অন্যমনে সাহিত্য. অন্য রকম দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একটি প্রতিবিম্ব ভাবনা .. অন্যমনে সাহিত্য.

শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

কয়েকটি কবিতায় গৌতম কুমার গুপ্ত

 

=========
নেশা
=========


যে সব ধুম্রজাল আমাকে রেহাই দিয়েছে ক্ষণিক

অনুত্তেজিত হবার সুযোগ দিয়েছে বারবার

মায়াজালে জড়িয়ে শান্ত করেছে সাময়িক

আমি তার বিষাক্ত রহস্যভেদে যাবো না


ক্ষতি হয় সুদূরপ্রসারী জানি তার করাল

ভুলে থাকি নীল জলে অথৈ অবগাহন

ফেনিলে কি তার তীব্র নেশার গরল

দহনে তার ক্ষণিকের সুগন্ধী মৌতাত


এটুকু সৌন্দর্য মেখে থাকা আয়েসী প্রহরে

অনড় প্রশ্রয়ে দ্বিগুণ বুনেছি কারুশিণ্প তাঁতঘরে

আমাকে দিয়েছি ভেষজ উপশম একে একে

তুমি সতত ফলাফল আমার এক অনৈশ্বর্যা তারকা


========
অনুপাত
========



ব্যস্ত অনুপাত বন্ধ রেখেছি

সমানুপাতেও নেই আজ


চুপচাপ দরজা জানালা বন্ধ

বাতাসের শব্দে ঝিম মেরে আছে গাছালি

চেয়ে চেয়ে দেখছি আলো আঁধারের

ছায়া ছায়া খেলা


হাতেপায়ে বন্ধ আছে সঞ্চালন চোখ শুধু গতিমান

আঙুলে অলস স্নায়ু ভর করে বসে আছে

আমার মধ্যে কিছু জেগে উঠছে না আজ

অথচ বুকের মধ্যে টগবগ করছে নদী

পদব্রজ ডানে বাঁয়ে হেঁটে চলেছে বিবিধ পথ

সোঁ সোঁ করে বাইক ছুটছে পথের অনুমানে

গন্তব্য রেখে যাচ্ছি দৃকপাতে

সবুজের সমারোহে


সব অনুপাত নিঃশেষ করে এগিয়ে যাচ্ছে

এক একটি স্মরণযোগ্য জন্মমৃত্যু


============
উত্তরাধিকার
============


বর্ষজীবী হলে আয়ু বাড়ে এক দুই

গাছেদের সম্পর্কে বেড়ে ওঠে পুঁইলতা লাউমাচা দিনরাত্রি মুখর হয় সূর্যালাপে

সালোকসংশ্লেষে ডুবে যায় দুমুঠো ভাতের রান্নাঘর

ভরে ওঠে ততোধিক ডালপালার চপল মতি

আমাদের উঠোনে লেগে থাকে তিথি ও আপ্যায়ন


ক্রমশঃ আমরা নিভন্ত দুপুর হয়ে যাই

ওরা ফুটফুটে জোছ্না হয়ে ফোটে দ্যোতনায়

বিকেলের ঘড়িগুলি সংকেতে বাজে

মিনিটের আয়ুষ্কাল

সন্ধ্যা হলে জোনাকি শাবক আলোর শিস দিতে দিতে

প্রপিতামহের সাথে আঁধারে তুতো ভাইবোন দ্যাখে


উজ্জীবন ছড়িয়ে যেতে যেতে আমরা নিদ্রা যাই

ঘুম ভেঙে গেলে দেখি পাখিরা উড়ে যাচ্ছে

ভাঙা খেলনাপাতি জুড়তে জুড়তে

শিশুকন্যা শিশুপুত্রেরা খিলখিল করে হেসে উঠছে


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন