অন্যমনে সাহিত্য. অন্য রকম দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একটি প্রতিবিম্ব ভাবনা .. অন্যমনে সাহিত্য.

শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

দুইটি অণুগল্পে সুদীপ ঘোষাল

 



======================
দাঁত
======================

অভির দাদু মরে গেছে আশি বছর বয়সে।তখন অভির বয়স ছিল দশ বছর। তার দাদু আমাদের ভয় দেখাতেন দাঁতগুলো জিভ দিয়ে খুলে নাড়িয়ে। ছোট অভিও ভয় পেত হঠাৎ ফুরিয়ে যাওয়া শৈশবে।

দুর্গাপুজোর আগে ঘরে ঝারপোছ চলে। অভি এখন সংসারী হয়েছে। ঘর পরিষ্কার করার সময় হঠাৎ তার নজরে পড়ল পুরোনো কালো কৌটোর প্রতি। বেদনার স্মৃতি খুলে দেখে দাদুর পুরোনো বাঁধানো দাঁতের পাটিগুলো এখনও হাসছে । সঙ্গে সঙ্গে খুলে যায় শৈশবের রঙীন কৌটোর ভালোবাসা। দাদু এই দাঁত খুলে ভয় দেখাতেন অভির বন্ধুদের । অভি তখন জানত না এগুলো আসলে নকল দাঁত।

ঘর পরিষ্কার করা আজকে আর হল না। দাঁতগুলো দেখে দাদুর মুখ মনে পড়ছে বারেবারে। অভি আদরের দাঁতগুলো জলে ধুয়ে রেখে দিলো সোহাগি কৌটোর ভিতরে। এগুলো দাদুর স্মৃতি আর সোনালী জীবনের নিদর্শন।




======================

হায় স্বাধীনতা দিবস  
======================

করোনা রোগের প্রকোপে দিশেহারা মানুষ। কত লোক আজও অনাহারে দিন কাটায়। বেকার যুবকরা চাকরির আশায় দেশ ছাড়ে। শেষে পরিযায়ী বিশেষণ নিয়ে করোনা পজিটিভ হয়ে একটা সংখ্যা হয়ে মৃতদের তালিকায় নাম লেখায়। হায় স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা বাণী।বিপ্লবীরা নিজেদের জীবন দান করেছিলেন কোন স্বাধীনতার জন্য? নিশ্চয় বর্তমান দুর্দশা তাঁরা চান নি। একদিকে একশ্রেণীর হাতে হাজার কোটি টাকার ঝলমলানি আলো আর একদিকে গরীব না খেতে পাওয়া মানুষের আর্ত চিৎকার।এক বৈষম্যমূলক আর্থ সামাজিক বন্টন। আর্থিক সমবন্টন চেয়েছেন বিপ্লবীরা। সমাজের সর্বস্তরের উন্নয়ন চাই। দেহের সমস্ত রক্ত মাথায় সঞ্চিত হলে তাকে সুস্বাস্থ্য বলে না। সর্বদেহে রক্তের সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রবাহ হলেই সুস্বাস্থ্য হয়। তাই আজ করোনার অতিমারির ভয়ংকর বিপদের সামনে দাঁড়িয়ে মানুষকে একত্র হয়ে অঙ্গিকার করতে হবে সমাজের আর্থ সামাজিক বৈষম্য ঘুচিয়ে নবপ্রভাতের সূচনা করার। তবেই "ধন্য হবে পূণ্য রাজার দেশ "। 





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন