অন্যমনে সাহিত্য. অন্য রকম দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একটি প্রতিবিম্ব ভাবনা .. অন্যমনে সাহিত্য.
রবিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২০
বাড়ির ছোট ছেলে
বাড়ির ছোট ছেলে
*************************
বহ্নিশিখা
*************************
আরো খানিকটা অপেক্ষা করতে হবে।
রান্ন ঘরের পিছনে কামরাঙা গাছের মাথায় ঝোপরা ডগার দিকে বার বার তাকায় দেবলাল । দক্ষিনের দোচালার দাওয়ায় বসে গরুর নাড়া ভাজ করছিল। গোধূলির লালচে আভা তখনো কাটেনি । তার খড় কাটা শেষ প্রায়।
বাড়ির সবাই এখন বৈকালিক বিশ্রামে ব্যস্ত। ভাত ঘুমও বলা যায়। ঠাকুমা ঘুমায়নি। সে ভেতর দাঁতে কটমট করে।বুড়ি ঘুমায় না ক্যান? তার ইচ্ছে করে খড়কাটা কাস্তেটা পেটে সেঁদিয়ে দেয়।
আস্তে আস্তে কামরাঙার পাতাগুলো কালচে হয়ে আসে। পশ্চিমদিকের ঘরে দাদু আর ঠাকুমা ঘুমায়। সে বারান্দায় দাঁড়িয়ে শুনছে ভস ভস দাদুর নাক ডাকা। অপেক্ষা করছে দ্বিতীয় নাকের শব্দের।একটু পরেই শুনতে পেলো গোঙানোর মতো । সে আর দেরি না করল না।
গোলাঘরের খিল শিকল খুলে গুছিয়ে রাখা পোটলাটা নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যেতেই কপাটে লেগে পড়ে গেলো। সজাগ হয়ে যায় ঠাকুমা । সে দৌড়ে কামরাঙা গাছের নীচ দিয়ে ধানক্ষেতে মিলিয়ে যায়। ঠাকুমার চেঁচামেচিতে সবার ঘুম ভাঙলেও দেবলালের দ্বিতীয় স্বত্তাকে খোঁজে পায় না।
ধান খেত পেরিয়ে জব্বরদের বাড়ি। তারপর কমলাদের বাড়ি। অপেক্ষা করছিল কমলা। তার ডান হাতে পুটলা দিয়ে বাম হাত থেকে কিছু নিয়ে চলে গেল।
কিছুদূর যেতে পথে পথের বাম পাশে জাম গাছের নীচে দাঁড়ালো। বারো তেরো বছরের ছেলেটি। চারপাশে দেখে নিয়ে ওখানেই পরে নেয় হাতে রাখা ময়লা পেন্ট-শার্ট। দু'হাত পানার লুংগিটা জামার নীচে পেট বরাবর পেঁচিয়ে শার্টের বোতাম লাগায়। একটা খাতা গুজে দেয় পাছা আর পিঠের খাজেঁ প্যান্টের ভেতর দিয়ে। তারপর ঝাড়া হাত পা।
ততক্ষণে সিনেমা শুরু হয়ে গেছে। তার জন্য টিকিট রেখে দেয় আরিফ। বিনিময়ে গোল্ড লিফ সিগারেট পায়।
সবাই জানে বন্ধুর বাড়ি পড়তে যায় এ বাড়ির ছোট ছেলে দেবলাল।
ধরা পড়ার ত্রিশ বছর পর অন্য এক দেবলাল। শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন