অন্যমনে সাহিত্য. অন্য রকম দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একটি প্রতিবিম্ব ভাবনা .. অন্যমনে সাহিত্য.

মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২১

অন্যমনে গুচ্ছকবিতায় জয়তী

 



অন্যমনে গুচ্ছকবিতায় জয়তী
=======================

চারকোনা ভেজা রোদ্দুরে,,

দ্রৌপদী তোমার ভেতরে শুষ্ক অসমতল মানচিত্র ছাড়া কিছুই পাইনি দেখতে -

ঠিক গান্ধারী যেমন গিরিখাতের ভেতরে চিরদিন ঊর্ধ্বে তাকিয়ে কাটিয়ে দিলো গতি..


এ পৃথিবীতে একটাই টেবিল, বহু থেকে কেটে নেওয়া রুটির টুকরো কোলাজ,

কখনো আংশিক তারামাছ, কখনো চাঁদের একাংশ বলয়, গুড়ো গুড়ো পেষাই জ্যামিতিক আকার-


লালার বিশেষ গুণ, সমৃদ্ধ হতে হতে আটকে রাখে আশ্চর্য মিউজিয়াম,

প্রতিটি সভ্যতা কি মমির মতো আটকে রাখতে পারে কাচের বাক্স!


দেখো মন্দা এসময়, কোন এক মহামারি সবাইকে পাঠিয়ে দিয়েছে হীরক রাজার দেশে -

ঘুম ঘুম ঢুলু ঢুলু..... কে বাজাবে বাঁশি! দড়ি গেছে ছিঁড়ে, মোটা মাস্তুলে ঝিমোয় নিদারুণ ব্যস্ততম সময়..


একটু নামডাক হলেই হিরোইনদের নামে পুজোয় ছাপে শাড়ি,

ওদের গায়ে বিশেষ হলুদ, কলাবউ, হাতি, ফুল পাতা..


দ্রৌপদী তোমার ভেতরে, শুকনো নদী, ভেজা সমভূমি, এবড়োখেবড়ো মালভূমি,অরণ্য আর পাহাড়..

জেগে জেগে দুই চোখে বহু অন্ধকার জমিয়ে গান্ধারী দূর থেকে দূরগামী -


কি দেখো অমন করে! চারিপাশ কেমন খোলা হাওয়া..

মনকেমন করলে দূরের বাড়ি কাছের জানলায় এসে পড়ে,


এসময় গোপন অভিসার, এসময় নিষিদ্ধ প্রেম -ভালোবাসা মৌমাছি মৌতাতে...

জটলাহীন শহরে কৌণিক ছবিতে সরাসরি আটকে পড়ে –


পৃথিবী


অনেকদিন আগেই যে হারিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো!

বহু প্রাচুর্য নিয়ে অন্তঃসার আলোর গভীরে অন্ধকারে সরু সাঁকো বাঁধা -


সেইসব অদৃশ্যের আততায়ী;

যারা ঠোঁটে করে- বহুবার এনেছিলো মারণ বিষ!

শহরে গলিতে নিশ্বাসে লেগে ছিলো মৃতুর অনিবার্য হাসি!

ঘুম ভাঙতেই দেখেছি অরণ্যে ধ্বংসের চিহ্ন-

নগরের বিধ্বস্ততা কপালের লাল মাটি ধুয়ে রেখে গেছে!

সাদা বরফের উপত্যকায় জেগেছে আর এক সূর্যোদয়ের দেশ -

ভাঙা এক নৌকায় আমি; ফিরে পাওয়া দ্বিখণ্ডিত স্বদেশ -


জানতাম এটুকুও "আমি" আমার নই -

এখানে প্রতিটি হাড় মাংস এমন কী পচা গলা পূঁজ রক্তও নিজের নয়,

বিক্রিত জন্মের পরিচয় - যেখানে কয়েক কোটি নাগরিক অনুবৃত্তি এক শরীরে বয় -

ঘরের মালিকানাও দরজাকে পোহাতে হয় -

ধাক্কাধাক্কি! দখলদারি, অত্যাচারের কালো হাত,মাফিয়াবাজি, বিস্ফোরণ- উদ্ভিন্ন রক্তবীজের শক্তি প্রদর্শন...


ইতিবৃত্তের সাথে জুড়তে জুড়তে পাতা-

তক্ষশীলার অধ্যক্ষ নক্ষত্র কাঁটায় কালো শাল বুনে যায় -

ভগ্নাংশের টুকরো- খাওয়া আপেলের ছবি! এভাবেই হারিয়ে যাই!



সন্ধ্যার ওপারে

খালি পায়ে হেঁটে এলো উজ্জ্বল তারাদের ঝাঁক,

রোদ্দুরে পুড়ে চাদরে মুড়ে- তামাটে গন্ধ ভরা!

এসো, মাটির বুকে তোমার সাথেই দুদণ্ড কথা বলি-

খোলো তোমার শীতের চাদর, প্রদীপ জ্বলছে যেখানে নিরন্তর ;

চারপাশ ঘিরে আছে ঝিলমিল জোনাকির ঘর -

ওরা ওদের মতো, সবাই সবার মতো নিজের ভাষায়..

তুমি বলো আজ তোমার কথা - আমি শুনছি

রাত বাড়লে চারপাশটা কেমন...শান্ত নদীর মতো ;

আমরা মুখোমুখি আলো আর অন্ধকার...




 

২টি মন্তব্য:

  1. তিনটি কবিতাই খুব মন ছোঁয়া! "নিরাময় চেয়ে" কবিতাটি খুব ভালো লাগলো। শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন বন্ধু।

    উত্তরমুছুন