অন্যমনে সাহিত্য. অন্য রকম দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একটি প্রতিবিম্ব ভাবনা .. অন্যমনে সাহিত্য.

শনিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২২

কবিতায় সবুজ

 

 

 


অভিমান                                                               
===================
অনিমিতা, আমাদের মন পোড়ার গন্ধ ছড়িয়ে আছে ড্রইংরুম থেকে শোবার ঘরে...

অথচ আনন্দ ভাগ করে নেওয়া স্বজনরা কেউ টের পাচ্ছে না।


আমি, অপ্রেম আর আড়াআড়ি বিভাজিত তোমায় ও প্রান্তে রেখে

শুধুই বিস্ফোরক মজুত করছি আমার ভেতর!

কোন অছিলায় ফেটে পড়ব পোড়া বোশেখ শেষে

অবশ্যই....

একদিন....


রাত গভীর হলে চাঁদে ভেজা স্বর্নচাঁপা ঝরে পড়ে সবুজকলি ঘাসে

অসময়োচিত সে মেঘ আর বৃষ্টিতে আটপৌর এ শহর ভিজতে চায়

আমাদের আবেগী মান্না'কে সুলোলিত ঝরে পড়তে দিলে ভালবেসে

তোমার শব্দভেদী পায়ের পাতায় উঠে আসতে পারে স্বর্গীয় অনুভূতি

তারপরও যে অসহনীয়তা বেঁচে থাকে সে বিভাজক।


অসমঝোতার প্রশ্রয়ের প্রতিটি সকালে পুরুষ আর নারীর সম্পর্কের জটিল রসায়ন

আলোর কুলকুচি মুখ হাত বেয়ে ফোঁটা ফোঁটা নামে অভিমান

একবার বলবে অনেক অক্ষর খরচ করার পরও অভিমানের প্রাপ্তিযোগ কি?


অনিমিতা, তাই অক্ষরের আদিখেতা ছেড়ে এসো দু'হাতে সোহাগ মাখি

দেখবে অগাধ চাহিদা চোখে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে সংসার

আর এক পেট খিদে নিয়ে আমাদের স্বভাবসিদ্ধ বালখিল‍্যের উপাস‍্য,

আমাকে খেতে দাও।




আদি
===================


মায়ানিবিড় বুকের পাশাপাশি বৃষ্টিহীন যথেষ্ট উঠোন....

অপত্যস্নেহরা দুধেভাতে চিরহরিৎ সুরক্ষিত সামাজিক দৃষ্টিকোণ।



প্রেম-গল্পছানাদের ঘুমে নূজ্ব্য যিশু সেলাইজোড়া জুতো হাতে

আত্মজবাঞ্ছা কল্পতরু বাড়ি ফেরে গভীর রাতে।



সময়ের সাথে আদির প্রতিষ্ঠা মিয়িয়ে যায় রক্তঠোঁটে

বটের ঝুরিরা ঠেসমূল হয়ে ওঠে আত্মনির্ভর ওভারকোটে।





বান্ধবী
===================


একটা বীজ অঙ্কুরিত হলে সে শুধুই একটা গাছ হয়ে থেকে যায় না...

নিসর্গ ছায়ায় সবুজ শ্রীকবিতারা সারি বেধেঁ বুকে জংলা আবেগ নিয়ে

আর কোমরে বাকল জড়িয়ে তৃপ্তির মহুল গহীনে ডুব সাঁতার কাটে।



কিছু রোদ ছ্যাঁকাপোড়া ম্লেচ্ছ্ব কালোমানুষ ক্যাকটাস্ পাশ কাটিয়ে

স্নেহভাজন ছায়ার ভেতর পা রাখে ল্যাটাারইট পাহাড় দেশে চোখে পড়ে

আহা! বেচারা সব কটার পাথরের পাঁজরে অন্তোদ্বয় আজন্ম অধিবাস।



প্রবাদ প্রবচন ঠোঁটে গেঁথে পায়ে কুড়াল মারার করিতকর্মা একজন

পেলব ছায়া মাধুরী অপরিহার্য অক্সিজেনের স্থিতিশীলতা মেপে নিয়ে

আমার সে পরিবেশ বান্ধবীকে আদিম হিংস্রতা দেখিয়ে যায় বারবার...



এরপরেও এই বাঁজা পৃথিবীর একমাত্র সন্তান সম্ভবা আমার বান্ধবী

গর্ভধানে অনুভূতিশীল...পোড়া মাটিতে শেকড় নামার প্রসব বেদনা

মানুষের শরীরে জন্ম নেয় গাছের নাক, মুখ... আই ভি এফ্ মানবিক।






নীলাচলের সৈকতে.....
===================

প্রতিদিন অনিন্দ্য নীলশরীরে আবহমান স্রোতের ঢল.....

দুপুর হাত পা ছড়িয়ে রোদ মেখে নিলে

বালিশিল্প কথার পাটাতনে ঝরে পড়ে বিলাসী স্বপ্নবীজ

আর এক আকাশ তারার হিল্লোল....

সংখ্যার কারসাজি বা রঙের তত্ত্বকথা ধরতে পারলে

কোন দ্বিমত নেই, নিশ্চিত, তুমি মুহূর্তের ঈশ্বর হতে পার!



তুমিও এলে দেখতে পাবে

ভেজা বালিতে ছড়িয়ে পড়া ঝকঝকে দুধ ঝর্ণা মেখে

গরমে অসহনীয় হয়ে ওঠা শৌখিন পানকৌড়িরা

মাথা নীচু করে লেজ তুলে উল্টে পড়ছে জলে

না, এ কোন বিসর্জন নয়

বরং আগুনে দিলখুশ ঘিয়ের ইচ্ছাধীন সমর্পণ

এটুকুইতো জীবন.....

বাকিটা জীবনের মত, আগাছা।

 

 



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন