অন্যমনে গুচ্ছকবিতায় অভিষেক ঘোষ
===========================
পদ্যের নাও
আমার পদ্যের পালে সহসা এসে লাগে
গদ্যের বাতাস ।
গলুই ভ'রে তোলে ক্ষুধাতুর মানুষের দীর্ঘশ্বাস !
নৌকা নিয়ে এগুনো কঠিন,
যেমন শামুকের ছদ্মনাম রাখা কঠিন ।
জলের ব্যবহারে নারীর ছলনা,
ছলাৎছলে ললনার বক্রগ্রীবায়
মন ভেঙে-দেওয়া দৃষ্টি । আষাঢ়ের
প্রথম দিবসে সজল বাতাসের মতো
ভারী আর অভিমানী হয়ে ওঠে আমার দু-হাত ।
রবি ঠাকুরের মতো পদ্যগুলো তুলে তুলে,
জলে ফেলে দেওয়া যেত । কিন্তু
অমরত্বের সাধনা আমাদের নয় !
ক্ষণিকের জীবন পদ্মপাতায় জল,
সূর্য-কিরণের প্রতিফলনেই -
তার বাসনা সফল ।
তাই রাখি দাঁড়ে হাত,
হৃদয়ে যেখানে যতটুকু
বেদনার যাতায়াত,
সবটুকু টেনেটুনে নিয়ে
ভারী করে তুলি নীল রাত ।
কবি আর কবিতায়, রাখিনি তফাৎ ।
ভ্রান্তি
১ ম দিন
আমায় ওরা খোলা মাঠে মুক্তি দিয়েছে ! দেখো মা, আমি মুক্ত ।
কী যে আনন্দ হচ্ছে !
আমি কখনো ভাবিনি জানো,
ওরা আমায় ওদের শাসন থেকে, শৃঙ্খল থেকে, এতখানি মুক্তি দেবে ... মা !
২ য় দিন
কত সবুজ চারিদিক ! চতুর্দিকে গা-ঘেঁষাঘেষি করার কেউ নেই ।
যেদিকে চোখ মেলছি, মুক্তজীবন হাতছানি দিচ্ছে,
আজ আর কেউ অশালীন কটাক্ষে, অবাঞ্ছিত ঘৃণ্য স্পর্শে,
বিকৃত লালসায় –
আমায় নিয়ম-মাফিক বিব্রত করতে পারবে না,
তা ভেবে কী যে ভালো লাগছে !!
৩ য় দিন
তবে কী সব্ ভুল ছিল মা ? ওদেরই একজন আজ
আমাকে আমার অজান্তেই একা করে দিয়েছে, তার নিজস্ব গোপন স্বার্থে ।
সমাজ থেকে স্বতন্ত্র করে, নিজের কামনার বিকৃত জগতে আশ্রয় দিয়েছে !
মা গো, এতটা ঠকে গেলাম আমি !
কখনো ভাবলাম না, কোনো পুরুষ পারে না এতটা মহৎ হতে,
এমন অসীম মুক্তি পুরুষের পৃথিবীতে অলীক । সব ভ্রান্তি-পাশ ।
সবার থেকে পৃথক করে, দিয়েছে উন্মুক্ত খোলা মাঠ । কিন্তু অলক্ষ্যে,
গোপন কামনার অদৃশ্য প্রাচীর তুলেছে, আমার স্বাধীন অবকাশ-টুকু ঘিরে ।
আজ অবাক হলে চোখ রাঙিয়ে সে বলছে, “এই গন্ডির মধ্যে যত পারো ছোটো,
আমি একা তোমার সব-টা চাই, পাবে না অন্য কেউ । আর প্রাচীর !
ও তো তোমার-ই নিরাপত্তার প্রয়োজনে !”
নিরাপত্তা ! হায় রে... আপন সত্তা
যেখানে বিকোল, হল প্রতারিত,
সেখানে কী হবে নিরাপত্তার এই বুদবুদ নিয়ে ?
কবি ?
গোলাপ-সুবাস, মাখন-সোহাগ,
সলাজ-উপহাস, কুসুমের দাগ,
এইসব ছোটো ছোটো অনুভূতিময়
শব্দের রেলগাড়ি ঠেলে আগুয়ান হয়,
ফেবু-কবির সংক্ষিপ্ত, আহ্লাদিত জীবন ।
কেতাবে বলে অন্তঃসারশূন্য অলীক স্বপন !
আশা, অকথিত অনাদর, অবিন্যস্ত প্রলাপের ঘোর,
অলিখিত বেদনা-চাদর ছুঁড়ে ফেলে, অপেক্ষায় ভোর !
কবির স্বপ্ন
ধড়ের উপরে অস্তিত্বের মৌচাক,
লাল মেঘে ফাঁস হয়ে লেগে থাক্ ।
কুড়োবার মতো ফুল
বিধবার এলো চুল
ছুঁয়ে বেমানান হয়ে থাক্ ।
সূর্য-কিরণ বেঁধে
পাতায় সবুজে রেঁধে
অরণ্য গোটা ক্লোরোফিল হয়ে যাক্ ।
গঙ্গায় কাদা জলে
স্রোতে ভাসবার ছলে
মাছেদের মতো স্বচ্ছ পাখনা গজাক্ ।
অবলীলাক্রমে লাল নটে শাক্,
দিশারী, লড়াকু কৃষকের পেটে যাক্ ।
আমার পদ্যের পালে সহসা এসে লাগে
গদ্যের বাতাস ।
গলুই ভ'রে তোলে ক্ষুধাতুর মানুষের দীর্ঘশ্বাস !
নৌকা নিয়ে এগুনো কঠিন,
যেমন শামুকের ছদ্মনাম রাখা কঠিন ।
জলের ব্যবহারে নারীর ছলনা,
ছলাৎছলে ললনার বক্রগ্রীবায়
মন ভেঙে-দেওয়া দৃষ্টি । আষাঢ়ের
প্রথম দিবসে সজল বাতাসের মতো
ভারী আর অভিমানী হয়ে ওঠে আমার দু-হাত ।
রবি ঠাকুরের মতো পদ্যগুলো তুলে তুলে,
জলে ফেলে দেওয়া যেত । কিন্তু
অমরত্বের সাধনা আমাদের নয় !
ক্ষণিকের জীবন পদ্মপাতায় জল,
সূর্য-কিরণের প্রতিফলনেই -
তার বাসনা সফল ।
তাই রাখি দাঁড়ে হাত,
হৃদয়ে যেখানে যতটুকু
বেদনার যাতায়াত,
সবটুকু টেনেটুনে নিয়ে
ভারী করে তুলি নীল রাত ।
কবি আর কবিতায়, রাখিনি তফাৎ ।
ভ্রান্তি
১ ম দিন
আমায় ওরা খোলা মাঠে মুক্তি দিয়েছে ! দেখো মা, আমি মুক্ত ।
কী যে আনন্দ হচ্ছে !
আমি কখনো ভাবিনি জানো,
ওরা আমায় ওদের শাসন থেকে, শৃঙ্খল থেকে, এতখানি মুক্তি দেবে ... মা !
২ য় দিন
কত সবুজ চারিদিক ! চতুর্দিকে গা-ঘেঁষাঘেষি করার কেউ নেই ।
যেদিকে চোখ মেলছি, মুক্তজীবন হাতছানি দিচ্ছে,
আজ আর কেউ অশালীন কটাক্ষে, অবাঞ্ছিত ঘৃণ্য স্পর্শে,
বিকৃত লালসায় –
আমায় নিয়ম-মাফিক বিব্রত করতে পারবে না,
তা ভেবে কী যে ভালো লাগছে !!
৩ য় দিন
তবে কী সব্ ভুল ছিল মা ? ওদেরই একজন আজ
আমাকে আমার অজান্তেই একা করে দিয়েছে, তার নিজস্ব গোপন স্বার্থে ।
সমাজ থেকে স্বতন্ত্র করে, নিজের কামনার বিকৃত জগতে আশ্রয় দিয়েছে !
মা গো, এতটা ঠকে গেলাম আমি !
কখনো ভাবলাম না, কোনো পুরুষ পারে না এতটা মহৎ হতে,
এমন অসীম মুক্তি পুরুষের পৃথিবীতে অলীক । সব ভ্রান্তি-পাশ ।
সবার থেকে পৃথক করে, দিয়েছে উন্মুক্ত খোলা মাঠ । কিন্তু অলক্ষ্যে,
গোপন কামনার অদৃশ্য প্রাচীর তুলেছে, আমার স্বাধীন অবকাশ-টুকু ঘিরে ।
আজ অবাক হলে চোখ রাঙিয়ে সে বলছে, “এই গন্ডির মধ্যে যত পারো ছোটো,
আমি একা তোমার সব-টা চাই, পাবে না অন্য কেউ । আর প্রাচীর !
ও তো তোমার-ই নিরাপত্তার প্রয়োজনে !”
নিরাপত্তা ! হায় রে... আপন সত্তা
যেখানে বিকোল, হল প্রতারিত,
সেখানে কী হবে নিরাপত্তার এই বুদবুদ নিয়ে ?
কবি ?
গোলাপ-সুবাস, মাখন-সোহাগ,
সলাজ-উপহাস, কুসুমের দাগ,
এইসব ছোটো ছোটো অনুভূতিময়
শব্দের রেলগাড়ি ঠেলে আগুয়ান হয়,
ফেবু-কবির সংক্ষিপ্ত, আহ্লাদিত জীবন ।
কেতাবে বলে অন্তঃসারশূন্য অলীক স্বপন !
আশা, অকথিত অনাদর, অবিন্যস্ত প্রলাপের ঘোর,
অলিখিত বেদনা-চাদর ছুঁড়ে ফেলে, অপেক্ষায় ভোর !
কবির স্বপ্ন
ধড়ের উপরে অস্তিত্বের মৌচাক,
লাল মেঘে ফাঁস হয়ে লেগে থাক্ ।
কুড়োবার মতো ফুল
বিধবার এলো চুল
ছুঁয়ে বেমানান হয়ে থাক্ ।
সূর্য-কিরণ বেঁধে
পাতায় সবুজে রেঁধে
অরণ্য গোটা ক্লোরোফিল হয়ে যাক্ ।
গঙ্গায় কাদা জলে
স্রোতে ভাসবার ছলে
মাছেদের মতো স্বচ্ছ পাখনা গজাক্ ।
অবলীলাক্রমে লাল নটে শাক্,
দিশারী, লড়াকু কৃষকের পেটে যাক্ ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন