অন্যমনে সাহিত্য. অন্য রকম দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একটি প্রতিবিম্ব ভাবনা .. অন্যমনে সাহিত্য.
রবিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২০
রাজকন্যার খেলনা
রাজকন্যার খেলনা
***********************
মনসুর আলী গাজী
***********************
স্বর্ণদেশের রাজকন্যার নাম গুনগুন। বয়স ছ’বছর। গুনগুন, এই নামটা তার ডাকনাম। রাজা প্রভাসগুপ্ত সখ করে মেয়ের এ নামটি দিয়েছেন। রাজার মেয়ে। তাই সব জায়গায় ভারি আদর তার।
তো এই রাজার মেয়ের ছিল একখানা মহামূল্যবান খেলনা। একটা ছোট্ট হাতি। একেবারে খাঁটি হীরের তৈরি। এক যোগীপুরুষ রাজকন্যাকে এই জিনিসটি উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। আর বলে দিয়েছিলেন, এটা নাকি রাজকন্যার ভারি সৌভাগ্য নিয়ে আসবে। এমনকি যে রাক্ষসকুল মাঝেমাঝে রাজার রাজ্য আক্রমণ করে সেই রাক্ষসকুলকে নাকি এই জিনিসটার মহিমায় স্বয়ং রাজকন্যা একদিন ধ্বংস করে দিতে পারবে।
রাজা তাই খেলনাটিকে খুব যত্নে রাখতেন। মেয়ের ওটা নিয়ে খেলা সাঙ্গ হলে উনি নিজহাতে ওটাকে আবার সিন্দুকে তুলে রাখতেন।
এদিকে রাক্ষসরাজ অগ্নিশর্মা এ ব্যাপারটা জানতেন। তাই সে তা সহ্য করতে পারত না। অগ্নিশর্মা সেনাপতিকে আদেশ দিলেন গুপ্তচর মোতায়েন করতে। তারা গিয়ে রাজকন্যার ওই হীরের আংটিখানি চুপি চুপি চুরি করে নিয়ে চলে আসবে।
চারজন রাক্ষসের একটা ক্ষুদ্র গুপ্তচর বাহিনী তৈরি হলো।
তারা গভীর রাতে মায়াবলে রাজকন্যার ঘরের দেওয়াল ভেদ করে তার শোবার ঘরে ঢুকে গেল।
আগুনের বাণ দিয়ে বিছানায় গাঢ় নিদ্রায় মগ্ন রাজকন্যা গুনগুনের মাথার দিকে থাকা সেই সিন্দুক ভাঙল। তারপর তাদের মধ্যে এক রাক্ষস সেই হীরের খেলনা হাতিটাকে হাত দিয়ে ধরতে গেল।
ঘটে গেল অবাক কান্ড!
যেই হাতিটার গায়ে হাত ছুঁইয়েছে সেই রাক্ষস অমনি হাতিটা থেকে মেঘের বিদ্যুৎ তৈরি হয়ে চার রাক্ষসের গায়ে লেগে গেল। চারজন পুড়ে ছাই হয়ে গেল। কিন্তু ছাইগুলো মেঝেতে পড়ল না। রাক্ষসগুলো হয়ে গেল এক-একটা ছাইয়ের মূর্তি।
সকালে প্রাসাদের সবাই তা দেখে যেমন বিস্মিত হলো তেমন শঙ্কিতও হলো। কেউ কিচ্ছুটি বুঝে উঠতে পারল না।
অল্পক্ষণের মধ্যে সেই যোগীপুরুষ প্রাসাদে আবির্ভূত হলেন। এসে বললেন, ‘কাল রাতে চারজন রাক্ষস এসেছিল।রাজকন্যাকে আমার উপহার দেওয়া এই হীরের খেলনা হাতিটা চুরি করতে। আমি ধ্যানবলে সব দেখতে পেয়ে বিদ্যুতের মায়াবাণ ছাড়ালাম। তাতেই সব পুড়ে ছাইমূর্তি হয়ে গেল। এই সেই চারজন। এখন ছাইয়ের মূর্তি হয়ে এই দাঁড়িয়ে রয়েছে।‘
রাজা তখন যোগীপুরুষকে নতশিরে প্রণাম করলেন। সাথে রাজকন্যাও। আর ওদের সাথে প্রাসাদে উপস্থিত সবাই।
রাক্ষসকুলকে তাহলে রাজকন্যা একদিন বিনাশ করতে পারবে! রাজা আশ্বস্ত হলেন।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন