ক্লাস ফোরে পড়া কেয়া নাচ করতে ভীষণ ভালোবাসে। দাদুর হাত ধরে যেমন তার গল্পের বই পড়ার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়েছে তেমনি স্কুলে, বাড়ির আশে পাশে বড়দের রবীন্দ্র নৃত্য দেখে নাচের উপর অন্যরকম টান তৈরি হয়েছে। নাচের স্কুল বাড়ি থেকে অনেকটাই দূরে, বাবার তখন সাইকেল ঠেঙিয়ে সপ্তাহের একটি ছুটির দিনে সব কাজ ফেলে কেয়াকে নাচের স্কুলে নিয়ে যাওয়া আসা সম্ভব ছিল না তাই নাচ শেখার স্বপ্ন কেয়ার অপূর্ণ রয়ে গেলো। বাবার চাকরিসূত্রে কোয়ার্টারে নতুন জায়গায় এসেছে তারা, নতুন বললে ভুল হবে স্থানটি তার মা ও বাবার জন্ম থেকে বেড়ে ওঠার স্মৃতি বিজড়িত বটে, তবে কেয়ার কাছে নতুন ই । নতুন স্কুল, নতুন বন্ধু তবে মিষ্টি স্বভাবের মেয়ে কেয়া বয়েসে ছোট হলেও সবাইকে আপন করে নেবার সহজাত ক্ষমতা আছে।
এই জায়গাটি সবার কাছে পুরাতন কলোনী হিসেবে পরিচিত। পুরাতন কলোনীর আদি বাসিন্দা কবিতা পিসি। ৬ ভাই বোনের মধ্যে সবচেয়ে বড় বাংলাদেশ থেকে উঠে আসা সংগ্রাম করে বেড়ে ওঠার, ভাই বোনের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেও বাড়ির লোকের কাছে ব্রাত্য। পড়াশুনা, কবিতা, নাচ, গানে কবিতা পিসি সবেতেই পটু ছিলো কিন্তু কথায় আছে ভাগ্য সহায় না হলে রাজাও একদিন ফকির হয়,, কবিতা পিসির ও তাই। পাড়ায় আসা ছোট্ট কেয়াকে তার মন ধরে, একদিন তাকে কাছে ডেকে পিসি কেয়ার কাছে জানতে চাইলো
- কিরে শুনলাম তুই নাচ করতে ভালোবাসিস,, রবীন্দ্র জয়ন্তী অনুষ্ঠান হবে তুই নাচ করবি!
- ছোট্ট কেয়ার কাছে এ যেনো না চাইতেই হাতে চাঁদ পাওয়া। খুশির চোটে চোখদুটো জ্বলজ্বল করে ওঠে।
- কিরে শুনলাম তুই নাচ করতে ভালোবাসিস,, রবীন্দ্র জয়ন্তী অনুষ্ঠান হবে তুই নাচ করবি!
- ছোট্ট কেয়ার কাছে এ যেনো না চাইতেই হাতে চাঁদ পাওয়া। খুশির চোটে চোখদুটো জ্বলজ্বল করে ওঠে।
দুপুরে স্কুল তাই ঠিক হলো প্রত্যেকদিন সকালে নাচ প্র্যাক্টিস হবে কিন্তু বাধ সাধলো কেয়ার বাবা তার কোনো মতেই পছন্দ নয় তার মেয়ে পাড়ার সবার সামনে ধেই ধেই করে নেচে বেড়াবে। কমিউনিষ্ট আদর্শে বিশ্বাসী হলেও কিছু ক্ষেত্রে কেয়ার বাবার কিছু প্রাচীন পন্থী ধারণার জালে নিজেকে আবদ্ধ রেখেছিলেন। কেয়ার বাবার শিফটিং ডিউটি থাকায় বাবার অলক্ষে মায়ের অনুমতিতে ভোর ৫টায় উঠে সে ছুট দিতো নাচের প্র্যাক্টিসে, রোদ-গরম-বৃষ্টি-শরীর খারাপ কে উপেক্ষা করে প্র্যাক্টিস একদিনও কামাই করতো না কেয়া। মন দিয়ে সব নাচ তুলে ফেলেছিলো।
হঠাৎ ই একদিন কেয়া নাচের রিহার্সাল করতে যাওয়ার সময় তার বাবার কাছে ধরা পড়ে যায়। কেয়ার বাবার বিনা অনুমতিতে তার অলক্ষে নাচের প্র্যাক্টিস চলছিলো শুনে রাগে ওর বাবা অগ্নিশর্মা হয়ে মেয়ের গায়ে হাত তোলেন। কান্নায় কষ্টে ব্যাথায় খুব মানসিক আঘাত পায় কেয়া সে সেই রাত থেকে জ্বরে পড়ে যায়। এদিকে রবীন্দ্র জয়ন্তীর হাতে গোনা কয়টা দিন বাকি থাকায় এই সময়ে কেয়ার অনুপস্থিতি কবিতা পিসির মাথায় চিন্তার ভাঁজ ফেলে দেয়, তিনি অনুনয় বিনয় করেও কেয়ার বাবাকে রাজি করাতে পারেন নি অগত্যা কেয়াকে ছাড়াই অনুষ্ঠান হবে ঠিক হয়।
হঠাৎ ই একদিন কেয়া নাচের রিহার্সাল করতে যাওয়ার সময় তার বাবার কাছে ধরা পড়ে যায়। কেয়ার বাবার বিনা অনুমতিতে তার অলক্ষে নাচের প্র্যাক্টিস চলছিলো শুনে রাগে ওর বাবা অগ্নিশর্মা হয়ে মেয়ের গায়ে হাত তোলেন। কান্নায় কষ্টে ব্যাথায় খুব মানসিক আঘাত পায় কেয়া সে সেই রাত থেকে জ্বরে পড়ে যায়। এদিকে রবীন্দ্র জয়ন্তীর হাতে গোনা কয়টা দিন বাকি থাকায় এই সময়ে কেয়ার অনুপস্থিতি কবিতা পিসির মাথায় চিন্তার ভাঁজ ফেলে দেয়, তিনি অনুনয় বিনয় করেও কেয়ার বাবাকে রাজি করাতে পারেন নি অগত্যা কেয়াকে ছাড়াই অনুষ্ঠান হবে ঠিক হয়।
ভীষণ জ্বরের ঘোরে কেয়া প্রলাপ বকতে থাকে, ডাক্তার দেখে বলে যান মানসিক আঘাতে সে অসুস্থ। মায়ের যত্নে সেবায় কেয়া সুস্থ হয়, আজ সকাল থেকেই সে মনমরা হয়ে বসে আছে। আজ যে তার প্রিয় রবি ঠাকুরের জন্মদিন। জন্মদিনে ঠাকুর পূজো করে কবি বন্দনা করতে পারবে না ভেবে তার মন খারাপ, তার উপর পাড়ার অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে ভেসে আসছে রবীন্দ্র সংগীত "হারে রে রে রে রে, আমায় ছেড়ে দে রে, দে রে- যেমন ছাড়া বনের পাখি মনের আনন্দে রে" শুনে কেঁদে ফেললো, তার চোখের জল বাবার চোখ এড়ায় নি।
কেয়াকে শুনিয়ে কেয়ার বাবা তার মা কে বলে উঠলেন কেয়ার শরীর এখন একটু ঠিক আছে সে কি অনুষ্ঠানে নাচ করতে পারবে! এই কথা কানে যেতেই আনন্দে বাঁধ ভেঙে কেয়া ছুট্টে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে, বাবা মেয়েকে আশ্বস্ত করে বলেন যে মা তৈরি হয়ে নে নয়তো অনুষ্ঠানে যেতে দেরি হয়ে যাবে। মায়ের কাছের সুন্দর করে সেজে কেয়া পা বাড়ায় পাড়ার রবীন্দ্র জয়ন্তীর মঞ্চের দিকে। আস্তে আস্তে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হতেই অতিথি সমাগম হতেই অনুষ্ঠান শুরু হয়, মঞ্চে কেয়ার নাম নাচের জন্য ঘোষণা হতেই গানের সাথে ছোট্ট কেয়ার দুরু দুরু বুকে প্রথম স্টেজ পারফরম্যান্স শুরু হয় " মেঘের কোলে রোদ হেসেছে, বাদল গেছে টুটি। আহা, হাহা, হা। আজ আমাদের ছুটি ও ভাই, আজ আমাদের ছুটি । আহা, হাহা, হা।" নাচ করতে করতে কেয়া দেখতে পায় মঞ্চের বাঁ দিকে বাবা মনোযোগ দিয়ে কেয়ার নাচ দেখছেন আর মুখ খুশিতে ভরে গেছে।
কেয়াকে শুনিয়ে কেয়ার বাবা তার মা কে বলে উঠলেন কেয়ার শরীর এখন একটু ঠিক আছে সে কি অনুষ্ঠানে নাচ করতে পারবে! এই কথা কানে যেতেই আনন্দে বাঁধ ভেঙে কেয়া ছুট্টে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে, বাবা মেয়েকে আশ্বস্ত করে বলেন যে মা তৈরি হয়ে নে নয়তো অনুষ্ঠানে যেতে দেরি হয়ে যাবে। মায়ের কাছের সুন্দর করে সেজে কেয়া পা বাড়ায় পাড়ার রবীন্দ্র জয়ন্তীর মঞ্চের দিকে। আস্তে আস্তে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হতেই অতিথি সমাগম হতেই অনুষ্ঠান শুরু হয়, মঞ্চে কেয়ার নাম নাচের জন্য ঘোষণা হতেই গানের সাথে ছোট্ট কেয়ার দুরু দুরু বুকে প্রথম স্টেজ পারফরম্যান্স শুরু হয় " মেঘের কোলে রোদ হেসেছে, বাদল গেছে টুটি। আহা, হাহা, হা। আজ আমাদের ছুটি ও ভাই, আজ আমাদের ছুটি । আহা, হাহা, হা।" নাচ করতে করতে কেয়া দেখতে পায় মঞ্চের বাঁ দিকে বাবা মনোযোগ দিয়ে কেয়ার নাচ দেখছেন আর মুখ খুশিতে ভরে গেছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন