'লক করল বৈঠল নঈ পারিন, এত্ত বকবক করিন কন?', অর্থাৎ চুপ করে বসতে পারছিস না, এত কথা বলছিস কেন ? অথবা 'লক কর বৈঠ' অর্থাৎ চুপচাপ বসে থাক কিংবা 'লক কর খড়া রহ, হিলিন নঈ' অর্থাৎ চুপ করে দাঁড়া, নড়বি না।
এই হলো মালদহ জেলার গ্রামাঞ্চলের একটি ভাষা.. খোট্টা ভাষা। তার মানে, আজকাল যে শব্দটি ঘিরে মানুষের ওষ্ঠাগত প্রাণ.. এই 'লকডাউন' শব্দটি নতুন কোনো শব্দ নয়। শব্দটি বহুকাল পূর্বেও ব্যবহৃত হয়েছে নইলে খোট্টাভাষার মতো একটি কথ্যভাষার মধ্যে তা মিশে আছে কী করে ? শুধু খোট্টা নয়, অন্যান্য আঞ্চলিক কথ্যভাষাতেও শব্দটির ব্যবহার হতে দেখা যায় অর্থাৎ এর আগেও পৃথিবীতে মহামারী এসেছে এবং সেইসময়ও লকডাউন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল .. সেই থেকেই এই শব্দটি কথ্যভাষায় পাকাপাকিভাবে স্থান করে নিয়েছে। প্রমাণিত সত্য যে, প্রতি একশোবছর অন্তর একটি করে মহামারী এই পৃথিবীতে দেখা দিয়েছে ও সারা বিশ্বে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে। এই সকল ধ্বংসলীলা মানব সভ্যতার পরিপন্থী হয়ে উঠলেও মানুষ আবার উঠে দাঁড়িয়েছে .. এগিয়েছে .. কারণ সভ্যতা কখনো থেমে থাকে না। এই যে মহামারী অর্থাৎ অদৃশ্য রোগ বা ভাইরাস বা অণুজীব.. এর পথরোধ করার প্রথম উপায় হিসেবে 'লকডাউন' পন্থাকেই মানুষ বেছে নিয়েছে। এই প্রসঙ্গে আমার মায়ের মুখে শোনা একটি গল্পকথা বা ঘটনার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে .. ঘটনাটি সম্ভবতঃ ঊনবিংশ শতকের ..'কলেরা মহামারী'র সময়ের।
এই হলো মালদহ জেলার গ্রামাঞ্চলের একটি ভাষা.. খোট্টা ভাষা। তার মানে, আজকাল যে শব্দটি ঘিরে মানুষের ওষ্ঠাগত প্রাণ.. এই 'লকডাউন' শব্দটি নতুন কোনো শব্দ নয়। শব্দটি বহুকাল পূর্বেও ব্যবহৃত হয়েছে নইলে খোট্টাভাষার মতো একটি কথ্যভাষার মধ্যে তা মিশে আছে কী করে ? শুধু খোট্টা নয়, অন্যান্য আঞ্চলিক কথ্যভাষাতেও শব্দটির ব্যবহার হতে দেখা যায় অর্থাৎ এর আগেও পৃথিবীতে মহামারী এসেছে এবং সেইসময়ও লকডাউন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল .. সেই থেকেই এই শব্দটি কথ্যভাষায় পাকাপাকিভাবে স্থান করে নিয়েছে। প্রমাণিত সত্য যে, প্রতি একশোবছর অন্তর একটি করে মহামারী এই পৃথিবীতে দেখা দিয়েছে ও সারা বিশ্বে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে। এই সকল ধ্বংসলীলা মানব সভ্যতার পরিপন্থী হয়ে উঠলেও মানুষ আবার উঠে দাঁড়িয়েছে .. এগিয়েছে .. কারণ সভ্যতা কখনো থেমে থাকে না। এই যে মহামারী অর্থাৎ অদৃশ্য রোগ বা ভাইরাস বা অণুজীব.. এর পথরোধ করার প্রথম উপায় হিসেবে 'লকডাউন' পন্থাকেই মানুষ বেছে নিয়েছে। এই প্রসঙ্গে আমার মায়ের মুখে শোনা একটি গল্পকথা বা ঘটনার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে .. ঘটনাটি সম্ভবতঃ ঊনবিংশ শতকের ..'কলেরা মহামারী'র সময়ের।
১৮২০তে যে 'কলেরা মহামারী' দেখা দিয়েছিল.. তা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছিলো সারা পৃথিবীর সাথে ভারতবর্ষেও। বিশেষতঃ গ্রামাঞ্চলে এর প্রকোপ বেশি ছিল.. বাহিরে মাঠে ঘাটে বাগানে মলমূত্র ত্যাগ ও উপযুক্ত চিকিৎসার অভাব এর কারণ। এর ফলে গ্রামাঞ্চলে মৃত্যুর হারও অনেক বেশি ছিল। একটি গ্রামে কলেরার প্রকোপ দেখা দিলে .. গ্রামটি প্রায় নির্মূল হয়ে যেত। সেরকমই মালদহ জেলার ইংরেজবাজার থানার অন্তর্গত কাজিগ্রাম অঞ্চলের মধ্যে 'সদানন্দপুর' ও 'জ্ঞানপাড়া'.. এই দুটি গ্রামে কলেরার প্রকোপ দেখা দিলে জ্ঞানপাড়া থেকে এক রমণী তার শিশুপুত্রদের নিয়ে গ্রাম ছেড়ে তার বাপের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয়। একটি বড়সরো আমবাগান পেরিয়ে মানিকপুর গ্রাম.. সেখানেই তার বাপের বাড়ি কিন্তু ততক্ষণে তাদের শরীরে কলেরার জীবাণু প্রবেশ করে ফেলেছে। এইরকম পরিস্থিতিতে তারা যখন বাগান পেরিয়ে মানিকপুর গ্রামে প্রবেশ করতে যাবে সেই সময় বাধাপ্রাপ্ত হয়। কোনো একজন তাদের রাস্তা ছেঁকে ধরে এবং কিছুতেই তাকে গ্রামে প্রবেশ করতে দেয় না, বাধ্য হয়েই তারা ফিরে যায় নিজেদের গ্রামে। এর কয়েক দিনের মধ্যে জ্ঞানপাড়া ও সদানন্দপুরে কলেরা মহামারী ধ্বংসলীলা চালালেও মানিকপুর গ্রামে এই রোগ প্রবেশ করেনি। স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস যে গ্রামের শেষপ্রান্তে 'মা কালী'র থান রয়েছে আর সেখানেই 'মা কালী' মানুষের ছদ্মবেশে এসে বাধা দিয়েছে আর রোগজীবাণুর হাত থেকে মানিকপুর গ্রামকে রক্ষা করেছে। ঘটনাটি 'দৈবিক' হোক বা 'মানুষের সচেতনতা'.. এভাবে যে জীবানু প্রসারের 'চেন' বা 'লক' ভাঙতে সক্ষম হয়েছিল তার বিবরণ পাওয়া যায়। এই ঘটনার ফলে শুধু মানিকপুর গ্রাম নয় .. তার পূর্বদিকের গ্রামগুলিও রক্ষা পেয়েছিলো কারণ রোগজীবাণু এগোনোর পথ পায়নি।
সুতরাং, 'লকডাউন' নিছক একটি শব্দ নয় .. এর যথাযথ পালন অর্থাৎ 'সচেতনতা'য় কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব। মানুষের জমায়েত যদি কিছুদিনের জন্য বন্ধ করা সম্ভব হয় তবেই নির্মূল করা যেতে পারে বর্তমানের এই "করোনা'' নামক ভাইরাসঘটিত অতিমারীকে।
কিন্তু, সারা বিশ্বের সাথে একযোগে ভারতেও দফায় দফায় 'লকডাউন' জারি করেও বিশেষ কোনো সুফল পাওয়া গেলো না কারন ভারতের মতো বৃহদাকার দেশে 'লকডাউন' নিছক একটি প্রহসন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর কারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাববোধ। শিক্ষিত মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে যদি নিয়ম লঙ্ঘন করে তাহলে প্রশাসনিক সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হতে বাধ্য। পুলিশ, সাফাইকর্মী, চিকিৎসা বিভাগ এবং বিভিন্ন সমাজসেবী সংস্থানগুলি যেভাবে মানুষের সেবায় দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছে তা তখনি সফল হবে যখন দেশের জনগণ সঠিক ভাবে নিয়ম পালন করবে কিন্তু, তা কখনোই হয়ে উঠলো না। অন্যদিকে কর্মসংস্থান বন্ধ হওয়ার ফলে অজস্র অস্থায়ী কর্মী ও 'দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ' বেকার হয়ে পড়লো ফলে আর্থিক অনটনে জর্জরিত দেশের অর্ধেক জনগণ হতাশার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে লড়াই করতে করতে ক্লান্ত।
একদিকে ঘরবন্দি মানুষ, অন্যদিকে কর্মহারা বিদেশ-বিভুঁইয়ে কিংবা ভিনরাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিকশ্রেণীর ঘরে ফেরার আকুতি.. আবার বহু সাধারণ মানুষের বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন প্রদেশে দীর্ঘদিন আটকে থাকার মতো পরিস্থিতি এবং 'আমফান'এর মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি বাধ্য করলো দেশের লকডাউন পরিস্থিতি শিথিল করতে। চতুর্থ দফার লকডাউন শেষে শুরু হলো 'আনলক ওয়ান - টু - থ্রী - ', কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরিবর্তে আরও বেশি জটিল হয়ে উঠলো। ঘরফেরতা শ্রমিক শ্রেণীর কারণে করোনা রোগীর সংখ্যা দ্বিগুন .. তিনগুন করে বাড়লো.. ক্রমাগত বাড়লো মৃত্যুর হারও। বেসামাল বেসামাল অবস্থায় জীবন মৃত্যুর রেষারেষি। শেষপর্যন্ত্য মানুষই জিতবে.. তবে সে সময় আসতে আসতে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে, অনেকগুলো নিয়মের পরিবর্তন ঘটবে.. বেশ কিছুটা সময় অযথা নষ্ট হবে।
তবে কী ধরে নেবো, একটি যুগের পরিবর্তন হতে চলেছে ? হতেও পারে .. এও এক বিপ্লবের সূচনা। স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর ধারণা পোষণ কালে বলেছেন, এই যে প্রাচীনকালে সমাজ ব্যবস্থা প্রকরণে চারটি বর্ণ ব্যবস্থার স্থাপন করা হয়েছিল .. সেটাতো বর্ণবৈষম্য ঘটানোর জন্য নয় ! সময় অন্তরে তাদের বিশেষ হয়ে ওঠা এবং সমাজের পরিচালন ব্যবস্থার ধারক ও বাহক হয়ে ওঠা.. যা এক একটা যুগের পরিবর্তন ঘটিয়েছে,
ভারতীয় দর্শনধারা সাধারণতঃ সেই ইঙ্গিতই করেছে।
প্রাচীন সভ্যতার নিরীখে ভারত তথা বিশ্বে যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল তা ছিল জ্ঞানের আলো যার শীর্ষে ছিল পন্ডিত ব্যক্তিগণ.. দার্শনিকগণ। ভারতীয় সংস্কৃতিতে এরা পন্ডিত বা 'ব্রাহ্মণশ্রেণী' নামে খ্যাত, বৈদিক যুগে যাদের প্রাধান্য বর্তমান। কালে কালে যখন ব্রাহ্মণশ্রেণী নিজেদের সততার পথ থেকে সরে আসতে লাগলো, এবং নিজেদের প্রতিপত্তি অন্যদের ওপর জোর করে চাপাতে লাগলো তখন প্রতিবাদ আসাটা স্বাভাবিক ছিল .. আর এর ফলে সমাজের দায়িত্ব পালনের ভার নিজেদের হাতে তুলে নিল যারা তারা ভারতীয় সংস্কৃতিতে 'ক্ষত্রিয় শ্রেণী' নামে পরিচিত। 'ত্রেতাযুগ', 'দ্বাপরযুগ' রাজা-রাজরার যুগ, 'ক্ষত্রিয়'দের অধীন। পরামর্শদাতারূপে মুনিঋষিদের সর্বোত্তম স্থান থাকলেও সমাজ পরিচালনার ভার ছিল ক্ষত্রিয়দের হাতে।
প্রাচীন সভ্যতার নিরীখে ভারত তথা বিশ্বে যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল তা ছিল জ্ঞানের আলো যার শীর্ষে ছিল পন্ডিত ব্যক্তিগণ.. দার্শনিকগণ। ভারতীয় সংস্কৃতিতে এরা পন্ডিত বা 'ব্রাহ্মণশ্রেণী' নামে খ্যাত, বৈদিক যুগে যাদের প্রাধান্য বর্তমান। কালে কালে যখন ব্রাহ্মণশ্রেণী নিজেদের সততার পথ থেকে সরে আসতে লাগলো, এবং নিজেদের প্রতিপত্তি অন্যদের ওপর জোর করে চাপাতে লাগলো তখন প্রতিবাদ আসাটা স্বাভাবিক ছিল .. আর এর ফলে সমাজের দায়িত্ব পালনের ভার নিজেদের হাতে তুলে নিল যারা তারা ভারতীয় সংস্কৃতিতে 'ক্ষত্রিয় শ্রেণী' নামে পরিচিত। 'ত্রেতাযুগ', 'দ্বাপরযুগ' রাজা-রাজরার যুগ, 'ক্ষত্রিয়'দের অধীন। পরামর্শদাতারূপে মুনিঋষিদের সর্বোত্তম স্থান থাকলেও সমাজ পরিচালনার ভার ছিল ক্ষত্রিয়দের হাতে।
কলিযুগ ..
ইতিমধ্যে রাজা-রাজরাগণ নিজেদের ক্ষমতাবলে হয় অত্যাচারী হয়েছে নয় দুর্বল ও ভোগবিলাসী.. অতএব পরিবর্তন আসাটা স্বাভাবিক ছিল আর এই অবসরে আর্থিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে বৈশ্যশ্রেণী, ফলস্বরূপ 'কলিযুগ' ব্যবসা নির্ভরযুগ। আমরা স্বচক্ষে তার প্রমান দেখছি কিন্তু, শেষপর্যন্ত এই শ্রেণীও আজ বিপর্যয়ের মুখে কারণ তাদের প্রতিপত্তি, অসাধুতা, কারচুপির ফলে এক শ্রেণী যখন উচ্চবিত্ত হয়ে উঠছে .. আর এক শ্রেণী তখন ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ছে। বর্তমানকালে শিক্ষা, চাকরি, চিকিৎসা, রাজনীতি.. সবই ব্যবসা নির্ভর এবং এগুলোর সাথে প্রতিটা পদক্ষেপে মিশে আছে দুর্নীতি। অতএব পরিবর্তন আবশ্যক হয়ে পড়েছিল। কিন্তু, বিপ্লব ঘটাবে কে ? খন্ড খন্ড আন্দোলন নিজেদের স্বার্থপূরণ করলেও সামগ্রিকভাবে বিপ্লব আনতে পারে না।
সুতরাং সাময়িকভাবে হলেও একটা পরিবর্তন এলো .. মহামারীর হাত ধরে। হয়তো এভাবেই নতুন একটি যুগের সূচনা আমরা দেখতে পাচ্ছি, যদিও মেনে নিচ্ছি না। 'করোনা' নামক অণুজীব যেভাবে সংক্রমিত করে ফেলেছে সারা বিশ্বকে .. তার থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য যারা প্রতিনিয়ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে .. তারা কারা ? যারা তাদের সেবার দ্বারা মানুষকে সুস্থ জীবন প্রদান করার লক্ষ্যে দিনপাত করছে .. তাদের আজ একটাই ধর্ম .. সেবাধর্ম। চিকিৎসাকর্মী, পুলিশ, সাফাইকর্মী, সমাজসেবী, এমনকী সাধারণ মানুষও আজ সেবাপ্রবন ও শুচিতা রক্ষার জন্য ব্যতিব্যস্ত। তাহলে কি আমরা বলতে পারিনা .. যে এই সময়ের পরিচালক 'শূদ্রশ্রেণী'। অর্থাৎ যে যুগটা আসতে চলেছে সেটার অধিকর্তা সেবক শ্রেণী অর্থাৎ শূদ্র। জানি, অনেকেই শুনে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবে .. হাস্যকর মনে করবে কিন্তু, একটু ভেবে দেখলে সব পরিষ্কার।
আজকের দিনে পদবী বিচারে যে জাতপাত বিচার করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। প্রাচীন কালে কোনো পদবীর ব্যবহার ছিল না। 'বর্ণাশ্রম' গঠিত হয়েছিল কর্মের ভিত্তিতে। যারা জ্ঞানদান করবেন তাঁরা ব্রাহ্মণ অর্থাৎ যাঁরা ব্রহ্মজ্ঞান অর্জন করেছেন ; যারা দেশ ও দেশের জনগণকে রক্ষা করবেন তাঁরা ক্ষত্রিয় অর্থাৎ তাঁরা অস্ত্রশস্ত্রের অধিকারী ; যাঁরা কর্মকুশলের দ্বারা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে দেশের আর্থিক প্রয়োজন মেটাবেন, তাঁরা বৈশ্য ; আর যাঁরা সেবার দ্বারা সকলকে রক্ষা করবেন তাঁরা শূদ্র। বর্ণাশ্রম ক্রমে বর্ণভেদে পরিণত। জাতপাতে উচ্চনীচ এসেছে আর্থিক ভিন্নতার কারণে। আজকের দিনে, সুবিধা অনুযায়ী সব শ্রেণীর মানুষই সব পেশার সাথে যুক্ত। পুরোহিতগিরি টিকে থাকলেও ঘরে ঘরে অনেক পূজো-পার্ব্বণ-ব্রত পুরোহিত ছাড়াই পালিত হচ্ছে। আবার পুরোহিত শ্রেণী নিজেদের পেশার সাথে সাথে অন্য পেশার সাথেও যুক্ত। আসলে, বর্ণ তাদের কাজের মাধ্যমে স্বীকৃত। সেই হিসেবে বর্তমানে যাঁরা সেবাকর্মের সাথে যুক্ত, তারাই শূদ্রশ্রেনিভুক্ত মনে করা যেতে পারে পদবীর বিচার না করে।
প্রাচীনকালের ইতিহাস খুঁড়লে আমরা জানতে পারি, পাল রাজত্বকালে ভূমিকম্পর কারণে ধ্বংস হয়েছিল.. অজস্র বৌদ্ধস্তূপ। এইসব ধ্বংসাবশেষে চাপা পড়ে মৃত্যু ঘটেছিল অজস্র প্রাণ। পচা দুর্গন্ধএর কারনে মহামারী রোগে আক্রান্ত বাংলা। সেইসময় পশ্চিম থেকে আগত কিছু শ্রেণীর লোক এই ধ্বংসবশেষ সাফাই করার কাজে নিয়োজিত হয়। এই মহৎ কাজে তারা নিয়োজিত হয়েছিল বলে তাদের 'মহৎত্তর' বলা হত .. তারাই আজকে 'মেথর' বলে পরিচিত এবং তারা কী কারণে 'অচ্ছুৎ' তা নিশ্চয় পরিষ্কার বোঝা গেলো। ঠিক একই কারনে বর্তমান সময়ে 'করোনা' রোগ প্রতিহত করতে যাঁরা প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত .. তাঁরাই ক্রমাগত সমাজে 'অচ্ছুৎ' হয়ে পড়ছেন অর্থাৎ এই অচ্ছুৎ শ্রেণীই কিন্তু বর্তমানে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে সমাজ রক্ষার দায়ভার বহন করে চলেছেন। আজকের সমাজ ব্যবস্থা পূর্বকালের মতো শুচিগ্রস্থ হয়ে উঠছে .. ফলে সেবকশ্রেণী আবারও 'একঘরে অচ্ছুৎ' আর সমাজ পরিচালনার ভার এদেরই হাতে! বাকিরা তো গৃহবন্দী! করোনা আক্রান্ত রুগী সমেত কোভিড টিকা গবেষক, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, সাফাইকর্মী, খাদ্য সরবরাহকারী ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তথা করোনা রুখতে বিশ্বব্যাপী গ্রহণীয় সরকারি বেসরকারি পদক্ষেপ বা তাদের নির্দেশিত পথেই আজ সময় পরিচালিত হচ্ছে। অর্থাৎ সময় ক্রমশঃ শূদ্রশ্রেণীর অধীনস্ত। উল্লেখ্য যে এই অচ্ছুৎ শ্রেণী কোনো নিম্নবংশদ্ভুত নয়, সমাজের সেবার কাজে নিয়োজিত যারা তারাই আজ অশৌচের
ইতিমধ্যে রাজা-রাজরাগণ নিজেদের ক্ষমতাবলে হয় অত্যাচারী হয়েছে নয় দুর্বল ও ভোগবিলাসী.. অতএব পরিবর্তন আসাটা স্বাভাবিক ছিল আর এই অবসরে আর্থিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে বৈশ্যশ্রেণী, ফলস্বরূপ 'কলিযুগ' ব্যবসা নির্ভরযুগ। আমরা স্বচক্ষে তার প্রমান দেখছি কিন্তু, শেষপর্যন্ত এই শ্রেণীও আজ বিপর্যয়ের মুখে কারণ তাদের প্রতিপত্তি, অসাধুতা, কারচুপির ফলে এক শ্রেণী যখন উচ্চবিত্ত হয়ে উঠছে .. আর এক শ্রেণী তখন ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ছে। বর্তমানকালে শিক্ষা, চাকরি, চিকিৎসা, রাজনীতি.. সবই ব্যবসা নির্ভর এবং এগুলোর সাথে প্রতিটা পদক্ষেপে মিশে আছে দুর্নীতি। অতএব পরিবর্তন আবশ্যক হয়ে পড়েছিল। কিন্তু, বিপ্লব ঘটাবে কে ? খন্ড খন্ড আন্দোলন নিজেদের স্বার্থপূরণ করলেও সামগ্রিকভাবে বিপ্লব আনতে পারে না।
সুতরাং সাময়িকভাবে হলেও একটা পরিবর্তন এলো .. মহামারীর হাত ধরে। হয়তো এভাবেই নতুন একটি যুগের সূচনা আমরা দেখতে পাচ্ছি, যদিও মেনে নিচ্ছি না। 'করোনা' নামক অণুজীব যেভাবে সংক্রমিত করে ফেলেছে সারা বিশ্বকে .. তার থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য যারা প্রতিনিয়ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে .. তারা কারা ? যারা তাদের সেবার দ্বারা মানুষকে সুস্থ জীবন প্রদান করার লক্ষ্যে দিনপাত করছে .. তাদের আজ একটাই ধর্ম .. সেবাধর্ম। চিকিৎসাকর্মী, পুলিশ, সাফাইকর্মী, সমাজসেবী, এমনকী সাধারণ মানুষও আজ সেবাপ্রবন ও শুচিতা রক্ষার জন্য ব্যতিব্যস্ত। তাহলে কি আমরা বলতে পারিনা .. যে এই সময়ের পরিচালক 'শূদ্রশ্রেণী'। অর্থাৎ যে যুগটা আসতে চলেছে সেটার অধিকর্তা সেবক শ্রেণী অর্থাৎ শূদ্র। জানি, অনেকেই শুনে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবে .. হাস্যকর মনে করবে কিন্তু, একটু ভেবে দেখলে সব পরিষ্কার।
আজকের দিনে পদবী বিচারে যে জাতপাত বিচার করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। প্রাচীন কালে কোনো পদবীর ব্যবহার ছিল না। 'বর্ণাশ্রম' গঠিত হয়েছিল কর্মের ভিত্তিতে। যারা জ্ঞানদান করবেন তাঁরা ব্রাহ্মণ অর্থাৎ যাঁরা ব্রহ্মজ্ঞান অর্জন করেছেন ; যারা দেশ ও দেশের জনগণকে রক্ষা করবেন তাঁরা ক্ষত্রিয় অর্থাৎ তাঁরা অস্ত্রশস্ত্রের অধিকারী ; যাঁরা কর্মকুশলের দ্বারা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে দেশের আর্থিক প্রয়োজন মেটাবেন, তাঁরা বৈশ্য ; আর যাঁরা সেবার দ্বারা সকলকে রক্ষা করবেন তাঁরা শূদ্র। বর্ণাশ্রম ক্রমে বর্ণভেদে পরিণত। জাতপাতে উচ্চনীচ এসেছে আর্থিক ভিন্নতার কারণে। আজকের দিনে, সুবিধা অনুযায়ী সব শ্রেণীর মানুষই সব পেশার সাথে যুক্ত। পুরোহিতগিরি টিকে থাকলেও ঘরে ঘরে অনেক পূজো-পার্ব্বণ-ব্রত পুরোহিত ছাড়াই পালিত হচ্ছে। আবার পুরোহিত শ্রেণী নিজেদের পেশার সাথে সাথে অন্য পেশার সাথেও যুক্ত। আসলে, বর্ণ তাদের কাজের মাধ্যমে স্বীকৃত। সেই হিসেবে বর্তমানে যাঁরা সেবাকর্মের সাথে যুক্ত, তারাই শূদ্রশ্রেনিভুক্ত মনে করা যেতে পারে পদবীর বিচার না করে।
প্রাচীনকালের ইতিহাস খুঁড়লে আমরা জানতে পারি, পাল রাজত্বকালে ভূমিকম্পর কারণে ধ্বংস হয়েছিল.. অজস্র বৌদ্ধস্তূপ। এইসব ধ্বংসাবশেষে চাপা পড়ে মৃত্যু ঘটেছিল অজস্র প্রাণ। পচা দুর্গন্ধএর কারনে মহামারী রোগে আক্রান্ত বাংলা। সেইসময় পশ্চিম থেকে আগত কিছু শ্রেণীর লোক এই ধ্বংসবশেষ সাফাই করার কাজে নিয়োজিত হয়। এই মহৎ কাজে তারা নিয়োজিত হয়েছিল বলে তাদের 'মহৎত্তর' বলা হত .. তারাই আজকে 'মেথর' বলে পরিচিত এবং তারা কী কারণে 'অচ্ছুৎ' তা নিশ্চয় পরিষ্কার বোঝা গেলো। ঠিক একই কারনে বর্তমান সময়ে 'করোনা' রোগ প্রতিহত করতে যাঁরা প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত .. তাঁরাই ক্রমাগত সমাজে 'অচ্ছুৎ' হয়ে পড়ছেন অর্থাৎ এই অচ্ছুৎ শ্রেণীই কিন্তু বর্তমানে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে সমাজ রক্ষার দায়ভার বহন করে চলেছেন। আজকের সমাজ ব্যবস্থা পূর্বকালের মতো শুচিগ্রস্থ হয়ে উঠছে .. ফলে সেবকশ্রেণী আবারও 'একঘরে অচ্ছুৎ' আর সমাজ পরিচালনার ভার এদেরই হাতে! বাকিরা তো গৃহবন্দী! করোনা আক্রান্ত রুগী সমেত কোভিড টিকা গবেষক, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, সাফাইকর্মী, খাদ্য সরবরাহকারী ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তথা করোনা রুখতে বিশ্বব্যাপী গ্রহণীয় সরকারি বেসরকারি পদক্ষেপ বা তাদের নির্দেশিত পথেই আজ সময় পরিচালিত হচ্ছে। অর্থাৎ সময় ক্রমশঃ শূদ্রশ্রেণীর অধীনস্ত। উল্লেখ্য যে এই অচ্ছুৎ শ্রেণী কোনো নিম্নবংশদ্ভুত নয়, সমাজের সেবার কাজে নিয়োজিত যারা তারাই আজ অশৌচের
লকডাউন-এর সুফল ও কুফল :
লকডাউনের ফলে সবচেয়ে উপকৃত হয়েছে প্রকৃতি, মানুষের অত্যাচারে প্রকৃতির ধ্বংসপ্রায় অবস্থা হঠাৎ প্রাণ খুঁজে পেল। সাময়িকভাবে দূষণ রোধ হওয়ার ফলে পৃথিবীর আবহাওয়ায় পরিবর্তন এলো। গাছ-গাছালি , পাখ-পাখালি, বন্য ও জলজ জীবজন্তুরা তাদের নিজেদের স্বাধীনতা ফিরে পেয়ে প্রকৃতিকে ভরিয়ে তুললো নতুনরূপে। বাতাসে দূষণ কমার ফলে অক্সিজেন বাড়লো, তাতে ক্রমাগত বর্দ্ধমান পৃথিবীর তাপমাত্রা রোধ হল। বৃষ্টির পরিমান বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে পৃথিবীর গাছ-গাছালি ও জলস্তর রক্ষা পেলো। এছাড়া, মানুষ তার জীবনধারণ-এর লক্ষ্যে ইঁদুরদৌড়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল, তার থেকে খানিকটা স্বস্তি খুঁজে পেয়ে নিজেকে জানতে সময় পেল। শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হল। সাময়িকভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ফলে পারিবারিক ক্ষেত্রে আপন জনের সান্নিধ্যে মানুষ পারিবারিক সুখ খুঁজে পেল। শুধু তাই নয়, নেট দুনিয়া মানুষের মধ্যে মেলবন্ধন গড়ে তুললো.. ফলে, দূর হল নিকট। নিজেদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশ করার সুযোগ কিছু স্তরের মানুষকে নতুনভাবে বাঁচতে শেখালো।
অন্যদিকে, লক ডাউনের কুফল হিসেবে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্থ হল দেশের অর্থনীতি ও শিক্ষাব্যবস্থা.. বাড়লো বেকারত্ব। যদিও এর প্রকোপ কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সামাজিক কার্যকলাপের নানাস্তরে বিঘ্ন ঘটলো। বেড়েছে মানসিক অস্থিরতা আর মানুষ হারিয়েছে অনেক প্রিয়জনকে। করোনার প্রকোপ কেড়েছে অনেক মূল্যবান প্রাণও।
সময়ের ধাপে ধাপে মানুষ যেমন হারায় অনেককিছু তেমনি সঞ্চয় হয় প্রচুর। করোনার প্রকোপ ও লকডাউন মানুষকে শিক্ষা দিয়েছে অনেকভাবে। মানুষ তার নঙর্থক দিকটাই শুধু দেখছে কিন্তু তার সদর্থক দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। বস্তুতঃপক্ষে অনিয়ম করে করে ক্লান্ত মানুষ নিয়ম পালনকে দাসত্ব মনে করছে। বিজ্ঞানের যুক্তি দিয়ে সেই পুরোনো দিনের শুচিতা পালনকে ব্যাখ্যা করা গেলেও কিছু লোক একে 'শূচিবাইগ্রস্থ' বলে মানতে রাজি নয়।
যাই হোক, শেষপর্যন্ত সেবা ও শুচিতা এই দুয়েরই জয় জয়কার অর্থাৎ এই দুয়ের পরিপ্রেক্ষিতে একশ্রেণীর মানুষ যোগ্য স্থান দখল করতে সক্ষম হয়েছে। ঠিক ঠিক পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে সমাজে কিছুটা হলেও সমানতা এসেছে। একে অপরের প্রয়োজনে এসেছে.. ধনী দরিদ্র সকলের জন্য সমান ব্যবস্থা তা প্রমান করে। ব্যবসাক্ষেত্রে অন্যান্য ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও চিকিৎসা, স্বাস্থ্য, সাফাই ..এর সামগ্রীর ব্যবসা লাভবান হয়েছে, চিকিৎসা শাস্ত্রে উন্নতি হয়েছে।পৃথিবীর উচ্চশীল দেশগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে এদেশেও কো-ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা হয়েছে .. সফলও হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা, পর্যবেক্ষন শেষে প্রয়োগও চলছে। এও তো এক ধরণের সাফাই অভিযান.. রোগ সাফাই !
লকডাউনের ফলে সবচেয়ে উপকৃত হয়েছে প্রকৃতি, মানুষের অত্যাচারে প্রকৃতির ধ্বংসপ্রায় অবস্থা হঠাৎ প্রাণ খুঁজে পেল। সাময়িকভাবে দূষণ রোধ হওয়ার ফলে পৃথিবীর আবহাওয়ায় পরিবর্তন এলো। গাছ-গাছালি , পাখ-পাখালি, বন্য ও জলজ জীবজন্তুরা তাদের নিজেদের স্বাধীনতা ফিরে পেয়ে প্রকৃতিকে ভরিয়ে তুললো নতুনরূপে। বাতাসে দূষণ কমার ফলে অক্সিজেন বাড়লো, তাতে ক্রমাগত বর্দ্ধমান পৃথিবীর তাপমাত্রা রোধ হল। বৃষ্টির পরিমান বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে পৃথিবীর গাছ-গাছালি ও জলস্তর রক্ষা পেলো। এছাড়া, মানুষ তার জীবনধারণ-এর লক্ষ্যে ইঁদুরদৌড়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল, তার থেকে খানিকটা স্বস্তি খুঁজে পেয়ে নিজেকে জানতে সময় পেল। শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হল। সাময়িকভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ফলে পারিবারিক ক্ষেত্রে আপন জনের সান্নিধ্যে মানুষ পারিবারিক সুখ খুঁজে পেল। শুধু তাই নয়, নেট দুনিয়া মানুষের মধ্যে মেলবন্ধন গড়ে তুললো.. ফলে, দূর হল নিকট। নিজেদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশ করার সুযোগ কিছু স্তরের মানুষকে নতুনভাবে বাঁচতে শেখালো।
অন্যদিকে, লক ডাউনের কুফল হিসেবে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্থ হল দেশের অর্থনীতি ও শিক্ষাব্যবস্থা.. বাড়লো বেকারত্ব। যদিও এর প্রকোপ কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সামাজিক কার্যকলাপের নানাস্তরে বিঘ্ন ঘটলো। বেড়েছে মানসিক অস্থিরতা আর মানুষ হারিয়েছে অনেক প্রিয়জনকে। করোনার প্রকোপ কেড়েছে অনেক মূল্যবান প্রাণও।
সময়ের ধাপে ধাপে মানুষ যেমন হারায় অনেককিছু তেমনি সঞ্চয় হয় প্রচুর। করোনার প্রকোপ ও লকডাউন মানুষকে শিক্ষা দিয়েছে অনেকভাবে। মানুষ তার নঙর্থক দিকটাই শুধু দেখছে কিন্তু তার সদর্থক দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। বস্তুতঃপক্ষে অনিয়ম করে করে ক্লান্ত মানুষ নিয়ম পালনকে দাসত্ব মনে করছে। বিজ্ঞানের যুক্তি দিয়ে সেই পুরোনো দিনের শুচিতা পালনকে ব্যাখ্যা করা গেলেও কিছু লোক একে 'শূচিবাইগ্রস্থ' বলে মানতে রাজি নয়।
যাই হোক, শেষপর্যন্ত সেবা ও শুচিতা এই দুয়েরই জয় জয়কার অর্থাৎ এই দুয়ের পরিপ্রেক্ষিতে একশ্রেণীর মানুষ যোগ্য স্থান দখল করতে সক্ষম হয়েছে। ঠিক ঠিক পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে সমাজে কিছুটা হলেও সমানতা এসেছে। একে অপরের প্রয়োজনে এসেছে.. ধনী দরিদ্র সকলের জন্য সমান ব্যবস্থা তা প্রমান করে। ব্যবসাক্ষেত্রে অন্যান্য ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও চিকিৎসা, স্বাস্থ্য, সাফাই ..এর সামগ্রীর ব্যবসা লাভবান হয়েছে, চিকিৎসা শাস্ত্রে উন্নতি হয়েছে।পৃথিবীর উচ্চশীল দেশগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে এদেশেও কো-ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা হয়েছে .. সফলও হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা, পর্যবেক্ষন শেষে প্রয়োগও চলছে। এও তো এক ধরণের সাফাই অভিযান.. রোগ সাফাই !
স্থায়িত্বকাল কতদিন তা বিবেচনাধীন নয় সমাজ যে ক্রমাগত সেবকশ্রেণীর অধীন হতে চলেছে তা বোঝা যায়। চাকরি ক্ষেত্রে কত শতাংশ সংরক্ষিত তা দেখা জরুরি নয়। সমাজব্যবস্থা যে ক্রমাগত এই অতি প্রয়োজনীয় মানুষদের কাছে নতিস্বীকার করে চলেছে সেটাই লক্ষ্যণীয়। এবং শুচি অশুচির প্রভেদে মানুষ আরো একবার সোচ্চার হয়ে উঠলেও শেষপর্যন্ত সকল শ্রেণীর মানুষ এক হয়েই করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করে জেতার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে আর এটাই হবে চতুর্থ বৃত্তির জয়!
কবির ভাষায় :
'সময়ের নিরীখে বাড়লো ঝাঁটা-ঝাড়ুর মান
সমাজের সমানতার নয়া অভ্যুত্থান।'
আবার অন্যভাবে..
"এসো হাত বাড়ায়, সেবা ও শুশ্রুষায়
মানুষ হয়ে মানুষের সহায়তায়"।
প্রথম ধাপে করোনার ঢেউ স্তিমিত হতেই মানুষ আবার সব নিয়ম জলাঞ্জলি দিয়ে মেতে উঠলো স্বাভাবিক জীবনে, মেতে উঠলো ভোট উৎসবে। সুতরাং করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে সময় লাগলো না। আর ভয়াবহ পরিস্থিতি ও মৃত্যু-আতঙ্ক বাধ্য করলো দেশে রাজ্যভিত্তিক লকডাউন ঘোষণা করার। এরই সাথে চললো টিকাকরণ ও নানান সরকারী প্রকল্প। ফলে লকডাউনের মিশ্রফল পরিলক্ষিত।
আসছে আবার তৃতীয় ঢেউ। তার আগেই অনেক জায়গায় শিশু আক্রান্তের ঘটনা সামনে আসছে। তবুও মানুষ সচেতন নয়। হয়তো আবার প্রয়োজন পড়বে লকডাউনের। কিন্তু লকডাউন করে কী সত্যিই করোনামুক্ত পৃথিবী ফিরিয়ে আনা সম্ভব? এ প্রশ্ন অনেকেই তুলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে লকডাউন করোনা তাড়াতে পারে নি ঠিকই কিন্তু আর গতি কমিয়ে আনতে পেরেছে। এর মাঝে কিছুটা সময় হাতে পাওয়া গেছে যে সময়কালে করোনার টিকা আবিষ্কার করা সম্ভবপর হলো। মানুষ যদি সচেতন হয় ও বিধিনিষেধগুলো মনেপ্রাণে গ্রহণ করে এবং হতাশ না হয়ে নিজেদেরকে সময়ের সাথে মানিয়ে নেয় তাহলেই করোনামুক্ত পৃথিবী শীঘ্র ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এর সাথে প্রয়োজন সকলের টিকাকরণ। সুতরাং 'সচেতনতা' হলো করোনা যুদ্ধের অন্যতম হাতিয়ার আর 'লকডাউন' তার রণক্ষেত্র।
কবির ভাষায় :
'সময়ের নিরীখে বাড়লো ঝাঁটা-ঝাড়ুর মান
সমাজের সমানতার নয়া অভ্যুত্থান।'
আবার অন্যভাবে..
"এসো হাত বাড়ায়, সেবা ও শুশ্রুষায়
মানুষ হয়ে মানুষের সহায়তায়"।
প্রথম ধাপে করোনার ঢেউ স্তিমিত হতেই মানুষ আবার সব নিয়ম জলাঞ্জলি দিয়ে মেতে উঠলো স্বাভাবিক জীবনে, মেতে উঠলো ভোট উৎসবে। সুতরাং করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে সময় লাগলো না। আর ভয়াবহ পরিস্থিতি ও মৃত্যু-আতঙ্ক বাধ্য করলো দেশে রাজ্যভিত্তিক লকডাউন ঘোষণা করার। এরই সাথে চললো টিকাকরণ ও নানান সরকারী প্রকল্প। ফলে লকডাউনের মিশ্রফল পরিলক্ষিত।
আসছে আবার তৃতীয় ঢেউ। তার আগেই অনেক জায়গায় শিশু আক্রান্তের ঘটনা সামনে আসছে। তবুও মানুষ সচেতন নয়। হয়তো আবার প্রয়োজন পড়বে লকডাউনের। কিন্তু লকডাউন করে কী সত্যিই করোনামুক্ত পৃথিবী ফিরিয়ে আনা সম্ভব? এ প্রশ্ন অনেকেই তুলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে লকডাউন করোনা তাড়াতে পারে নি ঠিকই কিন্তু আর গতি কমিয়ে আনতে পেরেছে। এর মাঝে কিছুটা সময় হাতে পাওয়া গেছে যে সময়কালে করোনার টিকা আবিষ্কার করা সম্ভবপর হলো। মানুষ যদি সচেতন হয় ও বিধিনিষেধগুলো মনেপ্রাণে গ্রহণ করে এবং হতাশ না হয়ে নিজেদেরকে সময়ের সাথে মানিয়ে নেয় তাহলেই করোনামুক্ত পৃথিবী শীঘ্র ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এর সাথে প্রয়োজন সকলের টিকাকরণ। সুতরাং 'সচেতনতা' হলো করোনা যুদ্ধের অন্যতম হাতিয়ার আর 'লকডাউন' তার রণক্ষেত্র।
ধন্যবাদ সম্পাদক মহোদয়, লেখাটি প্রকাশ করার জন্য। শুভেচ্ছা রইলো সকল লেখক ও পাঠকবৃন্দের প্রতি।
উত্তরমুছুন-- রীতা রায় (মালদা )
সামাজিক নবিকরণ এর ধারণা বেশ ভালো লাগলো।
উত্তরমুছুন