===============
ধুলোবালির জীবন
===============
সান্ধ্য আহ্নিক সেরে উঠতেই প্রদীপের গুঁড়ো আলোর ফাঁকে দেখলাম দাঁড়িয়ে আছে বছর ৮
কোণের অন্ধকারে মিশে থমথমে মুখে -
অচেনা পরিবেশ, অবুঝ পরিস্থিতি আর নিত্য নতুন কুণ্ঠায় নিজেকে কুঁকড়ে নিয়ে।
আমার অসহায় পলক সরিয়ে নিয়ে এগিয়ে আসতেই দেখি টিভির পর্দায় বুঁদ হয়ে থাকা বছর ১৩ কে
গোগ্রাসে গিলছে 'চিরদিনের গান' - "বনে নয় মনে মোর পাখি আজ গান গায়"!
তাকে আলতো ছুঁয়ে যেতেই মৃদু কম্পন অনুভব হলো
বুঝলাম সে সুর আমায় এখনো চেনে
মুচকি হেসে আমার স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় ফিরে এলাম ঢেকে রাখা টইটুম্বুর চায়ের পেয়ালার কাছে,
আয়েশ করে চুমুক দিতে যাবো অমনি চোখ পড়লো এলোকেশী ২১ - অবিন্যস্ত বই খাতার পাতায় মুখ গুঁজে বসে ! মায়া ভরা চোখে চোখ পড়তেই এগিয়ে দিলাম আমার হাতের উষ্ণ পেয়ালা, কি ভীষণ তৃপ্তির হাসি ফিরিয়ে দিলো সে।
এক গুচ্ছ আবেশ নিয়ে দাঁড়ালাম বারান্দার আলসেতে বেড়ে ওঠা মাধবীলতার পাশ ঘেঁষে। সান্ধ্য হাওয়ায় দুলে ওঠা পাতার চামরের ওপাশে দেখলাম বছর ৩০এর সীমান্তিকা কাঁখে পেলব মমতাকে জড়িয়ে আছে। আমি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছি আর পেরিয়ে যাচ্ছি চোখ আর মনের সীমানা।
কিছু দূরে দাঁড়িয়ে আছে নিরব প্রত্যাশায় বছর ৪০ প্রতীক্ষা তার ক্লান্ত দুচোখে ,
চুপটি করে দাঁড়িয়ে যেন কিছু চাইছে -
কিছুক্ষণের চুপ করে বসে থাকার অবকাশ
কিছু আকাশ দেখার অভিলাষ
বৃষ্টির সোঁদা গন্ধ এ মাতাল হওয়ার আকাঙ্খা নিয়ে!
আমি দুহাতের ইশারায় যেন বলতে চাইলাম সব দেনা পাওনা চুকিয়ে দেবো আরো কিছু সবুর করার ইঙ্গিতে -
এসে দাঁড়ালাম সেগুনের ফ্রেমে বাঁধা ঝকঝকে আয়নার সামনে,
দেখি এযাবৎ খন্ড খন্ড যত প্রতিরূপ দেখা দিলো ওরা আমারই নিজের লোক, বছরের পর বছর হাতে হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে আর বহন করে চলেছে আমারই ধুলোবালির এই জীবন।
এসে দাঁড়ালাম সেগুনের ফ্রেমে বাঁধা ঝকঝকে আয়নার সামনে,
দেখি এযাবৎ খন্ড খন্ড যত প্রতিরূপ দেখা দিলো ওরা আমারই নিজের লোক, বছরের পর বছর হাতে হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে আর বহন করে চলেছে আমারই ধুলোবালির এই জীবন।
ধুলোবালির এই জীবন ভীষণ প্রাসঙ্গিক। ফিরে দেখা প্রতিটি মুহূর্তে। এভাবেই কললের অন্বেষণ চলুক প্রতিনিয়ত, নিজেকে ফিরে দেখার।
উত্তরমুছুন