অন্যমনে গুচ্ছকবিতায় রথীন পার্থ মণ্ডল
===========================
আগাছার স্তুতি
যে পৃথিবীর কালগর্ভে হারিয়ে যায় না নকশালবাড়ি
যে সমাজের আঙুল চুষেও নিমেষে উৎখাত হয় জমিদারী
সেখানেই জন্মেছিল আমাদের মতো বুনো ঘাস
প্রতিপালনের দায়িত্ব না নিলেও যে নিজের গরজে
বাড়তে থাকে, ক্রমশঃ বাড়তেই থাকে
সাধ্যমতো বিস্তার করে নিজের সাম্রাজ্য
তবুও লোকে তাকে আগাছাই বলে।
পায়ে মাড়াতে মাড়াতে তারই ওপর দিয়ে তৈরি হয় পথ
সে পথে সবুজ শহীদ হয়, তবু টিকে থাকে আগাছা
খটখটে শুকনো হয়ে তখন অপেক্ষারত, আর
সেই অন্তিমকালে আমি বারুদ মাখবো আঙুলে।
আগাছা বেঁচে থাকে সূর্যের পথ চেয়ে।
মাঝদরিয়া
রাত্রির বুক চিরে নেমে আসে মেঘ
তোমার ভালোবাসা মাখা হাতের স্পর্শে
একদিন ভেঙেছিল ঘুম।
ঘুম ঘুম চোখে দেখেছিলাম
তারাদের আনাগোনা,
তুমি তো ছিলে আমারই পাশে
হাতে হাত রেখে...
দমকা হাওয়ায় নিভে গেল সব
অন্ধকারে তোমার হাত হাতড়াতে হাতড়াতে
মাঝদরিয়ায় ভেসে চলি
কিনারার খোঁজে।
দোলা তোমাকে
জানি কেবলই ব্যস্ততা তোমার, দোলা!
তবু গ্রীষ্মের শেষ রাত
আর শ্রাবণের মেঘ ভরা সন্ধ্যায়
একা একা বসে উদাস বাতাসে
কাঁচা হলুদরঙা আকাশ দেখতে দেখতে
কেন যে অতীত ছুটে আসে!
তোমার কোমল বিষুবরেখার ওপর
হাজার ঢেউ আছাড় দিতে দিতে
হারিয়ে ফেরে ঠিকানাহীন অনাবিল প্রান্তরে,
তোমার খোলা বুকের ওপর
নীলাকাশ আর বিন্দু বিন্দু জলকণা
অত্যাচার করে
সেই ঈষৎ টোল পড়া বুকে
হাজার ঢেউ উথাল পাতাল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন