জয়তী দাসের দুইটি কবিতা
===============================================
বৃক্ষমানবী
মাটি আর রঙ নিয়ে আঁকছি ছবি
কিছুটা গড়ার পরেই সে গাছ হয়ে উঠলো-
সে হাঁটতে চাইলো এক পৃথিবী,
উড়তে চাইলো ফড়িঙের দলে,
অজানা গ্রন্থি ছিঁড়ে মেলতে চাইলো দুটি চোখ
মুক্তোর খোঁজে তন্নতন্ন, দুহাতে ক্লান্তির বালিজল-
কথা ছিলো, ঠোঁট জুড়ে নির্বাক
আগুন ছিলো - সরব হয়নি প্রতিবাদ
চাঁদটুকু বাদ দিলে, মেঘলা তারাদের গ্রহণ
চারপাশ ছেয়ে আলো- আধারে ঢেকে আছে কোণ-
হারিয়ে যাচ্ছে গাছটি, প্রতিটি বসন্ত ফিরে গেলে,
দিন মাস বছরের দলিল লিখতে লিখতে -
সংগ্রহে রাখে ফিরে যাওয় পাখির রেখে যাওয়া গান-
শিকড়ে জমানো ভীড়, শত শত অভিধান, চালসে আলো..
উইপোকা ঢিবি, বাকলের খুলে রাখা সুতো ছেঁড়া বই-
কাঠ কেটে যারা বাড়ি ফিরলো, উনুনের দাহ হওয়া দেহে
কোনো পাঠাগারে আজও সংরক্ষিত নয়, গাছেদের স্নান
প্রেমিক রাত্রিশ্রাবণ লিখেছিলো ভিজে ডাকঘরে গাছটির নাম।।
মানবী
অনেক না লেখা চিঠিই ভেসে আছে সকালের নদীতে
অভিমানী, অক্ষর ধুয়ে যাওয়া মেঘেদের মন-
দু'বেণীর খোঁজ হারিয়ে গ্যাছে নীল অববাহিকায় -
ভূগোলের নদীমাতৃক দেশ কুড়িয়ে দিলো পলল কচুরিপানা
আকাশনীল জলের তলায় আরো একটা কাঠামো,
ভাগ হয়ে যাওয়া বয়সের সিদ্ধান্ত পৌঁছে দিলো অন্য বন্দরে-
তবুও প্রতিটি বিসর্জনে উগ্র সুগন্ধি - কার্তুজময় !
আবাহনে লেগে থাকা বিসর্জনের ঘরের চৌকাঠ-
মেয়েটি শিউলি বকুল চেয়েছিলো অরণ্যবাসে -
প্রতিটি ঋতুই তার বড়ো প্রিয়। তবুও কোথাও ভাগ হয়ে যায়--
দুটি কবিতাই অপূর্ব লেখা কবি ।
উত্তরমুছুন