অন্যমনে সাহিত্য. অন্য রকম দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একটি প্রতিবিম্ব ভাবনা .. অন্যমনে সাহিত্য.
শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
কয়েকটি কবিতায় লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল
==========
অনিকেত
==========
তোমাকে একটা আস্ত দুপুর দেবার পর দুপাশে ধানক্ষেত বেড়ে ওঠে
উজ্জ্বল দৃশ্যে প্রশান্ত গ্রাম ও নির্জনতা ইদানীং কেউ দেখতে পায় না কিছুতেই - আমার ঠোঁট ছুঁয়ে যায় একটা বক - ক্রমশই ধুতরার ঝোপ থেকে আকাশের দৈর্ঘ্য বাড়ে - ঝুলে পড়া রোদ ছিঁড়ে দেয় ক্লোরোফিল
অনিন্দ্য নামের ছেলেটির জখম ফেসিয়াল
লাল-কালো কুঁচফল দেখেই বাউণ্ডুলে হতে চায় - পথের ধারে প্রতিটি কুটিরের দরজায় ডানা ঝাপটায় ; যত অবশেষ ও খড়কুটো লেগে থাকা ঋতুকালে এঁকে দেয় ব্যথিত ঝরাপাতার দেশ ; ভীত চোখ ভাসায় গ্যালাক্সি সাঁতার -
সেচের নালায় হেঁটে যাচ্ছে নীলবর্ণের কৃষক
বুকে হাত দিয়ে দেখি শুকিয়েছে শালুকপাতার শিশির , পোকামাকড়ের ভয় নেই - বিস্তৃত শুকনো এই ঘাসের উপর শুয়ে নিষ্পলক চেয়ে থাকি - আমি ও অনিন্দ্য
==========
রঙিন
==========
নয়নতারার ছোপগুলি আকাশ নিয়ে আসছে উঠোনে ; আয়না ভিজে যায়
তারপর থেকে আমার আর ভাগ্য নেই , সবেমাত্র চাষাবাদের জন্য পাণ্ডুলিপি খুলে ধরেছেন সূর্যদেব , গাঙ্গেয় শরীর থেকে ভেসে আসছে সবুজ ঢেউয়ের প্রার্থনা
ক্রমশ এই বাতাসে আঁধার মৌন - পাখি সীমানার কতদূর গেলে তাকে দিগন্ত বলা যায় ?
বেসুরো তালের মাঝে পুঁইবীজের রং লাগা লকেট - ঝুলছে বিভাজিকায় - তার নিসর্গে সান্দ্রতা , এই নিবিড় দুরত্ব নিয়ে ঝরা বাঁশপাতা ছুরি হয়ে যায় -
কচুপাতায় বিন্দু বিন্দু আস্বাদ নির্বাক ; স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধের রংচটা দেয়ালের ত্বক , ঘামের উড়ে যায় পুকুরের দিকে
টোপ টানে মাছের মাঝে ভেসে থাকে হাঁসগুলি -
==========
মায়ামেঘ
==========
দুহাত বিস্তার করে অর্জন করতে চাই নিজের বিশ্বাস
সংক্রান্তির কাঁসর ঘন্টা বাজনায় টগরকালের দূরত্ব
হাঁটতে হাঁটতে মনে হয় মেরুবিন্দুই দিগন্তের পথ নয়
কেউ দেখে জ্যোৎস্নাগাছের মেঠোগ্রাম কিংবা আলোর আভাস
তখন আমার নিঃসঙ্গতাকে ভয় হয় , শুনতে পাই - কোথায় যাবো
রুদ্রাক্ষ থেকে সূর্যাস্তনদী - প্রথমত সাদা দ্বিতীয়ত কালো
সাঁকোর মুখে সন্ধ্যা নামলে তুমুল নিম্নচাপে অস্থির রাতপাখি -
অথবা গায়ে লেগে থাকে নদীপক্ষ ; শান্ত পাড়ায় জলের টান
জেনে যায় গােপন আহ্লাদ - ভুবনের মানে শুধুই কি মানুষ ?
সন্ধ্যাতারার পেইন কিলার হারিয়ে গেলে মাথার ভিতর ঢুকে পড়ে বক
যেমন কারও সঙ্গে থাকা প্রহরের একটা অদ্ভূত স্ক্রিপ্ট
কব্জির ধকধকে নাড়িরা কঠোপনিষদ, মঙ্গল প্রদীপ জ্বলে
মৃগনাভির ঠোঁটে নিশ্বাসের ওঠানামা লুকিয়ে কাঁপতে থাকে এই মৃত্যু
পায়রারা ভিজে না কখনো- সৌখিন ঘুমের পর চুরি হয়ে যায় নচিকেতা
ওই আকাশ আর এই মেঘের ভিতর উড়ে যায় কতকগুলো নির্জনতা -
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন