=======================
চোখের শিকল : রূপান্তর রহস্য
=======================
এই যে তুমি, রান্নাঘরের দক্ষিণ জানালা দিয়ে ঠিকরে পড়ে আলো; তোমার চোখে-
কাঁধে আর কোমরের ভাঁজে এক হাতে কড়াই, অন্য হাতে নাড়ুনি নড়েচড়ে ওঠে...
কচুপাতার জল, খুবই টলমল আবেদনময়ীর আবেদন যায় বেড়ে, তুমি বড় রূপসী।
প্রায়ই মাছ ভাজো এভাবে, তপ্ত তেলে একটা ঝাঁঝ এসে লাগে নাকে...
সঙ্গে আসে কামনার মাতোয়ারা গন্ধ। ভেজে চল ইলিশ, চিংড়ি কিংবা রূপচাঁদা
কড়মড় করে আমি খাই, গরম গরম ভাজা মাছ মনে মনে আমি তোমাকেও চিবিয়ে চলি।
প্রতিনিয়ত তুমি ভেজে চল মাছ, ঢাল তেল কড়াইয়ে-টগবগ করে ফুটতে থাকে রহস্য...
এক অজানা বিস্ময়ে হঠাৎ রূপান্তর ঘটে আমার। আমি হয়ে যাই মশলামাখানো মাছ
তুমি ঢেলে দাও আমাকে তপ্ত কড়াইয়ের তেলে এক হাতে তোমার কড়াইয়ের হাতল
অন্য হাতে নাড়ুনি, ক্রমাগত নাড়াতে থাক আমাকে ডোবানো তেলে ফুটতে ফুটতে
আমি হতে থাকি মজাদার ফ্রাই। -এভাবে আমার রূপান্তরের নামতা পড়ে যাও প্রতিনিয়ত।
==================
নলতা থেকে নন্দীপাড়া
==================
কপোতাক্ষের ঘোলাজলে মিশে গেছে জীবনের গতি-প্রকৃতি, সমস্ত রহস্য গ্লানি... নলতার বড় রাস্তা ধরে এঁকেবেঁকে চলে গেছে হাজার স্বপ্ন, রথ... বাস্তবতা, জীবন-প্রকৃতি। সে ইতিহাস নবগঙ্গায় থমকে গেছে ঢের। আগুনের নদী হয়ে এভাবে জীবন চলে বোধহয়! এক দুই তিন; দিন-মাস-বছর-শতাব্দী চলে যায়... অতঃপর টালিগঞ্জের কর্পোরেট বাণিজ্য কিংবা মতিঝিলের পুঁজিবাদ নোতুবা আধিপত্যবাদ রহস্য ভেদ করে ফিনিক্স পাখি হয়ে উড়ে যায় মহাশূন্যে; শূন্য থেকে শূন্যতায়। মূলত হওয়া উচিত ছিলো শাহবাগের গণবিস্ফোরণ নিয়ে- এপিক সাহিত্য অথবা, ‘উত্তম দাশ’কে নিয়ে বায়োপিক ডকুফিচার। জীবনের সমস্ত গতি-প্রকৃতি আজ ফিকে হয়ে গেছে... কী এক অদ্ভূত রহস্য! এভাবে রাস্তার শেষে রাস্তা খুঁজে ফেরা পথভোলা এক নির্মম রহস্য... অলিতে-গলিতে আজো ভিড় করে, নলতা থেকে নন্দীপাড়া।
====================
চোখের শিকল : বিবর্তনবাদ
====================
নিষিদ্ধ গন্দম ফল চাষ করতে করতে একদিন সফল গন্দমচাষী হয়ে ওঠে, অতঃপর শুরু হলো মৃত্যুচাষ। মৃত্যুচাষী আচানক মৃত্যুকে ঢিল ভেবে আকাশের দিকে ছুঁড়ে মারতেই, মৃত্যুঢিলটি আগুনপাখি হয়ে নিমেষেই উড়ে যায়- শূন্য থেকে শূন্যতায়। বাতাসে রঙিন বুদ বুদ খেলা করে... ডানার ঘূর্ণন প্রতিসমতার মাত্রা ক্ষিপ্ত হয়ে বেড়ে যায়। শুরু হলো আগুনবৃষ্টি। সময়ের শ্মশান ভেঙে, আগুনের ফণা বেয়ে; নিউটনের আত্মা আজ আত্মকাহিনী শোনাতে আসে, গন্দম ফল হয়ে মাটির শরীরে। গন্দমক্ষুধা। সে এক অদ্ভূদ রহস্য! অতিলোভী মানব আঙুসি দিয়ে চাঁদ পেড়ে খেতে খেতে, নিজেরা পাপীষ্ট হওয়ার মন্ত্র শিখে ফেলে। সে তো আরো এক অদ্ভূদ শিল্পকলা! আজ, অভিশপ্ত পাপী থেকে পাপীষ্ট পিশাচে পরিণত প্রায়... সেই থেকে মানুষের মানচিত্র ছিঁড়ে, হয়ে ওঠে- হায়েনা, শুকর, সাপ-হাইড্রা, সন্ধিপদ, সরীসৃপ... জীবন্ত-জীবাশ্ম। চোখের শিকলে বন্দি হয় ডারউইন, ল্যামার্ক... অস্তিত্বের লড়াইয়ে আজো শেখাতে পারেনি সংসার-সভ্যতার শিল্পকলা। অতঃপর বিবর্তনবাদের ইতিহাস।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন