গৌড় নগরীর উপকন্ঠে ছিল মস্ত বড় একটা দীঘি । সেই দীঘির নাম ছিল পদ্মদীঘি। দীঘিতে ফুটে থাকত রাশি রাশি পদ্ম ফুল। শরৎকালে দীঘি জুড়ে যেন ফুলের মেলা বসত।এই দীঘির সব থেকে বড় আকর্ষণ এর বিষয় ছিল দীঘির মাঝ বরাবর ফুটে থাকা নীল ও হলুদ পদ্মরা । সাদা,লাল বা গোলাপীরা ঘিরে থাকতো এদের।
এই পদ্মদীঘির জল ছিল আয়নার মত স্বচ্ছ। মেঘেরা এসে তাদের চেহারা দেখে যেত এর জলে। দীঘিটা অনেক গভীর হওয়ায় জলের রং দেখাত নীল।
এই পদ্মদীঘির জল ছিল আয়নার মত স্বচ্ছ। মেঘেরা এসে তাদের চেহারা দেখে যেত এর জলে। দীঘিটা অনেক গভীর হওয়ায় জলের রং দেখাত নীল।
দীঘির জলের গভীর প্রদেশে পরীদের রাজ্য । রাজ্যের উত্তরে পরীরানী নীলাক্ষীর প্রাসাদ। রানীর ছিল দুই মেয়ে_ মৌরি আর সৌরি। মৌরি ছিল সুন্দরী, ফর্সা পরী পরী চেহারার তাই তার মা তাকে বেশি ভালোবাসতো। কিন্তু রাজ্যের খুব কম লোকই তাকে পছন্দ করত কারণ সে ছিল হিংসুটে ও ঝগরুটে স্বভাবের। তারা পছন্দ করত ছোট রাজকুমারী সৌরিকে । বাবার মতো কালো চেহারা আর কোমল স্বভাবা সৌরি ছিল তাদের প্রাণ। সৌরি সবসময় চেষ্টা করত মা এর মন যুগিয়ে চলার। সে তার কোমল স্বভাব ও মিষ্টি ব্যবহার দিয়ে দিদি মৌরি র মন পেতে চাইত আর পরিবর্তে পেত লাঞ্ছনা গঞ্জনা অপমান। এইভাবেই কাটছিল দিনগুলো।
এরইমধ্যে একদিন খবর আসে যে তাদের বন্ধু তথা আত্মীয়া হুরী পরীর দিদির বিয়ে ঠিক হয়েছে। বিয়ের এখনো একমাস দেরী আছে , তার আগে 'লোকসমাগম' উৎসব হবে ওদের বাড়িতে। সেই উপলক্ষে সৌরিদের সবার নেমতন্ন হুরী দের বাড়িতে । যথাসময়ে সেজে গুজে সকলে গিয়ে উপস্থিত হল সেখানে। সবার সাথে গল্পগুজব এর সময় গায়ের রং নিয়ে সৌরিকে যাচ্ছেতাই ভাবে অপমান করে মৌরি। মনের দুঃখে অনুষ্ঠান বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসে সৌরি। সাঁতরে জলের উপরে উঠে আসে সৌরি।
দীঘির উপরে ওঠা পরীদের জন্য নিষিদ্ধ। কেননা দীঘির পাড়ে কখনো কখনো মানুষ নামের এক ধরনের বুদ্ধিমান প্রাণী দেখা যায়। এদেরকে ভয় করে পরীরা। কিন্তু মনের দুঃখে সব ভুলে সৌরি জলের উপরে মুখ তোলে। পৃথিবীর রূপ সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে যায় আর পদ্মফুল কেড়ে নেয় মন। এত সুন্দর ফুল জীবনে কখনো দেখেনি সৌরি।
দীঘির উপরে ওঠা পরীদের জন্য নিষিদ্ধ। কেননা দীঘির পাড়ে কখনো কখনো মানুষ নামের এক ধরনের বুদ্ধিমান প্রাণী দেখা যায়। এদেরকে ভয় করে পরীরা। কিন্তু মনের দুঃখে সব ভুলে সৌরি জলের উপরে মুখ তোলে। পৃথিবীর রূপ সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে যায় আর পদ্মফুল কেড়ে নেয় মন। এত সুন্দর ফুল জীবনে কখনো দেখেনি সৌরি।
সাঁতরে চলে যায় হলুদ-নীল পদ্মদের কাছে। তারপর চড়ে বসে পদ্মপাতার ওপরে। ফুলেরা ও খুব খুশি হয়ে ওঠে এই ছোট্ট পরীকে পেয়ে। অল্পক্ষণেই ফুলেদের সাথে সৌরির বন্ধুত্ব হয়ে যায়। সারাটা দিন কীভাবে কেটে যায় বুঝতেই পারেনা সৌরি। একসময় সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে। ফুলেদের রানী সৌরিকে তার বাড়িতে ফিরে যেতে বলে। সৌরি ফিরে আসে তাদের প্রাসাদে। দীঘির উপরে ওর যাওয়ার কথা কাউকে জানায় না। সারাক্ষণ অপেক্ষা করতে থাকে সকাল হওয়ার। সকাল হতেই সৌরি আবার চলে আসে জলের উপরে। সারাদিন কেটে যায় হাঁসি গানে খেলায়। সন্ধ্যায় পেটপুরে পদ্মমধু খেয়ে সৌরি ফিরে আসে । এইভাবেই কেটে যায় বেশ কয়েকটি দিন একদিন সৌরি পদ্মবনে এসে মুখ ভার করে বসে থাকে। পদ্মরানী তাকে মন খারাপের কারণ জিজ্ঞাসা করলে ওর দুচোখ জলে ভরে ওঠে। একে একে সে বলতে থাকে ওর চেহারা আর গায়ের রং নিয়ে ওকে করা লাঞ্ছনার কথা। পদ্মারানীর খুব দুঃখ হয় ওর জন্য। রানী ওকে পরদিন আবার আসতে বলে ওকে।
পরদিন সৌরি আবার পদ্মবনে গেলে রানীমা ওর হাতে ধরিয়ে দেয় পদ্মপাতায় মোড়ানো দুইরকমের ক্রিম। একটার রং নীল আর একটা লাল । আর বলে দেয় কীভাবে ব্যবহার করতে হবে।
পরদিন নীল আর হলুদ পদ্মরা তাকে জানায় আর দুই এক দিনের মধ্যেই তারা বিদায় নেবে এবছরের জন্য, আবার আসবে একবছর পরে। কিন্তু সৌরির জন্য রেখে যাবে লাল আর গোলাপী পদ্মদের। সৌরি তার প্রিয় পদ্মদিদিদের থেকে বিদায় নেয়। একরাশ মনখারাপ নিয়ে ফিরে আসে নিজেদের প্রাসাদে । সেদিন রাত্রি থেকে সৌরি পদ্মরানী র দেওয়া ক্রিম ব্যবহার করতে শুরু করে। আর ঘরের বাইরে বেরানোও বন্ধ করে দেয়। এরই মধ্যে কেটে যায় পনেরোটা দিন। এসে পড়ে হুরী পরীর দিদির বিয়ে।
পরদিন নীল আর হলুদ পদ্মরা তাকে জানায় আর দুই এক দিনের মধ্যেই তারা বিদায় নেবে এবছরের জন্য, আবার আসবে একবছর পরে। কিন্তু সৌরির জন্য রেখে যাবে লাল আর গোলাপী পদ্মদের। সৌরি তার প্রিয় পদ্মদিদিদের থেকে বিদায় নেয়। একরাশ মনখারাপ নিয়ে ফিরে আসে নিজেদের প্রাসাদে । সেদিন রাত্রি থেকে সৌরি পদ্মরানী র দেওয়া ক্রিম ব্যবহার করতে শুরু করে। আর ঘরের বাইরে বেরানোও বন্ধ করে দেয়। এরই মধ্যে কেটে যায় পনেরোটা দিন। এসে পড়ে হুরী পরীর দিদির বিয়ে।
সকাল থেকেই প্রাসাদে তোরজোড় পরে যায় বিয়ে বাড়িতে যাওয়া নিয়ে। দুপুরের আগেই প্রাসাদ দরজায় এসে দাঁড়ায় সুসজ্জিত রাজকীয় শটকজান । পরীরানী তাঁর প্রিয় মেয়ে মৌরিকে নিয়ে উঠে বসে গাড়িতে, ভুলেই যায় সৌরির কথা। এদিকে সৌরিও সাধারণ সাজগোজ করে তাড়াতাড়ি করে আসে বিয়ে বাড়িতে যাবে বলে। এসে দেখে মা তাকে না নিয়েই চলে গেছে। খুব মন খারাপ হয়ে যায় ওর। কিন্তু একটু পর চারিদিকে তাকিয়ে যখন দেখে প্রাসাদের লোকেরা অবাক-বিষ্ময় নিয়ে মুগ্ধ দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে, সমস্ত মন খারাপ সরে গিয়ে কোমল আনন্দে ভরে ওঠে মন। পদ্মদের রানীকে মনে মনে কৃতজ্ঞতা জানায় সৌরি। পদ্মারানীর কৃপায় ততদিনে সে যে হয়ে উঠেছে পরী রাজ্যের অন্যতম সেরা সুন্দরী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন