শাশ্বতী গোস্বামীর দুইটি কবিতা
==================================================================================
ও মেয়ে তুই
ও মেয়ে তুই স্বাধীন হবি কবে ?
জ্বলবে শিখা পুণ্যভূমি 'পর -
ভরবে পরান প্রথম কিরণ লেগে ,
খোলস ছেড়ে হোক জন্মান্তর !
কাজে যখন শিকল বাঁধার ছল,
সমাজ পরায় শক্ত বেড়ী পায়ে
চলার পথে পদে পদে ঘা
ও মেয়ে তুই যাস না হারিয়ে ?
কান্না জমুক অলিন্দ -নিলয়ে
মনে জমাস মানবতার স্তর ,
ফুল ফুটবে মানবজমিন জুড়ে
ও মেয়ে তোর নতুন কলেবর ।
ও মেয়ে তুই বুঝবি কবে বল ?
তোর মধ্যে এক সমুদ্র ঘর ,
বিশ্ব যখন খোলা ছাদের তলায়
তোর ঘরেতে ভালোবাসার জ্বর !
ও মেয়ে তুই কাটবি শিকল কবে ?
তোর মধ্যেই সম্ভাবনার বীজ ,
তুইই পারিস বদলে দিতে সমাজ
ফোটাতে ওই কোমল মনসিজ !
অনন্ত মন কুসুম দোলায় চড়ে ,
ও মেয়ে তোর মেয়েবেলার দিন
সব পেয়েছির দেশটা কেবল তোরই
তুইই শুধু আলাদিনের জীন ॥
ভুবন জেতার শক্তি তো তোর মাঝেই !
তোর মধ্যেই হাতড়ে ফিরি আজ
আমি জানি মেয়ে বলেই শুধু
হাসি মুখেই বইবি রনসাজ ।
বিচার
কি বললেন দাদা?
বিচার করবেন ?
নারী পুরুষের উৎকর্ষতার ?
উৎকৃষ্টতার বিচার করতে গেলে তো তোমাদের তথা সমাজের চোখ , শুধু পুরুষমানুষই খুঁজে পায়?
মিথ্যে বলবো না .........
অবশ্য ...নারীরও বিচার হয়!!
তবে সেটা জ্ঞানের বা উৎকর্ষতার নয়,
নয় ..সাহিত্য সংস্কৃতির গুণমানেরও!
শুধু বিচার হয় তার চরিত্রের আর বৈশিষ্ট্যের ?
হ্যাঁ , চুলচেরা বিচার হয় মেয়েটির..
পোশাকআশাক কেমন ? নম্র-ভদ্র কিনা?
সাত চড়ে কি ' রা ' কাড়ে না-, নাকি খুব মুখরা?
একটা মেয়েকে বিচার করতে গিয়ে আবার
হামেশাই পরিবার রুচিশীল কিনা
সেটা ই বিবেচ্য হয়ে ওঠে!
কিন্তু পুরুষের ক্ষেত্রে সেটা হয় না!
হাতের কাজ, রান্নাবান্না ,ঘরগুছানো ,
আর হ্যাঁ-,
অবশ্যই মানিয়ে চলার ক্ষমতা আছে কিনা!
মানিয়ে চলা মানে??
মানে সব অপমান, লাঞ্ছনা, গঞ্জনা সহ্য করে
দাঁতে দাঁত চেপে ,মরে ও বেঁচে থাকার অন্য
নামই ...মানিয়ে চলা।
সেই বিচারই হয় নারীর!
নারী শক্তির পরীক্ষা হয় কড়াকড়ি ভাবে ॥
এসবের পরে , যদি একটু অবসর মেলে তো ,
জানতে চাওয়া হয়,
সেলেখাপড়া কতদূর করেছে -?
ব্যাস ..এটুকুই।
কেউ কখনো জানতে চায় না ..
মেয়েটা কি পড়াশুনোয় খুব ভালো ?
তার কেরিয়ার নিয়ে সে কি করতে চায়?
অর্থাৎ মেয়েটার ফিউচার প্ল্যান কি?
সে কি নীট ক্র্যাক করেছে?
তার, জে. ই. ই. মেন, বা জে .ই .ই . এডভান্স
এর দিকে ন্যাক আছে কিনা?
জানতে চায় না, সে কি সাইন্টিষ্ট হতে চায়?
সে কি এম .বি. এ. করতে চায়?
নাকি , আই .এ. এস ., আই .পি .এস .
হতে চায় ...?
নাকি গান, নাচ, কিম্বা
সাহিত্য নিয়ে বেশী ইন্টারেষ্টটেড?
এসব নিয়ে কি সে কেরিয়ার গড়তে চায়?
নাহ....
এসব প্রশ্ন আসে না নারীর জন্য!
মেয়েদের ক্ষেত্রে বোধহয় এ প্রশ্ন এখনো ব্রাত্য ॥
তা বলে কি মেয়েরা এগোচ্ছে না নাকি?
আলবাৎ এগোচ্ছে ...রে রে করে এগোচ্ছে-!
শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে এগোচ্ছে ...॥
কিন্তু প্রশ্ন হলো ?
পাশে পাচ্ছে কজনকে?
সমাজ , বাড়ির লোকজন?
তারা কি মেয়েদের এগিয়ে
যাওয়ার পথে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে?
নাকি পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে পথ আগলে?
সমাজ ...--??
এই সমাজের সৃষ্টিকর্তা কিন্তু আমরাই ...
আবার মানুষের জীবনে সমাজের ভূমিকা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে
তার সদর্থক কিম্বা নজ্ঞর্থক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে॥
আর সেই সমাজ যখন নারী পুরুষকে নিয়ে
বিচারে বসে ?
তখন সে তার শ্রেষ্ঠত্বের তীরটা পুরুষের
দিকেই তাক করে রাখে অবলীলায়॥
যুগ বদলায়, যুগের নিয়মে সব বদলায়
বদলায়নি শুধু মেয়েদের পরিমাপের পন্থা!
বদল হয়নি নারীর সামজিক অবস্থান।
দোহাই সমাজ!
আমরা চাই না পুরুষের সমকক্ষ হতে ।
আমরা চাই না পুরুষের সমান অধিকার।
শুধু চাই, পুরুষের চলার মসৃণ পথের মতোই -
একটা সুচারু, সাবলীল আর বাধাহীন
এগিয়ে চলার সমান্তরাল পথ।
পারলে এটুকুই দিও !
নাহলে ....
নারী শক্তির ক্ষমতায় রেখো না কোনো আস্থা!
বাদ দিও তাদের সমাজের
সমস্ত রকম কর্মযজ্ঞের থেকে।
আর...তোমরা
সেই আদি অনন্ত নারী শক্তির
মিথ্যে আরাধনা দিয়ে কলুষিত
কোরো না নিজেদের।
আর কখনো করোনা নারী শক্তির আরাধনা।
ও মেয়ে তুই
ও মেয়ে তুই স্বাধীন হবি কবে ?
জ্বলবে শিখা পুণ্যভূমি 'পর -
ভরবে পরান প্রথম কিরণ লেগে ,
খোলস ছেড়ে হোক জন্মান্তর !
কাজে যখন শিকল বাঁধার ছল,
সমাজ পরায় শক্ত বেড়ী পায়ে
চলার পথে পদে পদে ঘা
ও মেয়ে তুই যাস না হারিয়ে ?
কান্না জমুক অলিন্দ -নিলয়ে
মনে জমাস মানবতার স্তর ,
ফুল ফুটবে মানবজমিন জুড়ে
ও মেয়ে তোর নতুন কলেবর ।
ও মেয়ে তুই বুঝবি কবে বল ?
তোর মধ্যে এক সমুদ্র ঘর ,
বিশ্ব যখন খোলা ছাদের তলায়
তোর ঘরেতে ভালোবাসার জ্বর !
ও মেয়ে তুই কাটবি শিকল কবে ?
তোর মধ্যেই সম্ভাবনার বীজ ,
তুইই পারিস বদলে দিতে সমাজ
ফোটাতে ওই কোমল মনসিজ !
অনন্ত মন কুসুম দোলায় চড়ে ,
ও মেয়ে তোর মেয়েবেলার দিন
সব পেয়েছির দেশটা কেবল তোরই
তুইই শুধু আলাদিনের জীন ॥
ভুবন জেতার শক্তি তো তোর মাঝেই !
তোর মধ্যেই হাতড়ে ফিরি আজ
আমি জানি মেয়ে বলেই শুধু
হাসি মুখেই বইবি রনসাজ ।
বিচার
কি বললেন দাদা?
বিচার করবেন ?
নারী পুরুষের উৎকর্ষতার ?
উৎকৃষ্টতার বিচার করতে গেলে তো তোমাদের তথা সমাজের চোখ , শুধু পুরুষমানুষই খুঁজে পায়?
মিথ্যে বলবো না .........
অবশ্য ...নারীরও বিচার হয়!!
তবে সেটা জ্ঞানের বা উৎকর্ষতার নয়,
নয় ..সাহিত্য সংস্কৃতির গুণমানেরও!
শুধু বিচার হয় তার চরিত্রের আর বৈশিষ্ট্যের ?
হ্যাঁ , চুলচেরা বিচার হয় মেয়েটির..
পোশাকআশাক কেমন ? নম্র-ভদ্র কিনা?
সাত চড়ে কি ' রা ' কাড়ে না-, নাকি খুব মুখরা?
একটা মেয়েকে বিচার করতে গিয়ে আবার
হামেশাই পরিবার রুচিশীল কিনা
সেটা ই বিবেচ্য হয়ে ওঠে!
কিন্তু পুরুষের ক্ষেত্রে সেটা হয় না!
হাতের কাজ, রান্নাবান্না ,ঘরগুছানো ,
আর হ্যাঁ-,
অবশ্যই মানিয়ে চলার ক্ষমতা আছে কিনা!
মানিয়ে চলা মানে??
মানে সব অপমান, লাঞ্ছনা, গঞ্জনা সহ্য করে
দাঁতে দাঁত চেপে ,মরে ও বেঁচে থাকার অন্য
নামই ...মানিয়ে চলা।
সেই বিচারই হয় নারীর!
নারী শক্তির পরীক্ষা হয় কড়াকড়ি ভাবে ॥
এসবের পরে , যদি একটু অবসর মেলে তো ,
জানতে চাওয়া হয়,
সেলেখাপড়া কতদূর করেছে -?
ব্যাস ..এটুকুই।
কেউ কখনো জানতে চায় না ..
মেয়েটা কি পড়াশুনোয় খুব ভালো ?
তার কেরিয়ার নিয়ে সে কি করতে চায়?
অর্থাৎ মেয়েটার ফিউচার প্ল্যান কি?
সে কি নীট ক্র্যাক করেছে?
তার, জে. ই. ই. মেন, বা জে .ই .ই . এডভান্স
এর দিকে ন্যাক আছে কিনা?
জানতে চায় না, সে কি সাইন্টিষ্ট হতে চায়?
সে কি এম .বি. এ. করতে চায়?
নাকি , আই .এ. এস ., আই .পি .এস .
হতে চায় ...?
নাকি গান, নাচ, কিম্বা
সাহিত্য নিয়ে বেশী ইন্টারেষ্টটেড?
এসব নিয়ে কি সে কেরিয়ার গড়তে চায়?
নাহ....
এসব প্রশ্ন আসে না নারীর জন্য!
মেয়েদের ক্ষেত্রে বোধহয় এ প্রশ্ন এখনো ব্রাত্য ॥
তা বলে কি মেয়েরা এগোচ্ছে না নাকি?
আলবাৎ এগোচ্ছে ...রে রে করে এগোচ্ছে-!
শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে এগোচ্ছে ...॥
কিন্তু প্রশ্ন হলো ?
পাশে পাচ্ছে কজনকে?
সমাজ , বাড়ির লোকজন?
তারা কি মেয়েদের এগিয়ে
যাওয়ার পথে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে?
নাকি পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে পথ আগলে?
সমাজ ...--??
এই সমাজের সৃষ্টিকর্তা কিন্তু আমরাই ...
আবার মানুষের জীবনে সমাজের ভূমিকা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে
তার সদর্থক কিম্বা নজ্ঞর্থক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে॥
আর সেই সমাজ যখন নারী পুরুষকে নিয়ে
বিচারে বসে ?
তখন সে তার শ্রেষ্ঠত্বের তীরটা পুরুষের
দিকেই তাক করে রাখে অবলীলায়॥
যুগ বদলায়, যুগের নিয়মে সব বদলায়
বদলায়নি শুধু মেয়েদের পরিমাপের পন্থা!
বদল হয়নি নারীর সামজিক অবস্থান।
দোহাই সমাজ!
আমরা চাই না পুরুষের সমকক্ষ হতে ।
আমরা চাই না পুরুষের সমান অধিকার।
শুধু চাই, পুরুষের চলার মসৃণ পথের মতোই -
একটা সুচারু, সাবলীল আর বাধাহীন
এগিয়ে চলার সমান্তরাল পথ।
পারলে এটুকুই দিও !
নাহলে ....
নারী শক্তির ক্ষমতায় রেখো না কোনো আস্থা!
বাদ দিও তাদের সমাজের
সমস্ত রকম কর্মযজ্ঞের থেকে।
আর...তোমরা
সেই আদি অনন্ত নারী শক্তির
মিথ্যে আরাধনা দিয়ে কলুষিত
কোরো না নিজেদের।
আর কখনো করোনা নারী শক্তির আরাধনা।
অসাধারণ।
উত্তরমুছুন