অন্যমনে সাহিত্য. অন্য রকম দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একটি প্রতিবিম্ব ভাবনা .. অন্যমনে সাহিত্য.

মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২১

অন্যমনে গুচ্ছকবিতায় সম্পূর্ণা

 


অন্যমনে গুচ্ছকবিতায় সম্পূর্ণা
=======================


আমি


প্রতিদিন চলে যায়, প্রত্যেকটা রাত পাঁজা ইঁটের জঙ্গলে বাঁচা
প্রতিবার তোমাদের অপমান চেনায় আমাকে।
প্রতি চাহনিতে দাঁত, চোখের ওপারের সব বীভৎসতা
আমি মরিনা। প্রত্যেক খুনের আরও কাছে যাই। খুন হই
ভোজালির ভোজবাজি উধাও। আমারও ছিল স্বহস্ত কিছু কোপ
তবুও গুটিয়ে নিই হাত। বারবার করা ক্ষমায় মহত্বের বিসর্জন।

যেদিকে আমার পিঠ ছিল দেয়ালে রক্ত ছোপ
সেদিকে আমারই আদলে কার যেন একইরকম হত্যা
হাতের রেখায় বেড়ে যাওয়া জীবনে তারও ছুরি পোঁতা।

প্রতিবার প্রত্যেক মুখে ধূর্ততা ভীষণ চেনা
প্রতি প্রত্যাঘাত চেনায় আমাকে।
প্রত্যেক ফাঁসীর দড়িতে আমারই শরীর!

প্রতিদিন বাঁচি অসহ্য সহ্যের কালশিটের অসংখ্য হাতুড়ির বারিতে
প্রত্যেকবার আবারও উঠে বসি রুদ্ধশ্বাস রহস্যের আমিতে -
শিকারী কিম্বা চাবুকের আঘাত।



অন্তর্নিহিত


কিভাবে প্রচ্ছন্ন হয়
কিভাবেই বা আলোর মায়া কাটে
খিল তোলা দোর পূবের খেয়ালে
সে রাত আলোর মায়াজালে!

অতীত বলতে পারো
প্রতিটা চলাচল অদৃশ্য ধারাবাহিক
সে আঁধারও দীর্ঘায়িত বোধহয়
দৃশ্য কুয়াশায় বিষাদময়।

এ এক অদ্ভুত ব্যথা
সে তবু অপূর্ব সুখ
ঘোর লাগা মেঘেরা যায় ভেসে
বর্ষাও অসম্পূর্ণ বিদায়ের শেষে।



বোধ


বাতাসের রুমালে তখনও হলদে সুতোর স্টিচে জ্বলজ্বলে পাখি
ভুলে গেছি কারা গড়েছিল আকাশের বোধে বিস্তৃতির কাহিনী
তাড়াতাড়ি চোখ ধুয়ে চাঁদ তারা জ্যোৎস্নায় আলো খুঁজি
পথের বাঁধনে পন্থী হারা পথ, কজনই বা ছিল গন্তব্যে সমমানসিকই
বার্ষিক জন্ম-মৃত্যুতে পদ্য-কবিতা, উজ্জ্বল সভাঘরই স্মরণের রীতি।

ঘুমন্ত কুঁয়ো ,স্থির জলে বিপরীত অন্তরের মুখ ভেসে ওঠে
সময় থমকে মৃত্যুর কাঁটায়! উলঙ্গ আঁধার সাক্ষ্য নিজ জবানিতে।

শান্তিনিকেতনে বসবে পৌষের মেলা; প্রথাগত সম্প্রীতি
সে পালা সাঙ্গ হলে আবারও বসন্ত, রঙ সাজিয়ে দোকানী
বহু আগেই হয়তো আগুনে ছাই হয়ে উড়ে গেছে প্রাচীন গরিমাটি
ব্যাকরণে অব্যয়; অন্তিমও কি নয় মুগ্ধ সংস্কৃতি!

বুকে চিনচিনে যন্ত্রণা, সহ্যের হৃদয়ও ক্রমশ অসহ্য উপশমে
মৃত মানুষ তবুও কিভাবে মানুষ পরিচয়ে বেঁচে আছে!

বাতাসের রুমালে তখনও হলদে সুতোর স্টিচে জ্বলজ্বলে পাখি!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন