মহিমা
================
বিশাল ভক্তদের সামনে দাঁড়িয়ে সাধু রঙ্গনাথ। দুষ্মন্তের দৃষ্টি পড়ল সাধু রঙ্গনাথের উপর। সে বাকরহিত হয়ে গেল। কনকনে শীতেও তার সারা শরীর ঘামে ভিজে গেল। সে টলতে টলতে ঘরের মধ্যে ঢুকে গেল। তখন বাইরে ভক্তদের চিৎকার- হর হর মহাদেব।
হরিচরণ দুষ্মন্তের চেলা। সে বলল, বাবার ভর হয়েছে। অপেক্ষা কর। তিনি ঠিক সময় দর্শন দেবেন।
সাধু রঙ্গনাথ দুষ্মন্তের ঘরে ঢুকলেন। দুষ্মন্ত সাধুর পায়ে পড়ে বলে, বাবা এ ছাড়া যে উপায় ছিল না। আখড়ার টাকা চুরি করে পালিয়ে এসেছিলাম। তার সব টাকাতেও ঋণ শোধ শোধ হল না। মেয়েটা না খেতে পেয়ে মারা গেল।
দুষ্মন্ত কান্নায় ভেঙে পড়ল। সাধু দুষ্মন্তের মাথায় হাত রেখে বললেন, স্থির হও।
-আমার স্ত্রী যক্ষায় ভুগছে। ওষুধ দিতে না পারলে মরে যাবে।
এমন সময় দুষ্মন্তের স্ত্রী ছুটে এসে সাধুর পা দুটি জড়িয়ে ধরে কেঁদে বুক ভাসাল।
সাধু দুষ্মন্তের বউয়ের মুখ তুলে ধরলেন।তিনি আঁতকে উঠলেন। সামনে যেন মূর্তিমান কঙ্কাল।
- বাবা ওর কোন দোষ নেই। কাজ যে করবে গতর নেই। ব্যবসা যে করবে তার অর্থ নেই।ধর্মের থেকে আর বড় সহায় কী হতে পারে।
সাধুর চোখে কৌতূহল।
দুষ্মন্ত বলে, কালীঘাট থেকে শিবলিঙ্গ বয়ে আনা সে কি কম কথা! তারপর ঝড় জলের রাতে মাথায় করে তিন মাইল দূর রাশু চক্কোত্তির প্রতিষ্ঠা পুকুরের মাঝখানে ডুবিয়ে রাখা...
দুষ্মন্ত হাপাতে লাগল।
দুষ্মন্তের বোউ বলল,তারপর স্বপ্নাদেশের প্রচার ...
সাধু হেসে বললেন, ঠাকুরের মহিমা...
দুষ্মন্তের বউ বলে, মেয়েটা মরেছে।আমিও মরব।ঠাকুর যেন ওর কোন অনিষ্ট না করেন।
দুষ্মন্ত কেঁদে বলে, বাবা, আমি পাপ করেছি।
সাধু দুষ্মন্তের কাঁধে হাত রেখে বললেন, এ কোনো পাপ নয়।এ ও ঈশ্বরের ইচ্ছা।তোমরাও বাঁচবে, ঈশ্বর ও বাঁচবেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন