বন্দী হয়ে রয়েছে ।"
.......দেখুন বাবা ,এদিকে বিয়েবাড়ি অন্যান্য সব অনুষ্ঠান উৎসব পার্বণ কিছুই বন্ধ হয় নি । কেবল নিমন্ত্রিত মানুষের সংখ্যা কম হয়েছে এই যা ! যে করোনা নিয়ে এত অভিযোগ , যার জন্য এতো পরিকল্পনা করছে সরকার থেকে । এদিকে ভিটিং- মিছিল বন্ধ হয় নি ,তা কিভাবে সামলাচ্ছে । অথচ দেখুন অনেক মানুষ এখনও মুখে মাক্স লাগানো তো দূরের কথা, হাত ধোয়া , দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা কিছুই করছে না । পাবলিক পরিবহনে লোকেরা কোন দূরত্ববিধি মানছে না । তারা সবাই ভ্যাকসিন নিয়েছে ,এমন গ্যারান্টি দিতেও পারবে না কেউ ! কিভাবে সবাই পথে বের হচ্ছে ।"
......"শোনো বৌমা , গতবছর মার্চ মাসের একদম প্রথমে করোনা যখন ধরা পড়লো , চারিদিকে খুব বাড়ছিল , সেইসময় লকডাউন করে সব বন্ধ ছিল একদম ঠিকঠাক। সবাই কষ্ট করেও মেনে নিয়েছে ! ব্যাঙ্কের এটি এম গুলোতে বিশাল লাইনে দাঁড়িয়ে কীভাবে মানুষ টাকা তুলেছিল । আর কতদিন ঘরে বসে গচ্ছিত টাকায় খাবে বলতে পারো ! কার কত টাকা জমানো থাকে ! কথায় আছে বসে খেলে রাজার ভান্ডারও শেষ হয়ে যায় । কত মানুষের চাকরি চলে গেছে এই করোনায় । ছোটখাটো ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে । পরিযায়ীরা ঘরে ফিরেছে ফাঁকা হাতে । দেশে বেকার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে । এখনও চলতে পারে ঘরে বসে । মানুষ বের হবেই যে যা করে দুটো পয়সা উপায় করতে চেষ্টা করছে । এটাকে বলে পেটের টান । যখন খেতে পাবে না , ঘরে বাচ্চারা ক্ষিদেতে কষ্ট পাবে , সেটা কোন বাবা চোখে দেখে সরকারের দেওয়া নিয়ম মেনে পেটে কম্বল চাপা দিয়ে বসে থাকতে পারে না । এটাকে বলে জীবন আর জীবিকার লড়াই ।"
.....এই লকডাউনে ভোট হলো , লাইন দিয়ে মানুষ ভোট দিয়ে সরকার গঠন করলো । ভ্যাকসিন নিতে গিয়েও সেই লাইনে জমায়েত হচ্ছে মানুষ ! কোথাও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে এখনও ! কিছুদিন আগে রাত নটা থেকে ভোর পাঁচটা এখন কেবল রাত এগারোটা থেকে ভোর পাঁচটা লকডাইন । স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় অনেক পড়ুয়া নেট আর ফোনের অভাবে পড়াশুনা ছেড়ে কাজ করছে । পেটের দায়ে গ্রামাঞ্চলে পড়ুয়া মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে বাবা -মায়েরা অভাবের দরুন ।
.....".সরকার কি সবার ঘরে খাবার পৌঁছে দিতে পারবে ,না সেটা সম্ভব ! কাজেই এখন যেটা চলছে সেটা সরকারের লকডাউনের নামে লৌকিকতা ছাড়া আর কিছুই নয় । শুধু ভাবনা হয় শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে ,এইভাবে আগামী প্রজন্ম এক ভয়ানয় অশিক্ষার বেষ্টনীতে বিভীষিকাময় অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে । যার ফল কতটা ভয়ংকর হতে পারে ,তা কেবল আগামী ভবিষ্যৎ-ই এর যোগ্য জবাব দিতে পারবে । কেননা এইভাবে কোন সুন্দর সুশৃঙ্খল সমাজ গড়ে উঠতে পারে না । খেলাধূলা পড়াশুনার আর একটা দিক -যা শিশুদের মনস্তাত্বিক ঠিক গঠন করতে সাহায্য করে । সেটাও বন্ধ রাখা হয়েছে - একটা সামাজিক ব্যাধীতে পরিণত হতে চলেছে এই লকডাউনের ফলাফল সুদূর প্রসারী হবে ।"
.....এই লকডাউনে ভোট হলো , লাইন দিয়ে মানুষ ভোট দিয়ে সরকার গঠন করলো । ভ্যাকসিন নিতে গিয়েও সেই লাইনে জমায়েত হচ্ছে মানুষ ! কোথাও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে এখনও ! কিছুদিন আগে রাত নটা থেকে ভোর পাঁচটা এখন কেবল রাত এগারোটা থেকে ভোর পাঁচটা লকডাইন । স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় অনেক পড়ুয়া নেট আর ফোনের অভাবে পড়াশুনা ছেড়ে কাজ করছে । পেটের দায়ে গ্রামাঞ্চলে পড়ুয়া মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে বাবা -মায়েরা অভাবের দরুন ।
.....".সরকার কি সবার ঘরে খাবার পৌঁছে দিতে পারবে ,না সেটা সম্ভব ! কাজেই এখন যেটা চলছে সেটা সরকারের লকডাউনের নামে লৌকিকতা ছাড়া আর কিছুই নয় । শুধু ভাবনা হয় শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে ,এইভাবে আগামী প্রজন্ম এক ভয়ানয় অশিক্ষার বেষ্টনীতে বিভীষিকাময় অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে । যার ফল কতটা ভয়ংকর হতে পারে ,তা কেবল আগামী ভবিষ্যৎ-ই এর যোগ্য জবাব দিতে পারবে । কেননা এইভাবে কোন সুন্দর সুশৃঙ্খল সমাজ গড়ে উঠতে পারে না । খেলাধূলা পড়াশুনার আর একটা দিক -যা শিশুদের মনস্তাত্বিক ঠিক গঠন করতে সাহায্য করে । সেটাও বন্ধ রাখা হয়েছে - একটা সামাজিক ব্যাধীতে পরিণত হতে চলেছে এই লকডাউনের ফলাফল সুদূর প্রসারী হবে ।"
........"বুদ্ধিজীবিদের কাছে প্রশ্ন রাখি "- এভাবে কোন সমাজ কখনও বেশিদিন চলতে পারে ! কত মানুষ অভাবের তাড়নায় নিজের পরিবার সহ আত্মাহুতি দিয়েছে ! তাদের দায় কে নেবে ? সবচেয়ে বড় কথা, "শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড ।"এমন শৈশবকাল দেখেছেন কখনও ! সঠিক উওর খোঁজার পাল্লায় দেখতে গেলে বোঝা যাবে , এই লকডাউনের প্রভাবে একমাত্র দরিদ্র মানুষেরা আর পড়ুয়ারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে । অর্থের অভাবে চিকিৎসা পাচ্ছে না অনেক বিপন্ন মানুষ ! সমাজের বিত্তবানদের কোন অসুবিধা হয় নি । তাদের জীবন আর জীবিকায় কোন প্রভাব পড়ে নি । আদৌ লকডাউন করে কোন সমাধান করা যায় না । যদি না সেটা পুরোপুরি কঠোর ভাবে সময়োপযোগী মান্যতা না পায় । কেবল আংশিকভাবে রেখে শুধু একশ্রেণীর জীবনযাত্রার মান নষ্ট হচ্ছে । অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে অনেকে । শিশু-কিশোরদের আর বেসরকারি চাকরিজীবিদের কথা ভেবে সবাই এগিয়ে এসে এর সমাধান করা খুব দরকার । নইলে বেশিদিন এভাবে চললে আরও বড়ো কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে সমাজকে !
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন