ঝড় এসেছিল===================ভীষণ গরমে জেরবার,কোথাও গরম হাওয়া, কোথাও বা ঝরছে ঘামবৈশাখের তপ্ত মাটিতে মন থেকে বলে উঠিএকটা ঝড় চাই, আজ বা কাল,কেটে যায় দিন, বয় ঝোড়ো হাওয়ামন বলে, এই বুঝি এল, পাগলাঝোরাআসব আসব করেও, আসে না সেই দিনরাত কেটে যায়, দক্ষিণের বাতাসে অতৃপ্তির ছোঁয়া,চৈত্রের আকাশেও ছিল না এতটুকু মেঘভুল করে এসে গেলে , বাতাসে ছোঁ মেরেনিয়ে গেল ,দূরে কালো পাথরের পাহাড়েহাসতে হাসতে ঠান্ডা বাতাস এসেছিল, তারপরে,এমনি করেই একদিন ঝড় এসেছিলপশ্চিমের আকাশে মেঘ জমেছিল ,মুহূর্তে পাগল বাতাস উড়িয়ে নিয়ে গেলধুলোবালি , শুকনো পাতা যত জমেছিল ,আর, নিয়ে এসেছিল সবুজ কিছু ইচ্ছেবুকের ভেতরে বরফ কুচি গলে জল।
বিপ্লব একটি ঝড়ের নাম===================ঝড়ের নাম কত রকম হয়কখনও কি বিপ্লব বলে ডাকব!যে নামেই হোক না ডাকা,ঝোড়ো হাওয়ায় ওলটপালট হয়েশহর থেকে গ্রামের জীবন শ্মশান করে দেয়,গাছ উপড়ে, চাল উড়িয়ে, বাঁধ ভেঙে, তছনছডুবে যায় পাকা ফসল , বাড়ি, জমি, খামারভেঙে যায় রাস্তা যত, মানুষের সর্বনাশঅর্দ্ধনগ্ন মানুষগুলোর গামছাখানি থাকেঝড়ের উপর আসলে ঝড়, শুধুই সুতো জড়ায় ,যত ধুলোবালি আর পুরোনো হিসেব নিকেশধুয়েমুছে দিয়ে সব, বলে, নতুনের বার্তা আনে !ভুল! কিছু থেকে যায়, ছুড়ে ফেলার কথা ছিল,যত বারই আসে ঝড়, সংখ্যায় ওরা বাড়ে,শুনেছি, অসুরের মৃত্যু হয় না, রক্তে বাঁচে বীজ !দুঃখের বিষয়, ওদের হাতেই শাসন তন্ত্র চলেসুযোগ পেলে পকেট ওদের ফুলে ফেঁপে ওঠে ,শীর্ণ হতে আরও শীর্ণ, মাটির দীন মানুষগুলো!আমি সেই ঝড় হতে চাই, বিপ্লব নাম যারএমন প্রচন্ড, গোড়া ধরে ছুড়ে ফেলার ক্ষমতাসব হারানো মানুষগুলো ,যেন বাঁচে মনের মত,সর্বভূক দালালেরা মুছে যাক, সর্বস্বান্ত হোকনিঃস্ব হয়ে থাকার জ্বালা, বুঝুক কেমন লাগেঅপরের গ্রাস কেড়ে নেওয়ার, সঠিক শিক্ষা পাবে।
সবাইকে শ্রমিক বলি কি করে===================কে শ্রমিক? শ্রম যে করে?তাহলে সবাই শ্রমিক, লাঙল কাঁধে কিম্বা কলম হাতে ,খালি পায়ে বা বুট জুতো পরেআদুল গায়ে বা কোট প্যান্ট পরে,যে যার কাজের দায়িত্ব পালন করে ,যে যার পারিশ্রমিক পায়,মাস হিসেবে বা ঘন্টা প্রতি ,সত্যিই কি তাই?কোথাও গরমিল মনে হয়,যে পাথর কাটে, জিজ্ঞেস করে দেখোওর বাপ, মাও কাটতো পাথরআজ ও, ওর ভাই , বোন সবাই পাথর কাটে,ভাগ চাষীটা গত একশ বছর ধরে ফলায় ফসল,যে রাস্তা তৈরি করে , আগে ছিল ঠিকে কাজেআজ ছিন্ন মূল, খাতায় নাম লিখিয়েছে ,হাইরাইজ গুলোতে ওরাই তো কাজ করেওদের ঘামে ভেজা ইঁট, বালি, পাথরেকত রক্ত মিশে থাকে, তবু শহীদের মর্যাদা কি পেয়েছে!তাজমহলের সামনে শহীদ বেদী তো দেখিনিতেমনি দেখিনি কোনও ইমারত বা স্থাপত্যের পাশে,ওরা চিরকাল ব্রাত্য, নিজেদের কাছে সমাজের কাছেপথে হাঁটি, গাড়ি চালাই আমরাআয়েশ, আরাম উপভোগ করি ,আনন্দ করিঅর্থের বিনিময়ে,একবার কি ভাবি, কার পরিশ্রমের ফসলকি করে নিজেদেরও শ্রমিক বলি?তবে ওদের কি বলি?শ্রমিক তারাও, যাদের মাটির সাথে যোগাযোগযারা বংশ পরম্পরায় অন্যের গোলামী করেযাদের মৃত্যুতে কোন হেলদোল হয় নাএতটাই সাধারণ যে, গাড়ির নীচে পিষে দিলেওনেশাখোর চালকের কিছু হয় না !ওদের অবস্থার জন্য দায়ী কি আমরা নই?আমাদের শাসন, শাসক, বিচার , রীতিনীতি ,নিজেদের ভাবি শ্রমিক, করি আন্দোলনআমাদের জন্য, আরও ভাল থাকার জন্য ,অনুচিত নয়, তবে এ আন্দোলন কি 'শ্র মি কে র' !ভুলে যাই ওদের কথা, যারা দিন আনে দিন খায়এক একটা স্বার্থপর ? কি করে?কোথায় হারিয়ে গেছে মুষ্টিবদ্ধ হাত?যেদিন ওদের, শুধু ওদের জন্যওদের একশ বছরের পাওনা আদায়ের জন্যআমরা আন্দোলনের ডাক দেবকোন এক বৈশাখের তপ্ত দুপুরে,আমাদের অংশের ভাগ দেব নির্দ্বিধায় ,সাম্যতার পথে হাঁটব একসাথে, হাতে হাতসেদিন বলব, মে দিবসটা ক্যালেন্ডারে আজও মানায়ওই দিনটিকে সত্যি বলে জানব।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন