কুট্টুসের বঙ্গলিপি খাতা
*************************
তনিমা হাজরা
*************************
ব্যাঙেদের ভোকাবুলারিতে " ভালবাসা" শব্দটা আছে কিনা জানিনা তবে আমি কিন্তু বহু গোদা হুমদো কোলাব্যাঙকে বহুবার ছিপছিপে সোনাব্যাঙদের পিছু ধাওয়া করতে দেখেছি। পিছু ধাওয়া করাটা বড় কথা নয় বেশ গ্যাঁঙর গ্যাঁঙ করে অনুনয় করতেও শুনেছি।
ছোটবেলায় পিসিমণির বাড়ির বাঁধানো পুকুরঘাটে বহু দুপুর আমি কাটিয়েছি ওদের সাথে। মনে আছে একবার একটা ছুটকো দুষ্টু সবুজ রঙের শিশুব্যাঙ কি নাকানিচোবানিটাই না খাইয়েছিল ওর মোটাসোটা ছাপাশাড়িপরা জেঠিমা কুনোব্যাঙকে। বোধহয় কিছুতেই খেতে চাইছিল না। চঞ্চল ছেলে কিনা! তবে জেঠিমাও ভারি নাছোড় সারাদুপুর দুজনায় সারাপুকুর সেকি দৌড়ঝাঁপ। আর আমি দিব্যি বসে বসে দেখলাম সেই স্নেহশীলা জেঠিব্যাঙের অনুপম ভালবাসা।
যারা ব্যাঙেদের ব্যঙ্গ করে, ঢিল ছুঁড়ে অযথা উস্তাড়না করে সেসব দুষ্টু ছেলেদের দলে আমি নই।
আমি খুব নির্বিকার গোছের। সকালে না ডাকতেই ঘুম থেকে উঠি।হাত মুখ ধুয়ে দুধবিস্কুট খেয়ে চুপচাপ পড়তে বসে যাই একেবারে বর্ণপরিচয়ের গোপালের মতো। লোকে আমাকে অবশ্য ক্যাবলা বলে তবে তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমার লাভের মধ্যে লাভ মানুষদের আমি একটু এড়িয়েই চলি কিন্তু এইসব ব্যাঙ, আরশোলা, কাঠবেরালি, চড়ুই, বেড়াল এদের সাথে আমার ভারি দোস্তি।
এরা মাঝেসাঝেই কাজের ফাঁকেফোকরে এসে আমাকে কুশল জানিয়ে যায়।
এদের মধ্যে এখনো হিংসা,ঘৃণা,লোভ এগুলো নেই।এদের জগতে আমি বেশ আছি। এদের সাথে বন্ধুত্বে বেশ কেটে যায় আমার সময়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন