অন্যমনে সাহিত্য. অন্য রকম দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একটি প্রতিবিম্ব ভাবনা .. অন্যমনে সাহিত্য.

শনিবার, ১২ জুন, ২০২১

সম্পাদকীয়


  

 



~সম্পাদকীয়~
================================

এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলেছি আমরা।২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে করোনা মহামারীর প্রথম ঢেউয়ে বেসামাল সারা পৃথিবী কিছুটা সামলে ওঠার পর দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণে আবার বেসামাল আমাদের দেশ, আমাদের রাজ্য। ঠিক এই সময় গত কয়েকদিন যাবত করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমলেও মৃত্যু মিছিল চলছে। অনিশ্চয়তার কালো মেঘ এখনো আকাশে দেখা যাচ্ছে। আবার তৃতীয় ঢেউ আসতে একদিকে অসাম্য সামাজিক পরিকাঠামো অন্য দিকে অপ্রতুল আয়োজন। আমরা রিক্ত হয়ে চলেছি মনে প্রানে।সর্বগ্রাসী এই ঘূর্ণিতে আমাদের মানবিকতা। যেকোনো স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে গেলে একটি পেশাগত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যেতেই হবে। মানুষের মনকে মুক্ত করতে হবে এটি একটি দর্শন, কিন্তু এটির সামাজিক-রাজনৈতিক বাস্তবায়নে ঢুকে পড়ছে অগুনতি মানুষ, যাদের সঠিক কোনো স্বপ্ন নিয়ে মাথাব্যথা নেই, যাদের দরকার শিক্ষা শেষে জীবিকা। তখন না চাইলেও স্বপ্নের ইতরায়ন শুরু হয়, চলতে থাকে এর কদর্য কিন্তু সর্বজন অনুমোদিত ব্যবহার। মহৎ লোকদের স্বপ্ন যখন নিচের দিকের লোকের হাতে পড়ে, তখন তা অবক্ষয়িত হতে থাকে এবং তা-ই হয়েছে ।যে নবজাগরণের মন্ত্রে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আপামর বিশ্ববাসী কে দেখিয়েছিল আর রুদ্রবীণায় সুর তুলে বাঙালিকে উজ্জীবিত করেছিল সেই কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্য জগতের দুই উজ্জ্বলতম জ্যোতিষ্ক। বাংলা সাহিত্যাকাশে উভয়েরই বিশাল ব্যাপ্তি। স্বীয় প্রতিভার আলোকে বাংলার সাহিত্যাকাশকে অতীব আলোকিত করেছেন দুই মনীষীই। সর্বগ্রাসী প্রতিভা দিয়ে সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় হীরকদ্যুতি ছড়াচ্ছিলেন যখন রবীন্দ্রনাথ, সে সময়ে নজরুল এলেন ভিন্নপথের আলোর দিশারী হয়ে। তিনি এলেন এবং জয় করলেন।

রবীন্দ্রনাথের প্রবল প্রভাবকে পাশ কাটিয়ে তৈরি করলেন নিজস্ব পথ, উন্মুক্ত করলেন গতিময় আলোর ফটক। অতি অল্পসময়ে জনপ্রিয়তার চূড়ায় অবস্থান নিলেন। জয় করলেন জনহৃদয়।

আজ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬০ তম জন্মজয়ন্তী আর কাজী নজরুল ইসলামের ১২২ তম জন্মজয়ন্তী আলোয় নিজেকে সমৃদ্ধ করে বর্তমানের অনুভবে অতীতের অভিজ্ঞতা সিঞ্চিত সচেতন উপলব্ধি আর ভবিষ্যতের স্বপ্নিল কল্পনা- এই দুইয়ের সাহিত্যিক মেলবন্ধন ঘটিয়ে আমাদের চেতন অবচেতন মনের আঙিনায় আমাদের সৃষ্টিই পারে আমাদেরকে জীবনবোধের মন্ত্রে উদ্ভাসিত করে তুলতে ।

আমাদের সৃষ্টি অর্ঘ অর্পণ করে জীবনবোধের গভীরতায় সুস্পষ্ট জীবন প্রশ্নের অভিমুখী করে গড়ে তুলতে পারি আমাদেরকে। আর তখনই আমাদের আমিত্বগুলি অর্থবহ হয়ে ওঠে।

এই ভাবনাকে সংকল্প করে এই বারের অন্যমনে জুন সংখ্যা জীবনবোধের গভীরতায় সুস্পষ্ট।

 

 

২টি মন্তব্য: