অন্যমনে সাহিত্য. অন্য রকম দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একটি প্রতিবিম্ব ভাবনা .. অন্যমনে সাহিত্য.

মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২১

অন্যমনে অণুগল্পে বহ্নি শিখা 

 
অন্যমনে অণুগল্পে বহ্নি শিখা
====================


অন্ধকার

এই দেখ্ কত্ত বড় উকুন! মার্। মার্। দিন রাত স্তব্ধতায় শান দেয়া সরযূর প্রাত্যহিক কাজ। প্রিয় আত্মজা।

শতরূপার মনকে তীক্ষ্ণ থেকে আরো তীক্ষ্ণতর করতে মরিয়া সরযূ।

উত্যক্ত কারী জীবকে নিজের হাতে মেরে ফেলা বা তাকে মেরে তাড়িয়ে পরাজিত করে নিজেকে অক্ষত রাখাতে যে আনন্দ সেটা সাত বছরের বারন্ত মেয়ে শতরূপাকে সামান্য উকুন মারতে দিয়ে উপলব্ধি করাতে চাইছে শতরূপার মা সরযূ।

প্রত্যেক মা'ই তার সন্তানকে প্রথম থেকে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে চায়। অবশ্য পরিবেশগত পরিস্থিতির উপস্থাপনা হয়তো ভিন্ন রকম হয়।


শতরূপার মাথায় উকুন যতটা না নিরীহ ভাবে কামড়ে জ্বালা তুলে সরযূর আচরণে তারচে সহস্রগুন হিংস্রতা এনে শতরূপাকে মারতে বলে।


চাঁদের মতো ফুটফুটে মেয়ে শতরূপা। ঈশ্বর নিজের হাতে গড়েছেন শতরূপাকে। ভুল হয় সরযূর আকাশের চাঁদকে ঘরে দেখে। সে কাঁদে। ঈশ্বর কে গালি দেয়। অকথ্য ভাষায়। আগুনের কেন এতো রূপ দিলি বাবা ভোলানাথ। এখন কোথায় লুকাই বল?


প্রতিদিন ভক্তরা আসে। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে। জয় মা দূর্গা" হাঁক দিয়ে মেয়ের হাতে ভিখ চায়। শতরূপা ভয় পায়। কারোর সামনে যেতে চায় না। কেউ কেউ মেয়ের ঘরের দরজায় টাকা রেখে যায়। কেউ কেউ

ফল মূল তরিতরকারি দেয়। যার যা আছে মানত করে রেখে যায়। সরযূ রাখে না৷


অনেকে দরজা ভাঙতে উদ্ধত হয়। সরযূ বুঝিয়ে পারে না। বলে আমার মেয়ে দূর্গা টুর্গা কিছু নয়। ও অসুস্থ। আপনারা আমার বাড়িতে আসবেন না। আমার মেয়ে যদি মা দূর্গা হতো তাইলে তার বাবা বিছানায় পড়ে থাকতো না, আমি অন্যের বাড়ি কাজ করতাম না।

নৈবদ্য নিয়ে আসা লোকগুলো বেপরোয়া হয়। বলে এ মেয়ে এখন আর আপনার নয়। সকলের মা'।

প্যারালাইজড স্বামী বিছানায় গো গো করতে থাকে। সরযূ বলতে পারে না শতরূপা প্রতিবন্ধী।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন